বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ ১৩ জনসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ৪ জনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পৌরসদরের অদূরে বাঁশখালীর সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ও মনোনয়ন প্রত্যাশী অপর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটনের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশী অস্ত্র ব্যবহার করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। দু’পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে পুরো এলাকা দৃশ্যত রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) একেএম এমরান ভূঁইয়া বলেন, পৌরসভার সামনে আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর স্মরণসভার আয়োজন করেন আবদুল্লাহ কবির লিটন। তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে সভাস্থলে যাওয়ার পথে এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের অনুসারীরা পৌরসভার অদূরে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয়। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। উভয় পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, আবদুল্লাহ কবির লিটনকে ঠেকাতে বাঁশখালীর প্রধান সড়কের অলি মিয়ার দোকান এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন এমপির অনুসারীরা। লিটন তার অনুসারীদের নিয়ে দেলা মিয়ার দোকান এলাকায় এসে আটকে পড়েন। এসময় উভয়দিক থেকে গুলিবিনিময় শুরু হয়। বন্দুকযুদ্ধে এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগ্নেয়াস্ত্রের পাশোপাশি দুই পক্ষের কর্মীদের হাতে দা, কিরিচ, লোহার রডসহ দেশী অস্ত্র দেখা যায়। সংঘাত থামাতে সেখানে ছুটে যায় পুলিশ। দুই পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। এ সময় পাল্টাপাল্টি হামলার শিকার হয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বাঁশখালী পৌরসদরে দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় পক্ষ সেখানে অস্ত্রশস্ত্রের মহড়া দেয়। তবে পুলিশ বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে আবদুল্লাহ কবির অভিযোগ করেছেন, এমপির নির্দেশে তার উপর হামলা হয়েছে। এতে অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধসহ ৫০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি তার। অন্যদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি মোস্তাফিজুর রহমান পাল্টা অভিযোগ করেন, আবদুল্লাহ কবিরের লোকজনই তার লোকজনের উপর হামলা করেছে। তিনিও এ হামলায় তার ৩০ জন অনুসারী আহত বলে দাবি করেছেন।
আহতদের প্রথমে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, গুলিবিদ্ধদের মধ্যে মোঃ জামাল হোসেন নামে একজন ইউপি সদস্য রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক, তার বুকে ও পিঠে গুলি লেগেছে। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও বেশ কয়েকজনকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে। রাতে মাহমুদুল ইসলাম (৩৫), রফিক উদ্দিন বাদশা (৪০), ওমর ফারুক (৩০) ও রাশেদ (২৬) নামে ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। আরও কয়েকজনকে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাতে চট্টগ্রামে আনা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।