Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আত্মসমর্পণ না করলে অনাহারে মারার কৌশল মানবতাবিরোধী

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এমনেস্টি ইন্টার ন্যাশনাল অভিযোগ তুলেছে, সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে আসাদ সরকার আত্মসমর্পণ না করলে অনাহারে মারার কৌশল নিয়েছে। বেসামরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত এই ‘হয় আত্মসমর্পণ নয়তো অনাহার’ নীতিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওই মানবাধিকার সংগঠন। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হলেও তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ভুক্ত করেনি তারা। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাধীন উদ্যোগের প্রত্যাশা জানিয়েছে সংস্থাটি। নতুন এক প্রতিবেদনে এমনেস্টি জানায়, মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারীরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের চালানো অবরুদ্ধের প্রচারণা, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি করার অভিযোগগুলো যাচাই করে দেখেছেন মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে বেসামরিকদের নিরাপত্তা কিংবা সেনাবাহিনীর জরুরি প্রয়োজন থেকে বেসামরিকদের বাস্তুচ্যুত করা হয়নি। তার মানে হলো জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি করার মধ্য দিয়ে এটি আন্তর্জাতিক মানবিকার আইন লঙ্ঘন করেছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এলাকাগুলোর বাস্তুহারা বাসিন্দা, জাতিসংঘের কর্মকর্তা এবং মানবিক সহায়তা প্রদানকারী কর্মীরাসহ মোট ১৩৪ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে এমনেস্টি। প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দিগুলোর ব্যাপারে নিশ্চিত হতে বেশ কিছু ভিডিও এবং স্যাটেলাইট চিত্রও পর্যালোচনা করেছে সংগঠনটি। মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটিশ ওয়েবসাইট মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, এ ব্যাপারে সিরীয় ও রুশ কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করেনি। দারায়া, পূর্ব আলেপ্পো সিটি, আল ওয়ায়ের, মাদায়া, কেফরায়া এবং ফোয়া-অন্তত এই ছয়টি অবরুদ্ধ এলাকায় বেসামরিকদেরকে খাবার, ওষুধ, ও অন্য মৌলিক প্রয়োজনগুলো থেকে বঞ্চিত করছে বলেও পর্যালোচনায় বের হয়ে এসেছে। অবশ্য প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে সংঘাতে অংশ নেওয়া দুই পক্ষই আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। তবে আসাদ সরকারের পদ্ধতিগতভাবে বেসামরিকদের এলাকায় সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দেওয়া, অনবরত বোমা হামলা চালানোর কৌশলকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে উল্লেখ করেছে এমনেস্টি। পূর্বাঞ্চলীয় গৌটা এলাকার সাহার দফদা এলাকার এক মাস বয়সী এক শিশুর একটি ছবির মধ্য দিয়ে সিরিয়ার অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে আটকা পড়াদের দুর্দশার চিত্র আবারও নতুন করে সামনে আসে। ওই ছবিতে যে মৃত শিশুকে দেখা গেছে তার ওজন দুই কেজিরও কম, চামড়ার নিচ থেকে স্পষ্ট করে হাড় বোঝা যাচ্ছিল। ছবিটি প্রকাশের পর নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই প্রদেশের প্রায় ৪ লাখ মানুষ তীব্রভাবে মৌলিক খাদ্য ও ওষুধ সংকটে ভুগছে। প্রচÐনস্রকমের অপুষ্টিতে ভুগছে ১২০০ শিশু আর আরও দেড় হাজার শিশু অনিবার্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনেস্টির দাবি, বেসামরিকদের বিরুদ্ধে যে নিপীড়ন চলছে তা এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে তদন্ত এবং দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে স্বাধীন কর্তৃপক্ষীয় উদ্যোগের তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি। মিডল ইস্ট মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ