ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
ভারতের আসামে মুসলমানদের বিতাড়ন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে পুনরায়। এবারের প্রক্রিয়াটি হচ্ছে চূড়ান্ত ও আনুষ্ঠানিকভাবে। আসামের বৈধ নাগরিকদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে, যা স্বল্পদিনের মধ্যেই প্রকাশিত হবে। তাতে লক্ষ লক্ষ মুসলমান বাদ পড়তে পারে। অতঃপর তাদের অবৈধ ঘোষণা করে বিতাড়ন করা হবে বলে সেখানকার মুসলমানদের মধ্যে চরম আতংক সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে ভারতের অন্যান্য এলাকার মুসলিমদের মধ্যেও। সেটা যদি হয়, তাহলে যারা কয়েকশ’ বছর যাবত বংশপরস্পরায় সেখানে বাস করছে, স্থায়ী সম্পদ গড়ে তুলেছে, তারা সহজে তা মেনে নেবে না। ফলে আসামে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্যাপক সা¤প্রদায়িক হানাহানিও বাঁধতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এরূপ আশঙ্কা থেকেই ভারতের প্রখ্যাত আলেম ও জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের প্রবীণ নেতা আরশাদ মাদানী বলেছেন, ‘আসাম থেকে লক্ষ লক্ষ মুসলিমকে তাড়িয়ে সেখানে আরও একটি মিয়ানমার তৈরি করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’ তার এই বক্তব্যে চরম ক্ষিপ্ত হয়েছে আসামের ক্ষমতাসীন দল- বিজেপি। সেই সাথে অন্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলোও। বিজেপির সদস্যরা বহু মামলা করেছে তার বিরুদ্ধে। ব্যাপক মিছিল মিটিং করে মাদানীকে ‘মুরদাবাদ’ বলে শ্লোগান দিয়েছে। পুলিশও তার বক্তব্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশে আসামে বৈধ নাগরিকদের তালিকা বা ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস তৈরির কাজ করা হচ্ছে, যা শিগগির প্রকাশিত হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল ঘোষণা করেছেন, ‘যারাই এই তালিকার বিরোধিতা করবেন আসামে তাদের শত্রু বলে গণ্য করা হবে।’ এই অবস্থায় স¤প্রতি দিল্লিতে একটি সেমিনারের আয়োজন করে ‘দিল্লি অ্যাকশনস কমিটি ফর আসাম’। ঐ সেমিনারেই আরশাদ মাদানী উক্ত মন্তব্য করেন। স্মরণীয় যে, আসামের মুসলমানদের বাঙালি বলে বিতাড়ন করার চেষ্টা নতুন নয় বহুদিন ধরেই চলছে। উপরন্তু এ নিয়ে অসংখ্যবার বাঙালি ও অহমিয়াদের মধ্যে ব্যাপক মারামারি, হানাহানি সৃষ্টি হয়ে জানমালের ক্ষতি হয়েছে অনেক। তবুও বাঙালি খেদাও আন্দোলন বন্ধ করেনি অহমিয়ারা।
আসাম অঞ্চলে কয়েকশ’ বছর আগে এ দেশের কিছু মানুষ গিয়েছিল কাজের সন্ধানে। পরবর্তীতে তারা সেখানে স্থায়ীভাবে বাস করতে থাকে। তাদেরই বংশধররা আজও সেখানে স্থায়ীভাবে আছে এবং বিভিন্ন কর্ম করে জীবীকা নির্বাহ করছে। ব্রিটিশ শাসনামলে এটা ছিল অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন দেশ হয়। আজকের সিলেট, তৎকালে আসামের অন্তর্গত ছিল। সিলেট ভারতের মধ্যে থাকবে না পাকিস্তানের মধ্যে থাকবে তা নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ, সিলেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। তাই তারা ভারতে থাকতে চায়নি। তারা পাকিস্তানে থাকতে চেয়েছিল। সে দাবির পক্ষে সেখানে ব্যাপক আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে গণভোট অনুষ্ঠিত হয় ৬-৭ জুলাই, ১৯৪৮। তাতে কংগ্রেস ‘ঘর’ আর মুসলিম লীগ ‘কুড়াল’ মার্কা নিয়ে গণভোটে অংশ নিয়েছিল। এই ভোটে জয়ী হতে মুসলীম লীগ ব্যাপক প্রচার চালায়। সিলেটের জনগণকে পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দিতে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করে দলটি। পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দেয়া ফরজ ঘোষণা করে ফতোয়াও জারি করা হয়। এমনকি, ‘গণভোটের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান পাঁচশো কর্মী নিয়ে কলকাতা থেকে সিলেট এসেছিলেন। ভোটে জয়লাভ করে তারা কলকাতা ফিরে যান।’ নির্বাচনে হিন্দুরা কংগ্রেসের মার্কায় আর মুসলমানরা মুসলিম লীগের মার্কায় ভোট দেয়। মোট ভোটার ছিল ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮১৫ জন। ভোট দিয়েছিল ৭৭% মানুষ। মুসলীম লীগ ৫৫ হাজার ৫শ ৭৮ ভোটে জয়ী হয়। যা’হোক, গণভোটের পর সিলেট পাকিস্তানভুক্ত হলেও সেখানকার বেশিরভাগ হিন্দু সিলেটেই থেকে যায়। কিন্তু কখনোই সেখানে ‘হিন্দু খেদাও’ আন্দোলন হয়নি। অপরদিকে, আসামের মুসলমানরা সেখানেই থেকে যায়। কিন্তু অহমিয়ারা তাদের বহিরাগত বলে ‘বাঙালি খেদাও’ আন্দোলন শুরু করে যা পরবর্তীতেও অব্যাহতই থাকে এবং মাঝে মধ্যেই ব্যাপক সংঘাত সৃষ্টি হয়। মানুষের স্থানান্তর চিরাচরিত একটা প্রক্রিয়া। দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানের মানুষ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বসবাস শুরু করেছে এবং বৈধভাবে স্থায়ী হয়েছে। এখনো হচ্ছে। এটাই বিশ্ব ব্যবস্থা। তাই কোথাও বিদেশি খেদাও বলে আন্দোলন হয় না। ব্যতিক্রম শুধু ভারতে!
যা’হোক, আসামের মুসলমান বিতাড়ন তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে রাজ্য নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হওয়ার পর থেকে। নির্বাচনকালে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা ঘোষণা করেছিলেন, ‘নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হলে আসাম থেকে সব অবৈধদের বিতাড়ন করা হবে।’ যা বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে এবং তার শিকার হচ্ছে মুসলমানরা। এমনকি যারা বহু বছর আর্মি, পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন বিভাগে চাকরি করছেন, তাদেরও অবৈধ ঘোষণা করা হচ্ছে। তার মধ্যে আর্মিতে নিয়োজিত আজমল একজন। বিবিসি বাংলার খবরে প্রকাশ, ‘তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করার পর আসাম পুলিশের কাছ থেকে অবৈধ বাংলাদেশি হিসেবে নোটিশ পেয়েছেন গুয়াহাটির বাসিন্দা মহম্মদ আজমল হক। আসামের মানবাধিকার আইনজীবীরাও বলছেন, সে রাজ্যে যেরকম ঢালাওভাবে বাংলাভাষী মুসলিমদের কাছে অবৈধ বিদেশি হিসেবে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে আজমল হক তার সা¤প্রতিকতম ভিক্টিম এবং বাংলাদেশি খোঁজার এই হিড়িকে আসামের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হচ্ছে। রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার আইনজীবী আমন ওয়াদুদ বলেন, ‘কেউ কিন্তু আজমল হকের কাছে কোনও কাগজ চায়নি। এমনকি কোন তদন্ত ছড়াাই বলে দেওয়া হয়েছে, তিনি নাকি ১৯৭১-র পর বাংলাদেশ থেকে আসামে এসেছিলেন। আর এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আসামে লক্ষ লক্ষ লোকের সম্পর্কে কোনও তদন্ত না করেই পুলিশ তাদের অবৈধ অভিবাসী বা বাংলাদেশি বলে রিপোর্ট করে দিচ্ছে! কিন্তু ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে ৮০% কেসই ভারতীয় নাগরিক বলে প্রমাণিত হচ্ছে। তার মানে এটাই যে পুলিশ কোনও ঠিকঠাক তদন্ত ছাড়াই এই রিপোর্টগুলো দাখিল করে দিচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি খুব গুরুতর। কারণ, বাংলাদেশও তাদের নেবে না- আর কেনই বা নেবে, তারা তো আসলেই ভারতীয় নাগরিক!’ এই অবস্থায় আসামের নাগরিকত্ব তালিকা প্রকাশ হলে কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তাই ভাববার বিষয়। আর এ থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। কারণ, সেখানে অবৈধ বলে মুসলমানদের বিতাড়ন করা হলে বাংলাদেশ ছাড়া তাদের আশ্রয়ের বিকল্প নেই। আর যদি তা হয়, তাহলে কি তাদেরকে আশ্রয় দেয়া এ দেশের পক্ষে সম্ভব? মোটেও নয়। কারণ, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ১২ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে মহাসংকটে রয়েছে। এ দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের ভরণ পোষণ করা মোটেও সম্ভব নয়। তবুও মানবিক দিক বিবেচনা করেই তাদেরকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আসামারে লাখ লাখ মুসলমানকে আশ্রয় দেয়া কল্পনাতীত ব্যাপার। তাই বিষয়টির দিকে তী² নজর রাখা দরকার এ দেশের। অপরদিকে, ভারতের উচিৎ দেশটির সাংবিধানিক চরিত্র-ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখা। কারণ, ঘর ওয়াপস তথা ঘরে ফেরা চালু হওয়ার পর বহু মুসলমান ও খ্রিস্টানকে জোর করে হিন্দু বানানো হয়েছে হিন্দু মৌলবাদী দল-বিজেপি ক্ষমতাসীন হওযার পর থেকেই। এ ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে। তবুও তা বন্ধ করা হয়নি। বরং মুসলমানদের নির্যাতন অব্যাহত আছে। ভারতে সা¤প্রদায়িকতার জনক হচ্ছে আরএসএস এন্ড গংরা। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থায়ই নেয়া হয় না। সর্বপরি প্রধানমন্ত্রী মোদির দর্শন ‘সবকা সাথ সবকা উন্নতি’তে কুঠারাঘাত করছে গোরক্ষা নীতি। গোরক্ষার নামে দেশটির বেশিরভাগ এলাকায় গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি গরুর মাংস আছে বাড়িতে কিংবা নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহে এ পর্যন্ত বহু মুসলমানকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কঠোর হুঁশিয়ারিকেও পাত্তা দিচ্ছে না তারা। উপরন্তু গরু-মহিষ নির্বিশেষে চামড়া বহনকারী ট্রাক দেখলেই আক্রমণ করছে তারা। ফলে পরিবহন কোম্পানিগুলো আর চামড়া বহন করছে না। এতে করে লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। এছাড়া, মাংস রফতানি ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। মাংস রফতানিতে ভারত আগে ছিল এক নম্বরে। এখন তিন নন্বরে গেছে। ব্রাজিল প্রথম ও অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় হয়েছে। বর্তমানে ভারতের মাংস রফতানির পরিমাণ ৪শ’ কোটি ডলার। গোরক্ষা আন্দোলন না হলে ৫শ’ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেত বলে ব্যবসায়ীদের অভিমত। হিন্দু জঙ্গীদের কর্ম এখানেই শেষ নয়। ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে ১৫০টি উগ্রবাদী সংগঠন একজোট হয়ে ঘোষণা দিয়েছে, ‘২০২৩ সালের মধ্যেই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে।’ তাই কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী সংসদে বলেছেন, ‘ভারতে বিদ্বেষ ও বিভাজন পর্ব চলছে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’ অপরদিকে, উপরাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ হামিদ আনসারি গত ১০ আগস্ট তার অবসর গ্রহণকালে বলেছেন, ‘বর্তমানে দেশটির মুসলমানদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’ দেশটিতে প্রায়ই সা¤প্রদায়িক হানাহানি বাধায় উগ্রবাদী হিন্দুরা এবং তা বহুকাল যাবতই। তাতে ব্যাপক জানমালের ক্ষতি হয়েছে। এ সময় প্রশাসন দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে, কখনো সহিংসতায় সংশ্লিষ্টও হয়েছে বলে তদন্ত প্রমাণিত হয়েছে। ফলে সবচেয়ে বেশি ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার তালিকায় ১৯৮টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান চতুর্থ। এই তালিকা তৈরি করেছে মার্কিন সমাজ-গবেষণা সংস্থা ‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’। এই অবস্থায়, মুসলিম প্রধান জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকায় সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের খতম করার জন্য ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি সরকার। কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ১৫ নভেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ঐ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ফলে সেখানে দমন অভিযান আরো তীব্র হবে বলে পিটিআই জানিয়েছে। অপরদিকে, ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং সম্প্রতি বলেছেন, দেশে মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি বিপদজ্জনক। তবুও উত্তরপ্রদেশ, অসম, পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালার ৫৪ জেলায় হিন্দুরা সংখ্যালঘু। জনঘনত্বের ওই পরিবর্তন দেশের একতা ও অখÐতার জন্য বিপদ। যেসব জায়গায় হিন্দুদের সংখ্যা কমেছে, সেখানেই সামাজিক ঐক্যের ক্ষয় হয়েছে এবং জাতীয়তাবাদ সঙ্কটে পড়েছে। শিয়া, সুন্নী ও হিন্দুরা ‘রামের বংশধর’। প্রতিত্তোরে অল ইন্ডিয়া সুন্নাতুল জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল মাতীন বলেছেন, ‘যেসব ভারত বিরোধীচক্র ভারতের শান্তি ও স¤প্রীতি নষ্ট করতে চাচ্ছে গিরিরাজ সম্ভবত সেই ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। ভারতে মুসলিম জনসংখ্যাবৃদ্ধি আসলে দেশের জন্য কল্যাণকর। ‘আমরা আদমের বংশধর; রামের বংশধর নই। রাম বলে কোনো চরিত্র ভারতে জন্ম নিয়েছেন এমন কোনো ঐতিহাসিক তথ্য প্রমাণও নেই। এমনকি অনেক হিন্দু ঐতিহাসিকরাও তা বলেছেন।
সা¤প্রদায়িক কর্মকাÐের কারণে বহু জাতিগোষ্ঠির আবাসস্থল বলে ভারতের যে খ্যাতি ছিল বিশ্বে, তা ¤øান হচ্ছে। সর্বপরি দেশেটির শান্তি, উন্নতি ও ভাবমর্যাদা চরমভাবে ক্ষুণœ হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে মিয়ানমারের মতো তাকে জবাবদিহির সন্মুখীন হতে হবে সারা বিশ্বে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে। কারণ, বাংলাদেশে বা অন্য কোন দেশে একটি হিন্দুর ক্ষতি হলে যেমন ভারতের সমগ্র হিন্দুর টনক নড়ে, এমনকি সরকারের পর্যন্ত, তেমনি ভারতের একজন মুসলমানের কোন ক্ষতি হলে বিশ্বের সমগ্র মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটে। ইতোমধ্যেই ওআইসি’র মহাসচিব ড. ইউসাফ বিন আহমদ আল-উসামিন কাশ্মীরি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার লাভের সংগ্রামের প্রতি সংস্থার পূর্ণ সমর্থনের কথা ঘোষণা করে কাশ্মীরি জনগণের বিরুদ্ধে শক্তিপ্রয়োগ বন্ধ করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। তাই ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা আবশ্যক ভারতের।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।