Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘুমন্ত অবস্থায় ৮ মাসের শিশুকে গলাকেটে হত্যা করলো পাষন্ড পিতা

স্টাফ রিপার্টার, নরসিংদী থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঘুমন্ত অবস্থায় মাহিন নামে ৮ মাসের শিশুপুত্রকে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করেছে পাষন্ড পিতা আপন মিয়া। যৌতুক নিয়ে স্বামী স্ত্রীর দ্ব›েদ্বর জের ধরে পাষন্ড পিতা আপন মিয়া ঠান্ডা মাথায় বেøড গিয়ে শিশুপুত্রকে জবাই করে হত্যা করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রায়পুরা উপজেলার মরজাল গ্রামে এই মর্মান্তিক শিশু হত্যার ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। এসময় উত্তেজিত জনগন আপনের ছোট ভাই স্বপনকে বাড়ীতে আটকে রেখে পুলিশে সোপর্দ করে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামে বাবুল মিয়ার পুত্র আপন মিয়ার সাথে বি-বাড়ীয়া জেলার নবীনগরের বারাইল গ্রামের নাসির মিয়ার কন্যা মারুফার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আপন মিয়া তার স্ত্রী মারুফাকে নিয়ে রায়পুরার মরজাল গ্রামের অর্চনা বেগমের বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকে। এরপর আপন মিয়া আর দুবাই ফিরে যায়নি। বিয়ে করার পরই স্বামী আপন মিয়া যৌতুকের জন্য স্ত্রী মারুফাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মারুফা এক পর্যায়ে বাপের বাড়ী চলে যায়। এরই মধ্যে তাদের একটি শিশু সন্তান জন্মগ্রহণ করে। মাহিনের জন্মের পর শ্বশুর শ্বাশুড়ির অনুরোধে মারুফা পূনরায় স্বামীর সংসারে ফিরে আসে। কিন্তু স্বামীর বাড়ী আসার পরই আপন মিয়া, মারুফার উপর যৌতুকের জন্য আরো বেশী নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে যৌতুকের টাকা না দিলে আপন মিয়া তার শিশুপুত্র মাহিনকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দিবে বলে হুমকি দিলে মারুফা তার শিশু সন্তান মাহিনকে নিয়ে প্রনরায় বাপের বাড়ী চলে যায়। সেখানে দীর্ঘ দিন থাকার পর এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগণকে নিয়ে তার শ্বশুর শ্বাশুড়ী মারুফাদের বাড়ী গিয়ে আর কোন নির্যাতন হবেনা আশ্বাস দিয়ে গত রোববার মারুফা ও তার সন্তান মাহিনকে আপনের ভাড়াটিয়া বাড়ীতে নিয়ে আসে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় মারুফা তার ছেলেকে পিতা আপন মিয়ার পাশে ঘুম পাড়িয়ে রান্না ঘরে গিয়ে শাক-সবজি কাটাকুটির কাজ শুরু করে। এ সময় তার দেবর স্বপন দৌঁড়ে মারুফার কাছে গিয়ে জানায় যে, তার পুত্র মাহিনের গলা দিয়ে রক্ত পড়ছে। বড় ভাই আপন মিয়া ঘরে নেই। এ কথা শুনে চিৎকার করে মারুফা দৌঁড়ে ঘরে গিয়ে পুত্র মাহিনকে কোলে নিয়ে দেখে তার গলা কাটা। এসময় শিশুপুত্র মাহিনের রক্তে তার সারা শরীর ভিজে যায়। এই অবস্থায় মারুফা আর্তচিৎকার করতে থাকলে আশেপাশের লোকজন দৌঁড়ে ঘটনাস্থলে যায়। এসময় পথিমধ্যে অনেকেই আপনকে দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে দেখে। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাহিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে এবং জনতার হাতে আটক আপনের ছোট ভাই স্বপন ও তার পিতা বাবুল মিয়াকে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার দারোগা কামাল হোসেন বাদল জানান, খবর পেয়ে সাড়ে ৮টায় তারা ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখে হাজার হাজার মানুষ অর্চনা বেগমের বাড়ী ঘেরাও করে রেখেছে। এ অবস্থায় পুলিশ ভিতরে ঢুকে লাশ উদ্ধার করে। ঘাতক আপনের ছোট ভাই স্বপন ও তার পিতা বাবুল মিয়াকে আটক করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা

৪ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ