পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেটের পরাজয়ের পর যেসব যোদ্ধারা ধরা পড়েছে তাদের কি করা হবে? তাদের সবাইকে কি মেরে ফেলা হবে?
এমন কথা অনেকেই - যাদের মধ্যে পশ্চিমা রাজনীতিবিদরাও আছেন - বলছেন যে, এই বন্দী যোদ্ধাদের ‘মেরে ফেলাই উচিত’।
কিন্তু আন্তর্জাতিক রেডক্রস বলছে, বন্দীদের সাথে মানবিক আচরণের ব্যাপারটি ভুলে যাওয়া উচিত নয়। বন্দী আইএস যোদ্ধাদের নির্মূল করার আহŸান প্রত্যাখ্যান করে রেডক্রসের মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত উপপরিচালক প্যাট্রিক হ্যামিল্টন বলছেন, তাদের সাথে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আচরণ করতে হবে।
ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন আইএস নিয়ন্ত্রিক শহরের পতন হবার পর বহু যোদ্ধা বিজয়ী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। মসুলের কাছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রায় ১,৩০০ নারী ও শিশুকে বন্দী করে রাখা হয়েছে - যারা আইএসের বিদেশী যোদ্ধাদের স্ত্রী ও সন্তান বলে মনে করা হয়। এরকম আরো অনেক নারী ও শিশু হয়তো আগামীতে ধরা পড়বে।
কিন্তু এদের নিয়ে কি করা হবে, বা করা উচিত?
রেডক্রসের মি. হ্যামিল্টন কারো নাম উল্লেখ করেননি। তবে কিছুদিন আগেই যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জুনিয়র মন্ত্রী রোরি স্টুয়ার্ট বলেছেন, ‘যেসব ব্রিটিশ নাগরিক ইসলামিক স্টেটের হয়ে যুদ্ধ করেছে তারা আমাদের জন্য গভীর বিপদের কারণ’।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশতঃ এদের মোকাবিলা করার উপায় বলতে গেলে একটাই - তাদের মেরে ফেলা’।
কয়েকদিন আগে ফরাসী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লিও বলেন, আইএস যোদ্ধারা যদি যুদ্ধে নিহত হয় - সেটাই সবচেয়ে ভালো হবে।
আইএসবিরোধী কোয়ালিশনে মার্কিন দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেছেন ‘কোয়ালিশন এটা নিশ্চিত করতে চায় যেন এই সিরিয়ার মাটিতেই বিদেশী যোদ্ধারা মারা যায়’।
উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, এসব কথাবার্তা ভোটারদের কাছ থেকেও সমর্থন পাচ্ছে।
কিন্তু রেডক্রসের মি. হ্যামিল্টন বলেন, এগুলো মানবিকতা-বর্জিত কথাবার্তা। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আইএস যোদ্ধারা আমাদের সার্বজনীন মানবতার আওতার বাইরে এটা মনে করা চলে না’।
তিনি স্বীকার করেন যে, মসুল বা রাক্কার মতো শহরে আইএসের শাসনকালে এবং তা পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের সময়ও বেসামরিক নাগরিকরা ভয়াবহ দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।
তবে মি. হ্যামিল্টন আইএস যোদ্ধা - এমনকি যারা নানা দেশ থেকে সিরিয়া-ইরাকে লড়াই করতে এসেছিল - তাদের প্রতি আচরণের বিষয়টির ওপর জোর দেন।
অনুমান করা হয় যে, ইসলামিক স্টেটের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার বিদেশী যোদ্ধা রয়েছে। কিছুদিন আগেই ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, আইএসে যোগ দেয়া প্রায় ৮০০ ব্রিটিশ যোদ্ধার মধ্যে বেশ কয়েকশ’ ইতিমধ্যে দেশে ফিরে এসেছে।
প্যারিস, লন্ডন ও নিউইয়কের মতো শহরগুলোতে অনেকেই উদ্বিগ্ন যে, খেলাফতের পতন হবার পর বিদেশী আইএস যোদ্ধারা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলে কী পরিস্থিতি হবে।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলো মনে করে যে, মাত্র কয়েকশ’ যোদ্ধাও যদি ইউরোপে ফিরে আসে সেটাও একটা বিরাট নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জে পরিণত হবে।
ইউরোপে অনেকেই হয়তো মনে করতে পারেন যে এসব যোদ্ধা - যাদের আদর্শের মধ্যে মেয়েদের ক্রীতদাসী করে রাখা, বন্দীদের শিরñেদ করা বা জনতার ওপর গাড়ি তুলে দেয়ার মত বিষয় আছে - তাদের সাথে ‘মানবিকতা’ দেখানোর কিছু নেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক রেডক্রস - যারা জেনেভা কনভেনশনের রক্ষক - তারা বিষয়টিকে মোটেও এভাবে দেখছে না।
মি হ্যামিল্টন বলছেন, কেউ নজিরবিহীন অপরাধ করেছে বলেই তাকে আইনের আওতার বাইরে বলে মনে করা চলে না। কোন যোদ্ধা ধরা পড়লে এবং সে কোন অপরাধ করে থাকলে স্বাভাবিক আইনের মাধ্যমেই তার বিচার হওয়া উচিত - বলেন তিনি।সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।