পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে দুর্নীতির জন্য রাজনৈতিক নেতাদের দায়ী করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সততা ও সাহসিকতার বিরল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন বঙ্গবন্ধু। আমরা যারা রাজনীতি করি এখান থেকে অনেক শিক্ষা নিতে পারি। তিনি বলেন, যারা রাজনীতি করি তাদের মধ্যে কয়জন বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে আমি সৎ। আমি শতভাগ সৎ মানুষ। কয়জন বলতে পারবে, এখানেই সমস্যা। আমরা রাজনীতিকরা যদি দুর্নীতি মুক্ত থাকি তবে দেশের দুর্নীতি আটোমেটিক্যালী অর্ধেক কমে যাবে।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষনের উপর দলীয় এক সেমিনারে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ওর্য়াল্ডস ডকুমেন্টারী হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা উপ-কমিটি ‘৭ মার্চ : আলোকের ঝর্ণাধারা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সততার দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধুর কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু শিখিয়েছেন সততার আদর্শ, সততার আদর্শ বড় এসেট। একজন রাজনীতিকের জীবনের মানুষের ভালোবাসার চেয়ে বড় আর কিছু নেই, আর মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে সৎ হতে হবে, মানুষকে ভালোবাসতে হবে, মানুষের কাছে থাকতে হবে, মাটির কাছে থাকতে হবে, এই শিক্ষা বঙ্গবন্ধু রাজনীতিকদের দিয়ে গেছেন।
নিজ দলের তথ্য ও গবেষনা উপকমিটির অনুষ্ঠানে মন্ত্রীদের না আনার পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের বলেন, মন্ত্রী না আসলে ক্যামেরা আসে না, এই থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এর পরে আমরা ইন্টিডিউস করি, দেখি কয়টা ক্যামেরা আসে। না আসলে কি হবে। সব না আসুক কেউ না কেউ তো আসবে, তাতে কি হবে আস্তে আস্তে হবে। মন্ত্রী ছাড়া অনুষ্ঠান কেন হবে না। এত গুলো বিজ্ঞ মানুষ এত ভালো কথা বলে এর পরও মন্ত্রী বারবার কেন।
তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সারাদিন বক্তব্য দিতে দিতে, এক রকম বক্তব্য। বক্তব্য দিতে ইনপুট তো লাগে নতুন ইনপুট না হলে আমাকে বারবার পুরনো কথা বলতে হয়, এতে তো আমি ফালতু হয়ে যাবো। বারবার যে বেশি কথা বলে সে বেশি বাজে কথা বলে, বারবার এক কথা বলে। আমি মনে করি আমাদের এই ধারাটা বদলাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর কাছে ফিরতে চাইলে মূল্যবোধের কাছে ফিরতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবার সততা, যোগ্যতা ও মেধার দিক থেকে বিশ্বের কাছে রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব স্বীকৃত সৎ, দক্ষ ও যোগ্য রাজনীতিবিদ। তিনি বলেন, বিশ্বের সৎ রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় ও কর্মঠ রাজনীতিবিদদের মধ্যে পঞ্চম। সৎ রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন জার্মানীর এঞ্জেলা মারকেল ও সিঙ্গাপুরের লী। তারা দু’জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে এগিয়ে থাকলেও পয়েন্ট ব্যবধান খুবই সামান্য।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত অবস্থানের কথা তুলে ধরে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কোন হাওয়া ভবন গড়ে উঠেনি এবং কারো বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ নেই।
বঙ্গবন্ধুর পরিবার থেকে সততা, সাহস ও দক্ষতার ওপর শিক্ষা নেয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, ক্ষমতা দখলের জন্য মানুষকে পুড়িয়ে মারা ছাড়া বিএনপি এমন কোন কাজ করতে পারেনি যাতে দেশের মানুষ তাদের ভোট দেবে।
দেশের মানুষ সততার মূল্য দেয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু যেমন দৃশ্যমান বাস্তবতা তেমনি মেট্রোরেল, ফোরলেন মহাসড়ক ও দেশের সার্বিক উন্নয়নও দৃশ্যমান বাস্তবতা।
কাদের বলেন, দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা ও যোগ্য নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের এ আস্থাকে কাজে লাগিয়ে আবারো ক্ষমতায় আসতে পারবে বলে দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আসন্ন রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি)-কে সকল ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে। তিনি বলেন, নারয়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে যেভাবে সরকার ইসিকে সহায়তা করেছে, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও সেভাবে সহায়তা দেয়া হবে। তিনি বলেন, জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচত করবে। সরকার কোন নির্বাচনে কখনো হস্তক্ষেপ করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না।
সেমিনারে অধ্যাপক ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও মুক্তি লাভ করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির সংগ্রামের নেতৃত্বদান করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তেমনি তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোষনের হাত থেকে জনগনের মুক্তি এনে দেবেন।
অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালী জাতির জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ। আর এ সম্পদকে কাজে লাগানো সম্ভব হলেই দেশ প্রকৃত মুক্তির স্বাদ পাবে। তিনি বলেন, আর এ জন্য তরুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর জন্য শুধু গর্বিত না হয়ে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে কাজ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও সমকাল সম্পাদক গোলাম সারোয়ার।
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের পরিচালনায় সেমিনারে আরও অংশ নেন অধ্যাপক ড. কবি আব্দুস সামাদ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বুলবুল মহলানবিশ ও ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টর বিয়েত্রিস খলদুন। সেমিনারে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, বাসসের এমডি ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।