Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

মসজিদে রক্তের বদলা নিতে বিমান হামলা

প্রাণঘাতী হামলার পর মিসরে তিনদিনের শোক ঘোষণা, বিশ্বব্যাপী নিন্দা

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিসরের সিনাই প্রদেশের আল রাওদাহ মসজিদে রক্তাক্ত বোমা হামলা ও গুলির ঘটনায় দায়ী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে বদলা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল সিসি। গত শুক্রবারের ওই হামলায় অন্তত ২৩৫ জন নিহত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। আহতের সংখ্যাও আরো অনেক। হামলার দায় কেউ স্বীকার না করলেও সা¤প্রতিক বছরগুলোতে সিনাইয়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর তৎপরতা বাড়ায় ঘটনার জন্য তাদেরই সন্দেহ করা হচ্ছে। কায়রো থেকে ১৩০ মাইল দূরে বির আল আবেদ শহরের মসজিদে ভয়াবহ এ বোমা হামলার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মিসরের সেনাবাহিনী আইএসের বেশক’টি অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় বলে বিবিসি জানিয়েছে। সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, জঙ্গিগোষ্ঠীটির মজুদকৃত বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ ধ্বংস করা হয়েছে। মসজিদে হামলায় ব্যবহৃত কয়েকটি গাড়ি চিহ্নিত করে সেগুলোর ওপরও বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি মুখপাত্রের। কয়েক দশকের মধ্যে প্রাণঘাতী এ হামলার পর মিসরে তিনদিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে দেশটির প্রেসিডেন্ট ফাত্তাহ আল সিসি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কায়রোর লড়াই থামিয়ে দিতেই জঙ্গিরা মসজিদে বোমা হামলা ও গুলি চালিয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ শহীদের রক্তের বদলা নেবে। সর্বশক্তি দিয়ে আমরা নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করবো,’ ঘোষণা দেন সিসি। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে, রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদভ, আরব লিগ প্রধান আহমেদ আবদুল গেইতের পাশাপাশি ইরান, ফ্রান্স, ইসরাইল ও সউদী আরব এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে সেনাবাহিনী মুসলিম ব্রাদারহুডের মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই মিসরে জঙ্গি হামলার মাত্রা বেড়ে গেছে। একের পর এক জঙ্গি হামলায় শত শত পুলিশ, সেনা সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হচ্ছেন। এসব ঘটনার অনেকগুলোর জন্যই আইএস-সংশ্লিষ্ট সিনাই প্রভিন্স জঙ্গি গোষ্ঠীকে দায়ী করা হয়। এর মধ্যে কয়েকটি হামলার লক্ষ্য ছিল মিসরের কপটিক খ্রিস্টানদের ধর্মীয় স্থাপনা। ২০১৫ সালে রাশিয়ার একটি বিমান ধ্বংস করে ২২৪ জনকে হত্যার ঘটনাতেও আইএসপন্থি জঙ্গিরা জড়িত ছিল বলে সন্দেহ করা হয়। স্থানীয়রা বলছেন, আল রাওদা মসজিদে সুফিবাদীরা নিয়মিত নামাজ পড়তে আসেন। আর আইএসসহ বিভিন্ন জিহাদি গ্রুপ সুফিবাদের বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দুর্গম পথে চলতে সক্ষম- এমন চারটি বাহনে চড়ে হামলাকারীরা ওই মসজিদে আসে। জুমার নামাজ যখন শেষ হচ্ছে, তখন সেখানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিস্ফোরণের পর আতঙ্কিত মানুষ যখন পালানোর চেষ্টা করছিল, তখন তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় হামলাকারীরা। ওই মসজিদের প্রবেশ পথ আটকে দেয়ার জন্য বাইরে থাকা যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। প্রায় ৪০ জন অস্ত্রধারী এই হামলায় অংশ নেয় বলে তথ্য দিয়েছে রয়টার্স। হতাহতদের মধ্যে সামরিক বাহিনীর লোকজনও আছে। গত কয়েক বছর ধরেই সিনাইয়ে এক ধরনের ‘মিডিয়া বø্যাক আউট’ চলছে, এমনকি রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গুলোকেও সেখানে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। বিবিসি, রয়টার্স।



 

Show all comments
  • টিনা ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ৬:৪০ এএম says : 0
    যারা এই তাদেরকে দ্রুত খুজে বের করা হোক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মসজিদ

১৫ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ