পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী ঢাকা সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এমেরিটাস ড. এম শমসের আলী বলেছেন, আড়ম্বরতা, ভোগ-বিলাস ও অনৈতিক উচ্চাভিলাষ মানুষের জীবনে সার্বিক অধোগতির মূল কারণ। নিজের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধির চেয়ে অন্যের শান্তি সমৃদ্ধির দিকে আমরা জোর দিতে পারলে সারা বিশ্বে প্রত্যাশিত শান্তি ধরা দিবে। বিনয়, নির্বিলাস জীবন, দায়িত্ববোধ ও আড়ম্বরহীনতা সুফিদের চর্চিত এ জীবনচারিতাই বিশ্ব শান্তির নিয়ামক হতে পারে। আজ প্রায় প্রতিটি পরিবারই মাদকাসক্তি সমস্যায় জর্জরিত। বেকারত্ব বা কোনো কাজ না থাকায় সন্তানরা মাদকাসক্ত হচ্ছে। তাই তরুণদেরকে দায়িত্ব দিতে হবে।
তিনি মাইজভান্ডারী একাডেমি আয়োজিত সুফিতাত্তি¡ক মিলনমেলার উদ্বোধনী বক্তব্যে উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাইজভান্ডারী একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন চৌধুরী। ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় নৈতিকতার গুরুত্ব ও পেশাজীবীদের ভূমিকা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবির আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ।
বিজ্ঞানী ড. শমসের আলী আলোচনায় বলেন, পাঠ্য পুস্তকে আজ মানবতাবোধের কথা নেই। মানুষে মানুষে সম্প্রীতি ও মনের সাথে মনের মিলের কথা নেই। ভালোবাসাহীনতাই পরিবার ভাঙ্গছে। যুব সমাজ অবক্ষয়ে ধুঁকছে। পাঠ্য পুস্তকে মহা-মনীষীদের জীবন-কর্মের ওপর প্রবন্ধ-গল্প থাকলে বর্তমান প্রজন্ম আজকের এ অবক্ষয় থেকে পরিত্রাণ পেতো বলে তিনি উল্লেখ করেন। ড. শমসের আলী বলেন, সম্পদ বিলি করা ছাড়াও সমাজ ও মানুষের যে কল্যাণ করা যায় তা আমাদের বুঝতে হবে। সম্পদ ও সম্মান অর্জনের পাল্লায় নিজেকে সঁপে না দিয়ে সত্যিকার অর্থে মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হবার সাধনা করে যেতে হবে। তিনি দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পেশাজীবীদের নীতি-নৈতিকতা মেনে চলার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, সুফি সাধকদের অনুসৃত মিতব্যয়িতা ও অনাড়ম্বর জীবনের পথে চলতে পারলে জীবনে শান্তি ফিরে আসবে। কোরআন-সুন্নাহর বাণী ও নির্দেশনা অত্যন্ত যৌক্তিক, গণমুখী ও বিজ্ঞানবান্ধব উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোরআন-সুন্নাহর বাণী ও নির্দেশনা মেনে চললে অশান্তি হাহাকার থাকবেনা। অল্পে তুষ্টি, বস্তুগত চাহিদা সীমিত করা এবং সর্বাবস্থায় সততা ও নৈতিকতার ওপর জোর দেয়া হলে জীবনে অশান্তি থাকবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে সাবেক সেনাপ্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, মানুষে মানুষে এখন ভালোবাসা কমে গেছে। এর ফলে পারিবারিক, সামাজিক দূরত্ব বেড়ে গেছে। যা অশান্তির অন্যতম কারণ। তাই পরিবার ও সমাজে ভালোবাসা ফিরিয়ে আনসে পারলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এছাড়া সুফি সাধকের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে ড. জাফর উল্লাহ বলেন, মানবজাতির মাঝে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ পাক যুগে যুগে নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নৈতিকতা ও মূল্যবোধের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। যখন কোনো সমাজে নৈতিকতার চর্চা দেখা যাবে তখনি তাতে শান্তি পরিস্ফুটিত হয়।
আলোচনায় অংশ নেন চবি ভিসি অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, কর্নেল (অবঃ) আজিম উল্লাহ বাহার, অধ্যক্ষ ঝরনা খানম, এডভোকেট মনোতোষ বড়–য়া, এডভোকেট জহুরুল আলম, প্রকৌশলী শফিকুর রহমান, প্রফেসর সুমন কান্তি বিশ্বাস, মাইজভান্ডারী একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মীর মোহাম্মদ তরিকুল আলম, দপ্তর সম্পাদক এইচ এম রাশেদ খান, এডভোকেট কাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, নির্বাচন অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী বাবর, প্রফেসর ড. বশির আহমদ, দিলরুবা খানম প্রমুখ। সুফিতাত্তি¡ক এ মিলনমেলায় বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সুন্নী ও সুফী ঘরানার সর্বস্তরের হাজারো মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামিল হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।