Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খালেদার বক্তব্য শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ -ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিএনপির সমাবেশে খালেদা জিয়ার বক্তব্য শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমাবেশে দেয়া বিএনপি প্রধানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এক কথায় যদি বলতে হয় খালেদা জিয়ার বক্তব্য শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে খালেদা জিয়ার নির্বাচন দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে। সারা পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে যেভাবে হয় সেভাবে। সে সময় যে সরকার থাকবে, তারা ইসিকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে সহায়তা দেবে।
নিজে নির্যাতিত-অত্যাচারিত হয়েছেন উল্লেখ করে নির্যাতনকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, জুলুম আওয়ামী লীগ করেনি, জুলুম করেছে বিএনপি। এটা দেশের জনগণ জানে।
এসময় আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্যাতিত-নিপীড়িত হওয়ার কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর রক্তের দাগ খালেদা জিয়ার হাতে। জুলুম তিনি করেছেন, অথচ তিনি আজও জাতির কাছে ক্ষমা চাননি। খালেদা জিয়া হাওয়া ভবন গড়ে তুলে লুটপাট চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি করেছেন। পুড়িয়ে মানুষ মেরেছেন। তার কৃতকর্মের জন্য তাকেই জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
খালেদা জিয়া এখন ক্ষমার নাটক করছেন মন্তব্য করে কাদের বলেন, তিনি জানেন, তিনি যে মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন, তা আওয়ামী লীগ দেয়নি। তারই তৈরি করা লোকজন (১/১১ সরকার) মামলা দিয়েছে। খালেদা জিয়া জানেন, হয়তো এসব মামলায় তার দন্ড হয়ে যেতে পারে। এজন্য তিনি ক্ষমার নাটক সাজিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের দিকে ইঙ্গিত করে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় খালেদা জিয়ার এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের কেউ প্রধান বিচারপতির মতো একজনকে পদত্যাগ করাবে, এটা মনে করা হাস্যকর।
নির্বাচনে ইলেট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার বন্ধে খালেদা জিয়ার আহŸানের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইভিএম সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। কিন্তু খালেদা জিয়া এটা চান না। তিনি ২০০১ সালের মতো মেকানাইজড (যান্ত্রিক) নির্বাচন চান। তার মন্তব্য ইতিবাচিকভাবে দেখছি। তবে এটা ইসির ব্যাপার।
নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে বিএনপি চেয়ারপারসনের দাবি প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগও নির্বাচনে সেনাবাহিনী চায়। তবে সেটা আইন অনুযায়ী।
খালেদা জিয়া ১০ বছরের মতো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন করেন, তিনি সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে কয়টা নির্বাচন করেছেন?
প্রতিক্রিয়া প্রদানকালে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল প্রমুখ।
এর আগে গতকাল দুপুরে রাজধানীর একটি রেঁস্তোরায় জাতীয় সড়ক পরিবহন নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৫তম সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের সরকার বাধা দিচ্ছে বিএনপির এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে বলে জানান। তিনি বলেন, বিএনপির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে, খোঁজ নিতে হবে বাধাটা কে দিচ্ছে? বিএনপি তো নিজেরাই নিজেদের বাধা দেয়। অতীতে আমরা যখন এসব অভিযোগের খোঁজ-খবর নিয়ে দেখি, তখন অনেক সময় দেখা যায় এসব অভিযোগের বাস্তব কোনো ভিত্তি নেই। আসলেই কথায় কথায় নালিশ করা বিএনপির পুরোনো অভ্যাস। যতটুকু জানি অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে রাস্তা জ্যাম হয়েছে। যে কারণে ঢাকার ভেতরে গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিধিনিষেধ নেই।
এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা এবং নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন, নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান, পুলিশের ডিআইজি মোখলেছুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৮ নভেম্বর ৭ মার্চের ভাষণের বিশ্ব স্বীকৃতির জন্য আমরা সমাবেশ দিয়েছি শনিবার দেখে। এ ধরনের সমাবেশে জনভোগান্তি হবেই, এটাকে সহনীয় মাত্রায় রাখা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। কিন্তু আজকে তো সহনীয় মাত্রায় নেই। সহনশীলতার মাত্রা অতিক্রম করে এখন রাস্তা অচল হয়ে গেছে। খালেদা জিয়ার সংবর্ধনার দিনও একই অবস্থা হয়েছিল। আমরা শেখ হাসিনাকে যে সংবর্ধনা দিয়েছিলাম, সেখানে আমাদের নারী উপস্থিতিও তাদের সম্মিলিত উপস্থিতির চেয়ে বেশি ছিল। তারপরও আমরা ছিলাম সুশৃঙ্খল পরিবেশে, নেতাকর্মীরা ছিল ফুটপাতে। যারা আজকে রাস্তা অচল করে সভা-সমাবেশ করে, তারা ক্ষমতায় আসলে দেশ অচল করবে। তিনি বলেন, আমাদের কথা তো পরিষ্কার সহায়ক ও তত্ত¡াবধায়ক তো মামাবাড়ির আবদার। আমরা সংবিধানের বাহিরে যাবো না। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তারাই নির্বাচনকালীন সরকার হয়। জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৫তম সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, থ্রি হুইলার, ইজিবাইক, নছিমন, করিমন, ভটভটি এগুলো বন্ধ করা কঠিন, কারণ এটা নির্বাচনী বছর। আমি চাইলেও জনপ্রতিনিধিরা করতে দেবে না। ভোটের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাস্তবতা বুঝতে হবে। আপাতত সম্ভব নয়। তাই ভোট শেষ করে সরকার গঠন করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ সময় সেতুমন্ত্রী শীতে গাড়ির গতিবেগ সীমিত রাখার এবং কুয়াশায় সতর্কভাবে গাড়ি চালানোর অনুরোধ করেন।



 

Show all comments
  • আরমান ১৩ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:২২ এএম says : 1
    আর আপনার বক্তব্য ?
    Total Reply(0) Reply
  • SM Arif ১৩ নভেম্বর, ২০১৭, ৯:১২ এএম says : 0
    আপনাদের বক্তব্য কি ধরনের? দেশের মানুষ পাগল না যে, কথার ভাব বুঝবেনা। আপনাদের কাছে আবেদন, যদি জনগনের উপর বিশ্বাশ থাকে তাহলে নিরপেক্ষ নির্বচন দেন। আর নিজেদের অবস্থান দেখেন। আপনারা যা যা করছেন তা ক্ষমতা না ছাড়ার জন্য। ক্ষমতার লোভে। নিরপেক্ষ রাজনিতি করুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ