Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অভিষেকেই উজ্জ্বল অনিক

চিটাগংকে বিদায় করে টিকে থাকল রাজশাহী

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাঁচা-মরার ম্যাচে জ্বলে উঠলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ড্যারেন স্যামি, মুশফিকুর রহিম অবদান রাখলেন ব্যাটিংয়ে। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে বোলিংয়ে আলো ছড়ালেন কাজী অনিক। চিটাগং ভাইকিংসকে হারিয়ে শেষ চারের আশা টিকিয়ে রাখল রাজশাহী। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকালের প্রথম ম্যাচে ৩৩ রানে জেতে স্যামির দল। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করে রাজশাহী। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৪ বল বাকি থাকতে ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম। ১০ ম্যাচে চতুর্থ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দলটি উঠে এসেছে ৫ নম্বরে। সমান ম্যাচে সপ্তম হারে শেষ চারের আশা ভাঙল চিটাগংয়ের। ৫ পয়েন্ট নিয়ে দলটি আছে তলানিতে।
নিজেদের মাটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল চট্টগ্রামের দলটি। কিন্তু এখানকার চারটি ম্যাচে একটি ছাড়া বাকি তিনটিতেই হেরেছে তারা। তাদের এই পারফরম্যান্সে হতাশ চট্টলার দর্শকরা। বিশেষ করে গতকাল যেভাবে কোনো প্রতিদ্ব›িদ্বতা ছাড়াই ম্যাচটিতে আত্মসমর্পণ করলো ভাইকিংস তা যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না গ্যালারীর হাজার হাজার দর্শক। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেই পরাজয়ের জন্য বাজে ব্যাটিংকেই দায়ী করেছেন চিটাগং ভাইকিংসের অধিনায়ক লুক রনকি। ব্যাটিং সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রাবিশ ব্যাটিং করেছি আমরা। এমন ব্যাটিংয়ে জয় অসম্ভব।’
রনকির হাতাশার কারণ অবশ্য শুধু তাদের বাজে ব্যাটিংই নয়; প্রতিপক্ষ দলের এক বোলার, কাজী অনীক। রাজশাহীর ১০ নম্বর ম্যাচে এসে মিলেছে কাক্সিক্ষত সুযোগ। অভিষেকেই নিজের জাত চেনালেন এই অলরাউন্ডার। ৩.২ ওভার বল করে ১৭ রান খরচায় তুলে নেন চিটাগং ভাইকিংসের ৪ উইকেট। যা রাজশাহীর ৩২ রানের জয়ে অনন্য ভূমিকা রেখে হয়েছেন মোস্ট এক্সাইটিং প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ।
চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি রাজশাহী কিংসের। ১০ রানেই তাসকিনের বলে ভ্যান জিলের ক্যাচ হন ওপেনার মুমিনুল হক (৭)। দ্বিতীয় উইকেটে ৩১ রানের জুটি গড়ে লুক রাইট ও জাকির হাসান দলকে এগিয়ে নেন। জাকিরকে (১৭) বোল্ড করে এ জুটি ভাঙেন চিটাগাং ভাইকিংসের পেসার লুইস রেস। মুসফিকুর রহিমকে নিয়ে ২২ রান যোগ করে সানজামুলের বলে সিকান্দার রাজার ক্যাচ হন লুক রাইট (২৫)। ব্যাট হাতে স্বচ্ছন্দেই ছিলেন মুসফিকুর রহিম। তবে নাঈম হাসানের বলে তানভীর হায়দারকে ক্যাচ দিয়ে একটি ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে ৩১ রান করেন তিনি। এরপর অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি ও ফ্র্যাঙ্কলিন ৬৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলে দলকে ১৫৫ রানে নিয়ে যান। এ দু’জনকেই ফিরিয়ে দেন লুইস রেস। সৌম্যকে ক্যাচ দেয়ার আগে ফ্র্যাঙ্কলিন করেন দুটি চারের সাহায্যে ৩০ বলে ৩০ রান। অধিনায়ক স্যামি তিনটি বিশাল ছক্কা ও দু’টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২৫ বলে ৪০ রান করে এলবিডবিøউ হন। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে রাজশাহী কিংস ছয় উইকেটে ১৫৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর করে।
চট্টগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে জয়ের জন্য ১৫৮ রানের টার্গেট কঠিন কিছু নয়। কিন্তু মাত্র ১৩ রানেই অধিনায়ক লুক রনকিকে (৮) মেহেদি মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে রাজশাহী কিংসের পেসার মোহাম্মদ সামী চিটাগাং ভাইকিংসের মনোবল ভেঙে দেন। অবশ্য ওয়ান ডাউনে নাম এনামুল বিজয়কে নিয়ে ওপেনার সৌম্য সরকার বেশ ভালো ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। দলকে ফিফটি রানে নিয়ে যান তারা পঞ্চম ওভারেই। এরপরই ফ্র্যাঙ্কলিনকে ক্যাচ দিয়ে মুস্তাফিজে প্রথম শিকার হন সৌম্য (১৩)। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এনামুলও (২৩) ফিরে গেলে আরো একটি পরাজয়ের গন্ধ পেতে থাকে চিটাগং ভাইকিংস। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ভ্যান জিল (২৭) প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও পারেননি। রাজশাহী কিংসের বোলারদের তোপের মুখে বিশেষ করে কাজী অনিকের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ভাইকিংসের মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ফলে ৩৩ রানের পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিক এই দলটিকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী কিংস : ২০ ওভারে ১৫৭/৬ (মুমিনুল ৭, রাইট ২৫, জাকির ১৭, মুশফিক ৩১, ফ্র্যাঙ্কলিন ৩০, স্যামি ৪০, মির ২*, মিরাজ ০*; রাজা ০/৩, তাসকিন ১/৩৬, এমরিট ০/২৭, রিস ৩/৩৩, সানজামুল ০/২৬, তানবীর ০/৯, নাঈম ১/৯, সৌম্য ০/১৩)।
চিটাগং ভাইকিংস: ১৯.৪ ওভারে ১২৪ (রনকি ৮, সৌম্য ১৩, এনামুল ২৩, ফন সিল ২৭, রাজা ১৭, রিস ৩, তানবীর ১৩, এমরিট ১, সানজামুল ১. নাঈম ২*, তানকিন ১; সামি ১/২৯, মুস্তাফিজ ২/১৮, মিরাজ ০/৩৩, মির ১/১৫, অনিক ৪/১৭, ফ্র্যাঙ্কলিন ০/১০)
ফল : রাজশাহী কিংস ৩৩ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ড্যারেন স্যামি (রাজশাহী)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ