Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাইজাম্পে তিন নতুন রেকর্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) তিন অ্যাথলেটের নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দু’দিন ব্যাপী আসরের প্রথম দিন হাইজাম্পেই হয়েছে নতুন রেকর্ডগুলো। এই ইভেন্টের বালক ও বালিকা বিভাগে বিকেএসপির জিহান ও জান্নাতুলের রেকর্ড গড়ার দিন কিশোর বিভাগেও উজ্জ্বল ছিলেন মাসুদ রানা। তিনজনই বিকেএসপির শিক্ষার্থী।

বালক বিভাগের হাইজাম্পে জিহান ১.৮১ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে ১৭ বছর আগের রেকর্ড ভাঙ্গলেন। ২০০০ সালে পাবনার ইয়াকুব আলী ১.৭৪ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছিলেন। এবার তার কাছ থেকে মুকুট ছিনিয়ে নিলেন জিহান। জয়পুরহাটের সন্তান জিহান দু’ভাই বোনের মধ্যে ছোট। বাবা নজরুল ইসলাম স্কুল পর্যায়ে অ্যাথলেটিক খেলতেন। জাতীয় জুনিয়রেও ১০০ ও ২০০ মিটার এবং ৪০০ মিটার রিলেতে অংশ নিয়েছিলেন। তাই বাবার আগ্রহেই অন্য কোন খেলায় না গিয়ে অ্যাথলেটিক্সকেই বেছে নিলেন জিহান। তবে নিজ এলাকায় এক সময় ফুটবল খেলতেন তিনি। নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে উচ্ছ¡সিত এই ক্ষুদে অ্যাথলেট। জিহানের কথা, ‘স্কুলে গিয়ে ফুটবলকেই বেশি পছন্দ করতাম। কিন্তু বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষনে বদলে যায় আমার জীবন। প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে বিকেএসপিতে ভর্তি হই। মনযোগী হই অ্যাথলেটিক্সে। নিজের ভবিষ্যত লক্ষ্য নিয়ে নবম শ্রেণীর এই ছাত্র বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমি সিনিয়রেও রেকর্ড গড়তে চাই। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশ থেকেও পদক জিতে আনতে চাই।’ অন্যদিকে জুনিয়র আসরে হাইজাম্পের বালিকা বিভাগে ১৫ বছর আগে রেকর্ড গড়েছিলেন বিজেএমসির রাবেয়া সুলতানা। ২০০২ সালে ১.৫০ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। কাল সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছেন জান্নাতুল ১.৫১ মিটার লাফিয়ে। সেরা হতে পেরে দারুণ খুশি বিকেএসপির এই বালিকা অ্যাথলেট। জান্নাতুল বলেন, ‘শুনেছিলাম রেকর্ড গড়েছি। কিন্তু কত বছর আগের তা জানতে পারিনি। তবে এখন শুনে ভালো লাগছে।’ তিন বোনের মধ্যে বড় জান্নাত। বাবা টাঙ্গাইলে একটি বেসরকারী টেলিকম কোম্পানীর টাওয়ারে চাকরি করেন। পরিবারের দারিদ্রতা দূর করতে দিনের বাকি সময়টা চাষাবাদে কাটান। কোচ টিপুর চেষ্টায় বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছিলেন জান্নাত। ক্যারিয়ারের শুরুতেই সেরার খেতাব জিতলেও নিজের এই পারফরম্যান্সে কিন্তু খুশী নন তিনি। এ প্রসঙ্গে জান্নাতুল বলেন, ‘এতটুকু উচ্চতায় লাফিয়ে আমি খুশী নই। আমাকে দূরত্বটা আরও বাড়াতে হবে। কারণ অন্য দেশের অ্যাথলেটরা আমাদের চেয়েও বেশি দূরত্বে লাফাতে পারে। তাই নিজের লক্ষ্য পূরন করে এগিয়ে যেতে চাই আমি।’
অনুজদের সাফল্যে অনুপ্রাণীত হয়েই যেন জ্বলে উঠলেন বিকেএসপির কিশোর অ্যাথলেট মাসুদ রানা। তাই প্রতিযোগিতার কিশোর বিভাগের হাইজাম্পের স্বর্ণপদকটি গেল তার দখলেই। ৮ বছর পর তিনিও নতুন রেকর্ড গড়লেন। ২০০৯ সালে তার সংস্থার মাসুদ কায়সারের গড়া (১.৮৬ মিটার) রেকর্ডটি ভেঙ্গে কাল মাসুদ রানা লাফিয়েছেন ১.৯৫ মিটার উচ্চতায়। সাফল্য পেয়ে তিনি বলেন,‘আমি খুব খুশি নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে। ভবিষ্যতে দেশের জন্য বিদেশের মাটি থেকে পদক জিতে আনতে চাই।’
শিষ্যদের কীর্তিতে দারুন খুশী সাবেক তারকা হাইজাম্পার শামীমা সাত্তার মিমু। ১৯৭৬-’৯১ পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে হাইজাম্পে স্বর্ণপদক জেতা এই সাবেক অ্যাথলেট বলেন, ‘ওদের উচ্চতা আর পরিশ্রম দেখে আমি আবিভুত। আমার বিশ্বাস ওরা আমাকেও ছাড়িয়ে যাবে একদিন। আজ আমার চেয়ে বেশি খুশী আর কেউ নয়। আমার ইভেন্টেই তারা নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। এটা বিকেএসপির জন্য গর্বের বিষয়।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ