Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে দেরি করছে

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পাওয়ার আশায় বাংলাদেশ ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনে দেরি করছে বলে অভিযোগ করেছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চির এক মুখপাত্র বলেছেন, ১৯৯২ সালের যৌথ ঘোষণা অনুসারে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে প্রস্তুত রয়েছে মিয়ানমার। কিন্তু বাংলাদেশ এ শর্ত না মেনে দেরি করছে। এই দেরি করার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের দেখিয়ে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের কাছ থেকে সহযোগিতা আদায় করতে চায়।
সু চির মুখপাত্র জাউ তায় বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তারা (বাংলাদেশ) ৪০ কোটি ডলার (৪০০ মিলিয়ন) পেয়েছে। তারা এতো বেশি অর্থ পাওয়ায় আমরা আশঙ্কা করছি শরণার্থীদের (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হতে দেরি হবে।’
মুখপাত্রের এ বক্তব্য গতকাল মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গেøাবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের প্রথম পাতায় প্রকাশিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সু চির কার্যালয়ের মহাপরিচালক জাউ তায় বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা প্রস্তুত। কিন্তু অন্যপক্ষ (বাংলাদেশ) এখনও তা (শর্ত) মেনে নেয়নি। ফলে প্রত্যাবাসন শুরু হতে দেরি হচ্ছে।’ মুখপাত্র আরও বলেন, তারা আন্তর্জাতিক ভর্তুকি পাচ্ছে। আমরা আশঙ্কা করছি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তাদের হয়তো অন্যকোন বিবেচনা রয়েছে। সু চির সরকার দাবি করে আসছে, যেসব রোহিঙ্গা নিজেদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে প্রমাণ দিতে পারবে তাদেরকেই ফিরিয়ে নেওয়া হবে। মুখপাত্র দাবি করেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তালিকার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। তিনি বলেন, তৃতীয় বারের মতো আলোচনার পর আমরা প্রত্যাবাসনে যাব। আমরা উদ্বিগ্ন এ প্রক্রিয়ায় দেরি হতে পারে। যদি বেশি দেরি হয় তাহলে আশঙ্কা করছি ইচ্ছাকৃতভাবে এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করা হবে যে, আমরা তাদের ফিরিয়ে আনতে চাইছি না। মিয়ানমার পুলিশ প্রধান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে শরণার্থীদর তালিকা চেয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তা পাইনি। তারা (বাংলাদেশ) বলেছিল, তালিকা ইমেইলে পাঠাবে। এই তালিকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের কাছে পালিয়ে যাওয়া লোকের সঠিক সংখ্যা রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ। কোনওভাবেই এটি সম্ভব নয়।
২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অভিযানের মুখে প্রায় ৬ লাখ ৭ হাজারের রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ সময়ে ধারণা করা হয়, প্রায় ৩ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে এবং ২৮৪টি রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মিয়ানমার বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া ঠেকাতে সীমান্তে ল্যান্ড মাইন পুঁতে রেখেছে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের অভিযোগ এনেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো রাখাইনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে।
তবে মিয়ানমার সরকার ও দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে। তারা রোহিঙ্গাদের অবৈধ বাঙালি অভিবাসী বা ইসলামি জঙ্গি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। কয়েক দশক ধরেই রোহিঙ্গারা রাখাইনে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের নেপিদো সফরে উভয় দেশের সীমান্ত বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে ১৯৯২ সালের যৌথ ঘোষণায় পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপের ঘোষণা আসেনি।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে ১০ দফা প্রস্তাব মিয়ানমারকে দিয়েছেন তার কোনও জবাব দেয়নি নেপিদো। এসব প্রস্তাবনার মধ্যে ছিল কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন।
শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানান, উভয় দেশ যৌথ ওয়ার্কিং গঠন করতে পারেনি। ২০ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর মিয়ানমার সফরে তা গঠন করা হতে পারে। সূত্র : ওয়েবসাইট।



 

Show all comments
  • রাজ্জাক ২ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:৫৯ এএম says : 0
    এই ধরনের ফালতু অভিযোগের কোন মানে হয় না।
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmed ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:২৩ পিএম says : 0
    Myanmar kaje ek rokom ar mokhe arek rokom, tara nijederke sob cheye kolonkoymoy jati hisebe proman korte ar kicho baki rakhe nai.
    Total Reply(0) Reply
  • Shahadat Hossain ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১০ পিএম says : 0
    নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে রোহিঙ্গাদের বার্মায় ফেরত পাঠানো ঠিক হবেনা। কফি আনান কমিশন এর সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশকে আরো জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশ থেকে গিয়ে আবার বার্মায় গিয়ে শরণার্থী শিবিরে থাকতে হলে রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ বলতে কিছুই থাকবেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Murtuza Chowdhury ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১১ পিএম says : 0
    মিথ্যা বলারও একটা সীমা পরিসীমা থাকা উচিত। রাষ্ট্রীয় একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সু চি যে বক্তব্য দিচ্ছেন তা তার মুসলিম বিদ্বেষ এর আরেক বহিঃপ্রকাশ মাত্র। নিজেকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে সু চি বার বার তার কুৎসিত মনোভাবের প্রকাশ ঘটাচ্ছেন। বিশ্ববাসী তার এ নোংরা মনোভাব এর নিন্দাজানায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Jafar Iqbal ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১২ পিএম says : 0
    শরনার্থী নিতে হলে সবগুলোই নিতে হবে। ৯ লক্ষের মধ্যে নিবেন মাত্র ৭ হাজার!! আর বাকিগুলোকে কে জায়গা দিবে?? ফাইজলামি করার যায়গা পায়না মিয়ানমার!!
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Jasim Uddin ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১৪ পিএম says : 0
    Each and every time authorities of Myanmar prove that they are ill-thought. First they deny atrocities, now blame us for dilly-dallying on our part. Thousands of acre of forest land destroyed so far....
    Total Reply(0) Reply
  • Delwar Uddin ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১৪ পিএম says : 0
    খুনি ও বর্বর মিয়ানমার নিজেদের বাচার জন্য শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে ! এই লোক দেখানো অপকৌশল সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষ ও জনসেবায় নিয়োজিত সংগঠন গুলু ভালোই বুঝতে পারছে। লোভি জাতি কাকে বলে....
    Total Reply(0) Reply
  • Walid Ahmed ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১৫ পিএম says : 0
    মানুষ কতটা নির্লজ্জ হতে পারে, বার্মার এই মানুষগুলোর কথাবার্তা শুনলে বুঝা যায়। দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি মিথ্যার আশ্রয় নেয়া দেশ হচ্ছে বার্মার বর্বর সরকার। অং সান সূকি ও তার দুশোররা নির্লজ্জতার সব সীমা অতিক্রম করেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shamim Raton ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১৬ পিএম says : 0
    The Myanmar Govt. has crossed the limit day by day.we can't tolerate this condition. we want that Rohinga will be back on their land as soon as possible peacefully
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Mohammed ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১:১৭ পিএম says : 0
    The Bangladesh is determine that Rohinga Will retune with their dignity which kope anan comission saghas.ensure they will not return bake again.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ