নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইতালি ০-০ সুইডেন
(দুই লেগ মিলে সুইডেন ১-০ ব্যবধানে জয়ী)
মিলানের সান সিরো স্টেডিয়াম। একবুক আশা নিয়ে চেনা আঙ্গিনায় হাজির হাজারো ইতালিয়ান। স্টেডিয়ামের বাইরেও জনতার ভীড়। সুতোয় ঝুলতে থাকা বিশ্বকাপ ভাগ্য জেনে প্রিয় দলকে সমর্থনে কোন কার্পন্য করেনি তারা। মাঠেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ে গেলেন ডি রসি-কিয়েল্লিনি-ইমোবিয়েররা। কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে পুরো স্টেডিয়াম পরিনত হলো বেদনার কাব্যাগারে। যে বেদনার রং নীল। হলুদ জার্সিধারী সুইডিশদের বিশ্বকাপ উল্লাস ঢেকে গেল ইতালিয়ানদের বিষাদ-বন্যায়।
চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ছাড়াই অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপ। ১৯৫৮ সালে সুইডেন বিশ্বকাপের পর যে ঘটনা এই প্রথম। এবারো তাদের বিশ্বকাপ হতাশায় জড়িয়ে সুইডেনের নাম। প্লে-অফে দুই লেগ মিলে সুইডিশদের কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরে চুর হয়েছে ইতালিয়ানদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন।
তৃতীয়বারের মত ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে দেখা যাবে না ইতালিকে। ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে ছিল না আজুরিরা। পরের দুই আসরে টানা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ১৯৫৮ সালের সুইডেন বিশ্বকাপের মূলপর্বে উঠতে ব্যর্থ হয় ইতালি। এরপর বিশ্বমঞ্চে ফিরে আরো দুইবার বিশ্বসেরার খেতাব জিতেছে তারা। যে রেকর্ড তাদের বসিয়েছে বিশ্বকাপের অন্যতম সফল দলের আসনে। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের পর জার্মানির সাথে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সফল দল তারা। এমন দলটিকে ছাড়াই অনুষ্ঠিত হবে ফুটবলের মহাজজ্ঞ। ইতালিয়ানদের কাছে তো বটেই বিশ্বের সকল ফুটবল রোমান্টিকদের কাছেই যা চরম হতাশার।
সেই হতাশা থেকেই জাতীয় দলকে বিদায় বলে দিয়েছেন ২০১১ সাল থেকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া কিংবদন্তি গোলরক্ষক জিয়ানলউজি বুফন। একই সাথে ইতালির প্রিয় জার্সি চিরতরে খুলে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দ্রেয়া বারজাল্লি ও ড্যানিয়েল ডি রসিরা। তাদের সঙ্গে এই কাতারে যোগ দিতে পারেন জর্জিও কিয়েল্লিনিও। তার মানে, এই ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে অবসান হলো ইতালিয়ান ফুটবলের একটি অধ্যায়।
সুইডেনের স্টকহোমে প্রথম লেগে ১-০ গোলে হেরে আসায় পরশু মিলানের সান সিরোতে কমপক্ষে দুই গোলের ব্যবধানে জিততে হতো ইতালিকে। কিন্তু স্বাগতিকদের সেই সুযোগ দেয়নি সুইডেন। ৭৬ শতাংশ বলের দখল রেখেও তাই সুইডিশদের বজ্র আটুনি রক্ষণ ভাঙতে পারেনি জিয়ান পিয়েরো ভিনতুরোর শিষ্যরা। স্বাগতিকরা যে একবারেই সুযোগ পায়নি তা না। সবচেয়ে ভালো সুযোগটা তৈরী করেছিলেন বদলি খেলোয়াড় স্টেফেন এল শেয়ারায়ে। কিন্তু তার লেট ভলি দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন সুইডিশ গোলরক্ষক রবিন ওলসেন। সবচেয়ে বেশি সুযোগ মিস করেছেন স্ট্রাইকার সিরো ইমোবেল। প্রথমার্ধে তার দুর্বল প্রচেষ্টা গোল লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন সেন্টার ব্যাক আন্দ্রেস গ্রানকভিস্ট।
দ্বিতীয়ার্ধেও বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরী করে তারা। কিন্তু প্রতিটা আক্রমণের সমাপ্তিটা ছিল হতাশাময়। সব মিলে ২০ বার সুইডেনের গোল বরাবর শট নেয় ইমোবিয়েল-বালোত্তি-ডারমেইনরা। একবারে মেলেনি জালের দেখা। ম্যাচ শেষ হয় গোলশূন্য ড্রয়ে। যে ড্র ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মত সুইডেনকে ঠেলে দেয় বিশ্বকাপের মূল পর্বে। শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে কান্নায় ভেঙে পড়া বুফন বলেন, ‘আমি নিজের জন্য দুঃখ করছি না। আমার দুঃখ ইতালিয়ান ফুটবলকে নিয়ে। আমরা এমন কিছুতে ব্যর্থ হলাম যার প্রভাব পড়বে সামাজিক পর্যায়েও।’
একই সাথে শেষ হতে পারে ইতালিয়ান দলে ভেনতুরো অধ্যায়ও। ম্যাচ শেষে যিনি সাংবাদিকদের সামনে আসতে অস্বীকৃতি জানান। সাম্প্রতিক বেশ কিছু ম্যাচে তার পরিকল্পনা নিয়েও হয়েছে বেশ সমালোচনা। স্পেনের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হারের ম্যাচে প্রচলিত নিয়ম থেকে বেরিয়ে ম্যাচ পরিচালনা করেন ৪-২-৪ ফর্ম্যাটে। এবার তার দিকে তীর ভেসে আসছে এদিন নাপোলি মিডফিল্ডার কাম ফরোয়ার্ড লোরেঞ্জা ইনসিগনেকে বেঞ্চে বাসিয়ে রাখায়। ৬৯ বছর বয়সী কোচের সাথে চুক্তি ২০২০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ইতালিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাকে সরিযে হয়তো নজর দিতে পারে সাবেক এসি মিলান ও জুভেন্টাস কোচ কার্লো আনচেলত্তির দিকে। বায়ার্ন মিউনিখ থেকে বরখাস্ত হয়ে যিনি এখন অবসর সময় কাটাচ্ছেন।
প্রথম লেগের ম্যাচ সেরা ডিফেন্ডার গ্রানকভিস্ট এদিনও ছিলেন দুর্দান্ত। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘আমার জন্যে এমন সুখের ঘটনা এই প্রথম, তাদের জন্যেও যাদের জন্যে এটাই সম্বব্য শেষ বিশ্বকাপ। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।