Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোলায় গ্যাস ক্ষেত্রের মজুদ প্রমাণিত, নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার এখনো বলা ঠিক হবে না: বাপেক্সর এমডি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৭, ৭:০৩ পিএম

দ্বীপ জেলা ভোলায় আবিষ্কৃত ক্ষেত্রে গ্যাস মজুত থাকার প্রমাণ পেয়েছে রাষ্ট্রীয় তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি বাপেক্স। শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে নতুন গ্যাস ক্ষেত্রটিতে সর্বশেষ দুটি ভূতাত্ত্বিক জরিপের কাজ শেষে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুতের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে বাপেক্স। উচ্চ চাপে গ্যাস মজুত রয়েছে এখানে। বাপেক্সের আবিষ্কৃত নতুন ক্ষেত্র শাহবাজপুর ইস্ট-১ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়েছে। তবে এটা আনুষ্ঠানিক নয় বলে জানিয়েছেন বাপেক্সের এমডি প্রকৌশলী নওশাদ ইসলাম। তিনি বলেন, গ্যাসের চাপ জানতে আজ দিনের শুরুতে ড্রিল স্টিম টেস্ট চালায় বাপেক্স। ধারণা করা হচ্ছে নতুন ক্ষেত্রটি শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রেরই বর্ধিত অংশ। গত সপ্তাহে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার কথা জানায় সরকার। তবে তখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত প্রমাণ ছিল। তবে তা সঠিক নয় বলেন জানান এমডি।
বাপেক্সের এমডি প্রকৌশলী নওশাদ ইসলাম ইনকিলাবকে ১০টার দিকে ড্রিল স্টেম টেস্ট এর মাধ্যমে নতুন ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। তখন গ্যাসের চাপ ছিল প্রায় পাঁচ হাজার পিএসআই। এই গ্যাসক্ষেত্রের অবস্থান শাহবাজপুরের বর্তমান গ্যাসক্ষেত্র থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার পূর্ব দিকে, বোরহানউদ্দিন উপজেলার টগবি ইউনিয়নে। এই ক্ষেত্রে ৭২০ বিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ২৩ অক্টোবর নতুন এই গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, এটা আমাদের দেশের জন্য বেশ ভালো সুসংবাদ। এ প্রশ্নের জবাবে এমডি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সঠিক ভাবে বলতে পারে নাই। আসলে এটি নতুন গ্যাস ক্ষেত্র নয়, সেটাও বলা যাবে না। আবার নতুন ক্ষত্রে যে না সেটাও এখনে বলা যাবে না। তবে ধরনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে ভোলায় ২৬৬ লাইন কিলোমিটার দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপের মাধ্যমে শহাবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রটির সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু ভোলায় আরও গ্যাস আছে বলে সংশ্লিষ্ট ভূতত্ত্ববিদেরা ধারণা করতেন। নতুন কূপে ৩৫৫০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত খনন চালিয়েছেন তারা। এর মধ্যে ৩৪০০ থেকে ৩৪৭০ মিটারের মধ্যে তিনটি স্তরে গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেছে। ভোলার শাহবাজপুর ক্ষেত্র থেকে ২০০৯ সালের ১১ মে গ্যাস উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। সেখানে থাকা আগের চারটি কূপের মধ্যে তিনটি থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তোলা হচ্ছে। শাহবাজপুরে মোট ৩৫ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ব তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী, দেশের ২৬টি গ্যাস ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে পহেলা জানুয়ারি পর্যন্ত প্রমাণিত গ্যাসের মজুদ ছিল ১৩ দশমিক ৬০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস সঙ্কটের মধ্যে গত কয়েক বছরে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে উত্তোলন বাড়িয়ে দৈনিক ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নিতে পেরেছে সরকার। কিন্তু সারা দেশে দৈনিক চাহিদা রয়েছে তিন হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের। চাহিদা মেটানোর জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র থেকে অনুসন্ধান ও উত্তোলনের চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। স্থল, অগভীর ও গভীর সমুদ্রে দেশি-বিদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অনুসন্ধান চালাচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানির লক্ষ্যে একাধিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজও চলছে।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং বাসাবাড়ি মিলিয়ে প্রায় ৩০ লাখ গ্রাহককে গ্যাস দিতে হয়। উৎপাদিত গ্যাসের ৪২ শতাংশ যায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার করা হয় ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রে। আর ১৭ শতাংশ গ্যাস শিল্প কারখানায়, ১১ শতাংশ আবাসিক সংযোগে, ৭ শতাংশ সার কারখানায় এবং ৬ শতাংশ গ্যাস যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ভোলার শাহবাজপুর ক্ষেত্র থেকে ২০০৯ সালের ১১ মে গ্যাস উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। সেখানে থাকা চারটি কূপের মধ্যে তিনটি থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তোলা হচ্ছে। শাহবাজাপুরে ৩৫ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ