Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দ. কোরিয়া কয়েকশ’ কোটি ডলারের মার্কিন অস্ত্র কিনবে

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি ডলারের অস্ত্র কেনার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া গিয়ে এ কথা জানান। পরমাণু অস্ত্রসজ্জিত প্রতিবেশী দেশ উত্তর কোরিয়ার হামলা থেকে নিজেদের রক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশটি অস্ত্র কিনছে বলে জানা গেছে। ট্রাম্প তার দুদিনের কোরিয়া সফরের প্রথম দিনে দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জা-ইনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে সংযোজিত গোলার ওজন বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র ক্রয় করবে। তিনি বলেন, সেটি উড়োজাহাজ হতে পারে, ক্ষেপণাস্ত্র হতে পারে, অন্য যেকোনো কিছু হতে পারে। অস্ত্র ক্রয়ে শত শত কোটি ডলার ব্যয় দেশটির জন্য যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, এর মানে হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে চাকরি, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস। উল্লেখ্য, এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনি মিত্র দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন করা আছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন অস্ত্র ক্রয়ের ব্যাপারটি নিশ্চিত করে একে অত্যাবশ্যক বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, তার দেশ নিরাপত্তা সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পদ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কোরিয়ার মধ্যে বিদ্যমান ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির আওতায় সিউল কেবল ৫০০ কেজি ওজনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের গোলা উৎপাদন করতে পারে। এর বদলে যুক্তরাষ্ট্র কোরিয়ার ওপর সম্ভাব্য আক্রমণ ঠেকাতে নিউক্লিয়ার ছাতা সুবিধা দেয়। তবে স¤প্রতি উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করেছে। সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়া তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পরমাণু পরীক্ষা চালায়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার জোট নীতিগতভাবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সম্মত হয়। মুন উল্লেখ করেন, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু অস্ত্রের ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রেক্ষাপটে দুটি মিত্রদেশ এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া সত্যিকারের একটি সমঝোতার জন্য এগিয়ে না আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের ওপর সর্বোচ্চ চাপ ও নিষেধাজ্ঞা জারি করার ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র একমত হয়েছে। এর আগে ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি মুক্ত, ন্যায্য ও পারস্পরিক বাণিজ্য চুক্তি করার ব্যাপারে আহŸান জানিয়েছিলেন। তিনি বর্তমানের চুক্তিটিকে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মোটেই ভালো নয় বলে আখ্যা দেন। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টের (এফটিএ) আওতায় পাঁচ বছরের যে চুক্তি, যা কোরাস নামে পরিচিত- তাকে তিনি ভয়ঙ্কর চুক্তি এবং চাকরি হত্যাকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি কোরাস চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছেন, যার ফলে দক্ষিণ কোরিয়া চীনের দিকে আরো বেশি ঝুঁকবে বলে আশঙ্কা অনেকের। উল্লেখ্য, চীন বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। ওয়াশিংটন এরই মধ্যে চুক্তিটি পুনর্বিবেচনা করার কথা বললেও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর মুন বলেন, আমরা এখন আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে জোর দিচ্ছি এবং আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা একটি মুক্ত, ন্যায্য চুক্তি করতে সক্ষম হব। তিনি আরো বলেন, সত্যি বলতে বর্তমান চুক্তিটি একেবারেই ব্যর্থ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুব বেশি ভালো নয়। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ২০১২ সালে এ চুক্তিটি হওয়ার পর থেকে দ্বিগুণ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১৩২ কোটি ডলার থেকে বেড়ে গত বছর এ ঘাটতি ২৭৬ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় বিদেশী বাণিজ্য গ্রুপ আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (এমচ্যাম) সেপ্টেম্বরে চুক্তিটিকে সমর্থন করেছিল এবং সতর্ক করে বলেছিল, চুক্তিটি বাতিল হলে অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এবং মিত্রশক্তিগুলোর বন্ধন দুর্বল করে দেবে। এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ