পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রী হল বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সামনে থেকে প্রকাশ্যে দিবালোকে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮ দিকে অপহরণের শিকার হন উম্মে শাহী আম্মানা শোভা নামে এক শিক্ষার্থী। অপহরণের শিকার শিক্ষার্থীকে তার সাবেক স্বামী সোহেল রানা অপহরণ করেছে বলে প্রক্টর সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
প্রতক্ষদর্শী এবং অপহরণের শিকার শোভার বান্ধবীরা জানান, অপহরণের শিকার উম্মে শাহী আম্মানা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং তাপসী রাবেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। শুক্রবার সকালে হঠাৎ শোভার সাবেক ‘স্বামী’ সোহেল রানার নেতৃত্বে তিন চার জন যুবক একটি মাইক্রোবাসে জোর করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। শোভা নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মাতাজি এলাকার আমজাদ হোসেনের মেয়ে। পেশায় আইনজীবী সোহেল রানার বাড়ি জেলার আরেক উপজেলা পতœীতলার নজিপুরে। শোভা সকালে হল থেকে বের হয়েছিলেন স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। হলের গেট থেকে ৫০ গজ এগোতেই তার সাবেক স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাকে জোর করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয় দাবি করেন তারা। শোভার পিতা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে তাদের বিয়ে হয়েছিল তবে দুই মাস আগে ডিভোর্স হয়ে যায়।
জান্নাত তুফা নামে আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, অপহরণের শিকার শিক্ষার্থী আমার পাশের রুমের বাসিন্দা। কি ভংঙ্কর কথা। প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে একজন শিক্ষার্থীকে মেয়েদের হলের সামনে থেকে তাও আবার মাইক্রো করে তুলে নিয়ে গেল এটা ভাবতে অবাক লাগছে। এটা কিভাবে সম্ভব? ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা কোথায়? তিনি ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং জোরদারের দাবী জানান।
জানতে চাইলে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন মুন্সী বলেন, ক্যাম্পাসে ভালোভাবে নিরাপত্তা জোরদার করা উচিত। এভাবে ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে একজন সাধারণ শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়াতে আমরা আতঙ্কিত বোধ করছি। হয়তো কোন সময় আমরাও এভাবে অপহরণের শিকার হতে পারি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যাতে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে বাড়ান তার দাবি জানাই।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, আজ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা কোথায়? প্রকাশ্যে দিবালোকে এক মেয়ে শিক্ষার্থীকে চারজন যুবক জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেল অথচ ক্যাম্পাসের অসংখ্যা পুলিশ কিছুই করতে পারলো না। তাহলে ক্যাম্পাস কি সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকবে এ প্রশ্ন রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ইনকিলাবকে জানান, এটা অবশ্যই আতঙ্কের বিষয়। কিভাবে সম্ভব ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে একজন সাধারণ শিক্ষার্থীকে মাইক্রো করে তুলে নিয়ে যাওয়া। ক্যাম্পাসে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। তিনি বলেন, অপরিচিত কোন মাইক্রো বা বাইকে করে বহিরাগত কেউ যাতে ক্যাম্পাসে ভিতর প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবশ্যই দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিত। আমরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনকে ক্যাম্পাসের ভিতর নিরাপত্তার বাড়ানোর জন্য দাবী জানিয়েছি, আমরা আরো দাবী জানাবো যাতে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার নিশ্চিত থাকে। বিশেষ করে আমাদের বোনদের অথ্যাৎ মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ব্যাপক ভাবে জোরদার করা উচিত যাতে করে তারা কোন ভাবেই হয়রানির শিকার না হয় এই দাবী জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. লুৎফর রহমান জানান, ‘বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাবকে জানিয়েছি। সিসি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেছি, গাড়িটি মেইন গেইট ও কাজলা গেইট দিয়ে বের হয়নি। তবে চারুকলা দিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গত ডিসেম্বরে তাদের মধ্যে বিয়ে হয়েছিল। দু’মাস আগে তাদের ডিভোর্স হয়েছে। তিন মাস হলে নাকি ডিভোর্স কার্যকর হয়ে যায়। তাই তার স্বামী সোহেল চাচ্ছে যাতে ডিভোর্স কার্যকর না হয়। এজন্য মাইক্রোবাস নিয়ে এসে সোভাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সোহেল। তিনি বলেন, সকালে বান্ধবীসহ পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল শোভা। এসময় পথে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে সোহেল। পরে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জোর করে শোভাকে গাড়িতে করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের জানিয়েছেন তারা স্বামী-স্ত্রী। তার স্বামীই নাকি নিয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের বলা হয়েছে তাদের খোঁজাখুঁজি করতে। আমরা সব জায়গায় মেসেজ দিয়েছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।