পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন পিকেকে/পিওয়াইডিকে অস্ত্র দিয়েছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু এ অভিযোগ করে বলেন, তুরস্ক শিগগিরই এ ব্যাপারে সাক্ষ্যপ্রমাণ প্রদর্শন করবে।
শুক্রবার ইস্তাম্বুলে বিদেশী সংবাদ মাধ্যম প্রতিনিধিদের তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দায়েশ (ইসলামিক স্টেট-এর সংক্ষিপ্ত আরবি নাম) ও পিকেকে/পিওয়াইডির মধ্যে গোপন সহযোগিতা অনুমোদন করে ভুলের পুনরাবৃত্তি করছে।
রাক্কা থেকে শত শত দায়েশ সন্ত্রাসীকে পালিয়ে যেতে দেয়ার সাম্প্রতিক পিকেকে/পিওয়াইডি চুক্তির ব্যাপারে তুরস্ক প্রচন্ড প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
অন্যদিকে পেন্টাগনের মুখপাত্র এরিক প্যাহন মঙ্গলবার এ চুক্তি সমর্থন করে বলেন, এটা স্থানীয় সমস্যার স্থানীয় সমাধান।
কাভুসোগলু হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ওয়াইপিজি (পিকেকে/পিওয়াইডি) ক্রমেই বেশি স্থান দখল করছে যা যা ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ ঘটনা। দু’ সন্ত্রাসী সংগঠন ওয়াইপিজি ও দায়েশের মধ্যে ভালো সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেউ তা অস্বীকার করে না। আমরা আমাদের মার্কি মিত্র ও জোটের অন্যদের বলেছি যে ওয়াইপজি ও পিকেকের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। ওয়াইপিজি দেশের স্বাধীনতা বা ঐক্যের জন্য লড়ছে না , বরং দেশে আরো স্থান দখলের জন্য লড়াই করছে।
রাক্কা থেকে পিকেকে/পিওয়াইডি বাহিনী প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, আমরা শিগগিরই ওয়াইপিজিকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র প্রদানের ছবি ও প্রমাণ প্রদর্শন করব। তিনি বলেন, জার্মানিসহ জোটভুক্ত অন্যান্য রাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্রও তাদের দেয়া হচ্ছে।
আফরিন : এক মারাত্মক হুমকি
উত্তরপশ্চিম সিরিয়ার আফরিন প্রদেশ সম্পর্কে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলেও সন্ত্রাসী রয়েছে যাদের লক্ষস্থল তুরস্ক। তিনি বলেন, তারা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা চালাচ্ছে। তারা জোট ভুক্ত কিছু দেশের দেয়া অস্ত্র ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, আফরিন আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। সুতরাং যেখানে সন্ত্রাসীরা আছে সেখানেই তাদের নির্মূল করা প্রয়োজন।
তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনী (টিএসকে) আফরিন ও মানবিজে তাদের অভিযান সম্প্রসারিত করার প্রস্তুতির পাশাপাশি আস্তানা শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে ১২টি পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তা চৌকি স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধা ও সরকারী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ রোধে ঐ অঞ্চল মনিটর করার জন্য আফরিন ও মানবিজের কাছে তুরস্কের সীমান্তের কাছে ইদলিব প্রদেশে কৌশলগত স্থানগুলোতে তুর্কি সৈন্য মোতায়েন করা হবে।
উল্লেখ্য, তুর্কি সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যেই ইদলিব বরাবর ৬টি পর্যবেক্ষণ চৌকি স্থাপন করেছে। কাভুসোগলু বলেন, পর্যবেক্ষকদের প্রধান ভ‚মিকা হচ্ছে কারা যুদ্ধবিরতি লংঘন করে তাদের খুঁজে বের করা। তিনি বলেন, এটা কোনো সহজ কাজ নয়। আমাদের সকল উগ্রপন্থী গ্রুপকে খুঁজে বের করা ও তাদের নিশ্চিহ্ন করা প্রয়োজন। মন্ত্রী আরো বলেন, গত ৪-৫ বছরে তুরস্ক ৫ হাজারেরও বেশি বিদেশী যোদ্ধার সিরিয়া প্রবেশ রোধ ও তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আরো প্রায় ৩ হাজার তুরস্কে আটক রয়েছে।
সোচিতে সিরিয়া বিষয়ে আসন্ন বৈঠক
আস্তানা বৈঠক প্রসঙ্গে কাভুসোগলু বলেন, আমরা রাশিয়ার সাথে সহযোগিতা করছি এবং ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করেছি। তিনি বলেন, এটা একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। রাশিয়া সেখানে একটি বিরাট কাজ করেছে। তুরস্কের এখানে একটি প্রধান ভ‚মিকা ছিল এবং ইরানও এখানে ভ‚মিকা রেখেছে। আমরা অর্জনের মূল্যায়ন করতে সম্মত হয়েছি।
কাভুসোগলু বলেন, তুরস্ক ও রাশিয়া যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার একটি রাজনৈতিক সমাধান ও আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তিনি একটি অন্তর্বর্তী সময়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন যে সময়টাতে সকল পক্ষ ঐক্যবদ্ধ হবে। আগামী বুধবারে রাশিয়ার সোচি শহরে সিরিয়া বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আগে তুরস্কের ভ‚মধ্য সাগরতীরের আনতালিয়া শহরে তুরস্ক, রাশিয়া ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে মিলিত হবেন।
রাশিয়ার অবকাশ কেন্দ্র শহর সোচিতে ২২ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন,তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি অংশ নেবেন। তিনটি নিশ্চয়তাদাতা দেশ সিরিয়াতে সহিংসতার অবসান ও আস্তানা বৈঠকের পর স্থাপিত নিরাপদ অঞ্চল বিষয়ে অগ্রগতি অলোচনা করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক
যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সার্বিক ভাবে আমি বলতে পারি না যে ট্রাম্পের ব্যাপারে আমি অত্যন্ত হতাশ। তবে পিকেকে / পিওয়াইডির ব্যাপারে দুর্ভাগ্য ক্রমে মার্কিন নীতির পর্বির্তন হয়নি। তুরস্ক পিকেকে/ পিওয়াইডিকে সন্ত্রাসী সংগঠন পকেকের সিরিয়ান শাখা হিসেবে গণ্য করে। পিকেকে স্বায়ত্ত শাসনের দাবিতে ৩০ বছর ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে যাতে প্রায় ৪০ হাজার লোক নিহত হয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ই ইউ ও জোটের অন্যান্য দেশ পিকেকেকে সন্ত্রাসী গ্রæপ হিসেবে তালিকাভুক্ত করলেও যুক্তরাষ্ট্র ও জোট পিকেকের সাথে পিওয়াইডি / পিওয়াইজির সম্পর্ক উপেক্ষা করেছে।
দু’দেশের মধ্যে আরেকটি সমস্যা- ফেতুল্লা গুলেনকে তুরস্কের কাছে প্রত্যর্পণের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা তাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ করেছিলাম। তিনি যে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পিছনে ছিলেন তার সাক্ষ্যপ্রমাণও দিয়েছি। আমরা তার সাময়িক গ্রেফতার ও পূর্ণ তদন্তেরও অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু এ সবের কোনোটিই যুক্তরাষ্ট্র রাখেনি।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গুলেন আমাদের হুমকি দিচ্ছেন এবং এখনো সবকিছু অবাধে উপভোগ করছেন।
ফেটো ও তার যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন ২০১৬ সালের জুলাইতে তুরস্কে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থান ঘটান যাতে ২৫০ জন নিহত ও ২২শ’ জন আহত হয়। কাবুসোগলু বলেন, ফেটো আমেরিকান ব্যবস্থা লংঘন ও অনুপ্রবেশ কেেছ বলে বহু খবর আছে। কিন্তু আশ্চর্য যে তার ব্যাপারে কোনো তদন্ত করা হয় না।
মন্ত্রী ফেটোর সাথে সম্পর্কের কারণে ইস্তাম্বুলের মার্কিন কনস্যুলেটের একজন স্থানীয় কর্মচারীকে গ্রেফতার করা প্রসঙ্গে বলেন, এরপর আংকারার মার্কিন দূতাবাস তুর্কি নাগরিকদের জন্য নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা সার্ভিস স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়। একমাস পর দূতাবাস জানায়, তুরস্কে তাদের ক‚টেৈনতিক মিশন থেকে সীমিত পরিমাণ ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া করা হবে।
তিনি বলেন, ফেটো অভ্যুত্থানে সফল হতে পারেনি, এখন মার্কিন সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছে।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে সংলাপ চ্যানেলগুলো খোলা রাখার গগুরুত্বের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমরা সংলাপের মাধ্যমে আমাদের দি¦পাক্ষিক সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব বলে আমি নিশ্চিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।