Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে আসছেন খালেদা জিয়া -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ৬:৪৬ পিএম

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গণসমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সমাবেশ শুধু জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনই নয়, আমরা মনে করি, এই গণসমাবেশ থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে জাতি যে বার্তা পাবে, সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। গতকাল (শনিবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশ করতে বিএনপি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ থেকে ২৩টি শর্তে লিখিত অনুমতি পেয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, একদিন আগে অনুমতি পেলেও সমাবেশের কাজ গুছিয়ে আনা হয়েছে। ইতোপূর্বে আমরা ১২ ঘণ্টার নোটিসেও সফল সমাবেশ করেছি। অতীতের চেয়ে এবার পুলিশ ‘একটু আগে‘ অনুমতি দেওয়ায় ডিএমপিকে ধন্যবাদ জানান তিনি। সমাবেশ সফল করতে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি সরকার, সরকারি দল ও ডিএমপিকে অনুরোধ জানাতে চাই, এই গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত করার জন্য আমরা আপনাদের সহযোগিতা চেয়েছি। আশা করি আপনারা সহযোগিতা করবেন। সমাবেশে বাধা দিয়ে গণতান্ত্রিক যে পরিবেশ আছে, তার বিঘ্ন ঘটাবেন না।
সমাবেশ থেকে বেগম খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সমাবেশ শুধু জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে একটি সমাবেশ নয়, বরং এখানে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনবার জন্যে চলমান যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনকে সুসংহত করবার ক্ষেত্রে, জনগণের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে বার্তা দিবেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দেশের সমগ্র সচেতন মানুষ মনে করে।
বিএনপি সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘বিএনপি যেহেতু সকল সমাবেশে নিজেদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করে সেহেতু তাদেরকে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশকে অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়’। ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যকে সর্বৈব ভিত্তিহীন ও মিথ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির কোন সভা-সমাবেশে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি। দুঃখজনকভাবে প্রতিদিন আমরা খবরের কাগজে খবর পাচ্ছি যে, তাদের (আওয়ামী লীগের) নিজেদের মধ্যে কোন্দল হচ্ছে, গোলমাল হচ্ছে, মারামারি হচ্ছে; এমনকি একে অপরকে হত্যা পর্যন্ত করছে। ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে অনুরোধ করব, অনুগ্রহপূর্বক এই ধরনের ভিত্তিহীন, মিথ্যা তথ্য না দিয়ে... একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরে যাওয়ার জন্য আমরা যে চেষ্টা করছি, উদ্যোগ গ্রহণ করছি, সরকারি দলকে এই প্রক্রিয়ায় আনার জন্য চেষ্টা করছি- সেই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে পজিটিভ কথা বলুন। প্রতিটি বক্তব্যের মধ্যে নেগেটিভ কথা বলে উসকানিমূলক কথা বলে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অনুগ্রহ করে ব্যাহত করবেন না।
সমাবেশের আগে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্নস্থানে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারসহ পুলিশি তা-ব চলছে। যেটা বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচির আগে করা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। গত শুক্রবার রাতেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসায় সমাবেশের প্রস্তুতি সভা শেষে বের হওয়ার পর ২০জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৩টি শর্তে ঢাকা মহানগর পুলিশ আমাদের সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী দুপুর ২টা থেকে সমাবেশ শুরু করে বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মহা. আশরাফুজ্জামান স্বাক্ষরে বিএনপিকে দেওয়া চিঠিতে ২৩টি শর্তের মধ্যে রয়েছে- বিএনপিকে দুপুর ২টায় শুরু করে বিকাল ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে। সমাবেশ শুরুর সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা আগে নেতা-কর্মীদের ঢুকতে দেবে পুলিশ। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আসে- এমন কোনো ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য দেওয়া বা প্রচার করা যাবে না। লাঠি-সোঁটা, ব্যানার, ফেস্টুনের আড়ালে লাঠি-রড বহন করা যাবে না। মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসা যাবে না। উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না। রাষ্ট্রবিরোধী, আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী বা জননিরাপত্তা বিরোধী কার্যকলাপ চালানো যাবে না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন সংলগ্ন স্থানে অনুষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সমাবেশের নির্ধারিত সময়ের আগে উদ্যান বা তার আশপাশের রাস্তা-ফুটপাতে সমবেত হওয়া যাবে না। যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়- এমন কিছু করা যাবে না। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অনুমোদিত স্থানের বাইরে সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে না।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, এ্যাডভোকেট নিতাই রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, হারুন অর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রশিক্ষণ সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মোঃ আঃ আউয়াল খান, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল হোসেনসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গুরুত্বপূর্ণ বার্তা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ