Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন মন্ত্রী
রাখাইন সঙ্কট নিরসনে মিয়ানমারের জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী সাইমন হেনশ বলেছেন, ‘মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের বাড়িঘরে ফিরিয়ে নিতে হবে। এটাই সঙ্কটের সর্বোত্তম সমাধান।
এ ব্যাপারে নেপিদোর ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমার এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ’। গতকাল গুলশানের আমেরিকান ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সাইমন হেনশ বলেন, ‘রাখাইনের এই সমস্যা একটি জটিল ও মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। দুই মাসে ছয় লাখ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশ এই মানুষগুলোকে আশ্রয় দিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের নির্দেশনা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে আমরা এখানে এসেছি। সামগ্রিকভাবে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র’।
তিনি বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক মানুষের একসঙ্গে পালিয়ে আসা নিঃসন্দেহে একটি গুরুতর বিষয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা একাধিক বার মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে এসেছে। ঢাকায় আমরা বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনা করেছি। শরণার্থী শিবিরগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি বেদনাদায়ক। ছয় লাখ মানুষ ভয়ানক পরিস্থিতিতে রয়েছেন। মিয়ানমারকে অবশ্যই নিরাপদ ও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; যাতে রোহিঙ্গারা তাদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারে’।
সাইমন হেনশ বলেন, ‘বহু শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। কিন্তু এখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। শরণার্থীদের খাবার ও আশ্রয়ের সমস্যা রয়েছে। তবে রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ যেভাবে এগিয়ে এসেছে তা অভূতপূর্ব। সেখানে অনেক সংস্থা শরণার্থীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এতো বিপুল সংখ্যক মানুষকে আমরা বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছি না। এই জটিল পরিস্থিতিতে আমাদের আরও কাজ করে যেতে হবে’।
গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে ৭২তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে ২৬২ কোটি ৩০ লাখ টাকা (৩২ মিলিয়ন ডলার) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এদিনের সংবাদ সম্মেলনেও এর পুনরাবৃত্তি করেন সাইমন হেনশ। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সঙ্কট উত্তরণে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি দেখেন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। তার সঙ্গে থাকা প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রম ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি স্কট বাসবি, দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি টম ভাজদা, পূর্ব-এশিয়া ও প্যাসিফিক বিষয়ক ব্যুরোর অফিস ডিরেক্টর প্যাট্রিসিয়া মাহোনি।
গতকাল ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হেদার নোয়ার্ট এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বøুম বার্নিকাট উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সফর শেষে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি একইভাবে মিয়ানমার সফর করবে। দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে তারা রাখাইনে শর্তহীনভাবে ত্রাণ সংস্থা ও সংবাদকর্মীদের প্রবেশের অনুমতি চাইবে। এছাড়া বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের সসম্মানে ও নিরাপদে রাখাইনে প্রত্যাবাসন-প্রক্রিয়া নিয়ে মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন তারা। সূত্র : বিটি।



 

Show all comments
  • দিদার ৫ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:২৪ এএম says : 0
    মুখের কথায় এখন আর কোন কাজ হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Jahied Hasan ৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১১ পিএম says : 0
    আল্লাহ বাচাও এদের
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ