পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আশুরা হচ্ছে ঐ দিন যেদিন আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত হযরত মূসা আলাইহিস সালামকে বিজয় দান করেছিলেন এবং ফেরাউনকে তার লয়-লস্কর ও সৈন্য সামন্তসহ নীল দরিয়ায় ডুবিয়ে মেরেছিলেন। এভাবে বনী ইস্রাঈলীগণ ফেরাউনের অত্যাচার ও নিগ্রহ হতে রেহাই পেয়েছিল। তাই, এই দিনটি হযরত মূসা আলাইহিস সালাম-এর বিজয়ের দিনও ছিল আর এটা বনী ইস্রাঈলের স্বাধীনতার দিনও ছিল। হযরত মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর শোকর আদায়কল্পে এই দিন রোজা রেখেছিলেন।
যখন রাসূলুল্লাহ (সা:) মদীনা মুনাওয়ারায় হিজরত করলেন, তখন তিনি মদীনার ইহুদীদেরকে আশুরার দিন রোজা রাখতে দেখলেন, তিনি তাদেরকে রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা উপরোক্ত কারণ বয়ান করলেন। একথা শুনে তিনি বললেন, (একজন নবী হওয়ার ক্ষেত্রে) মূসা (আ:)-এর উপর আমার অধিক হক রয়েছে। সুতরাং তিনি হযরত মূসা (আ:)-কে প্রদত্ত আল্লাহর নেয়ামতের উপর শোকর গুজারীর লক্ষ্যে নিজে সেই দিন রোজা রাখলেন এবং স্বীয় সকল সাহাবাকে রোজা রাখার হুকুম দিলেন। আশুরার দিনের রোজা সম্পর্কিত কতিপয় হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল। (ক) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন : হুযুর নবীয়ে আকরাম (সা:) যখন মদীনায় তশরীফ আনলেন তখন তিনি দেখলেন যে, ইহুদীরা আশুরার দিন (দশই মুহররম) রোজা পালন করে। তিনি তাদেরকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন, তারা উত্তর দিল এই দিনটি আমাদের জন্য বরকতময়। এটা ঐ মোবারক দিন, যে দিনটি আল্লাহতায়ালা বনী ইস্রাঈলকে তাদের স্বাধীনতার দিন এবং মুক্তির দিন হিসেবে দান করেছেন, সুতরাং হযরত মূসা (আ:) এই দিন রোজা রেখেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন : তোমাদের চেয়ে মূসা (আ:)-এর বেশি হকদার আমি। সুতরাং তিনি সেই দিন রোজা রাখলেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও সেইদিন রোজা রাখতে নির্দেশ দিলেন। [১। সহীহ বুখারী : কিতাবুস্ সাওম, বাবু সিয়ামে ইয়াওমে আশুরা, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৭০৪, বর্ণনা সংখ্যা ১৯০০; ২। মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বল, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ২৯১, বর্ণনা সংখ্যা ২৬৪৪; ৩। মুসনাদের আবু ইয়ালী : খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪৪১, বর্ণনা সংখ্যা ২৫৬৭; ৪। ইবনে কাছীর : তাফসীরুল কোরআনিল আজীম : খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৯২)।] (খ) অন্য একটি সূত্রে উল্লেখিত হাদীসটি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) হতে এভাবে বর্ণিত হয়েছে। হুযুর নবীয়ে আকরাম (সা:) যখন মদীনায় তশরীফ আনয়ন করলেন, তখন তিনি দেখলেন যে ইহুদীরা আশুরার দিন রোজা রাখছে। সুতরাং এ সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন। তারা উত্তর দিল, এই দিন আল্লাহতায়ালা হযরত মূসা (আ:) এবং বনী ইস্রাঈলকে ফেরাউনের উপর বিজয় ও অনুগ্রহ প্রদান করে ছিলেন। তাই, আমরা এই শ্রেষ্ঠ কামিয়াবীর তাজীম ও তাকরীম উদযাপনের লক্ষ্যে এই দিন রোজা পালন করি। (এটা আমাদের বিজয়ের দিন) এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন : আমি তোমাদের থেকে হযরত মূসা (আ:)-এর বেশী হকদার এবং তিনি সেই দিন রোজা রাখলেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও রোজা রাখার হুকুম দিলেন। [১। সহীহ বুখারী : কিতাবুল ফাযায়িলিস সাহাবা, বাবু এতইয়ানিল ইয়াহুদান্্ নাবিয়া (সা:) হিনা কাদেমাল মদীনাতা-খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ১৪৩৪, বর্ণনা সংখ্যা ৩৭২৭; ২। সহীহ মুসলিম, কিতাবুস সিয়াম; বাবু সাওমে ইয়াওমে আশুরা, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৭৯৫, বর্ণনা সংখ্যা ১১৩০; ৩। সুনানে আবু দাউদ : কিতাবুস সাওম, বাবু ফী সাওমি ইয়াওমি আশুরা, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৩২৬, বর্ণনা সংখ্যা ২৪৪৪;।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।