Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যে কারণে জিম্মি সবাই ইন্টার্ন চক্রের কাছে

বগুড়া শজিমেকে বর্বরতার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড়!

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৩ পিএম, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭

 বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক)এ’ রোগীর স্বজনদের মারপিটের ঘটনায় বগুড়ার সামাজিক ও সূশীল সমাজ এবং স্যোশাল মিডিয়া ফেসবুকে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সবাই বগুড়া শজিমেকের ইন্টার্ণদের নিয়ন্ত্রনে চরম ব্যর্থ পরিচালনা কর্তৃপক্ষের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়েছে । ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধার চিকিৎসায় চরম গাফিলতি ও তার ছেলে ও নাতিকে বর্বর নির্যাতনের ঘটনা আড়ালের চেষ্টার পরও ইনকিলাব সহ কিছু মিডিয়ায় ঘটনাটি প্রকাশের প্রেক্ষিতে মুখ রক্ষার জন্য শজিমেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার এই তদন্ত কমিটি গঠনের পর পরবর্তি ৩ কার্যদিবসের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী এ প্রসঙ্গে ইনকিলাবকে বলেন, গঠিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা.কামরুল আহসান এবং সদস্যরা হলেন যথাক্রমে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের রেজিষ্ট্রার ডা. মমতাজুল ইসলাম ও ওয়ার্ড মাষ্টার রফিকুল ইসলাম। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে শনিবার বিকেলে বগুড়ার জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় বগুড়া ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, উদিচী বগুড়া জেলা ইউনিট এই শজিমেকে ইন্টার্ন বর্বরতার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। প্রতিবাদ সভায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, কমিউনিষ্ট পার্টি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নেতৃবৃন্দ।
বক্তরা বলেন, বগুড়া শজিমেকে রোগীর স্বজনদের মারপিট ও নির্যাতন করা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিচার করতে হবে। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আর যেন কোন রোগীর স্বজন হয়রানি কিংবা নির্যাতনের শিকার না হয় তার কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। এর আগেও রোগীদের স্বজনকে মারপিট করার পর ওইসব ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিচার না হওয়ায় তারা বেপরোয়াও দূর্বিনিত হয়ে উঠেছে। তারা বলেন, যদি কর্তৃপক্ষ দোষিদের শাস্তিদানে ব্যর্থ হয় তাহলে কর্মসুচি দিয়ে ওই সব ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ঘেরাও করা হবে।
উদিচীর সভাপতি মাহমুদুস সোবহান মিন্নুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারন সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, সুজনের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক শাওন পাল, যুব ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক শাহনাজ কবীর খান প্প্পাু, প্রমুখ।
এদিকে বিভিন্ন সুত্রে খবর নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া শজিমেকের কর্তৃপক্ষীয় বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা সিনিয়র ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মোটেও অফিসিয়াল ডিউটি পালন করেণনা। শুধুমাত্র ডিউটি রেজিষ্ট্রারে সই করেই তারা বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে ও ক্লিনিকে ছুটে যান। ৫শ’ শয্যার এই হাসপাতালটি (সব সময় রোগী থাকে হাজারের উপরে) মুলত ইন্টার্নরাই পরিচালনা করে থাকে। এছাড়া এই হাসপাতালের কোটি কোটি টাকার টেন্ডারবাজীতেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ ঠাকা আয় করে থাকেন। এই অবৈধ কাজে তাদের সহায়তার প্রয়োজন হয় ইন্টার্ণদের। ফলে সব সময় সমঝে চলতে হয় এই ইন্টার্ণদের, আর ইন্টার্ণরা তাদের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সব দুর্নীতি ও অপকর্মের তথ্য জানে বিধায় নিজেরা সব সময় বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা করে থাকে। যখন যা ইচ্ছে তাই করে, কারণ তারা জানে, নিজেদের দুর্নীতি আড়ালে করতে চাইলে ইন্টার্নদের গায়ে হাত দেয়া যাবেনা, সব সময় থাকতে হয় ইন্টার্ন চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে !



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বগুড়া

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৮ ডিসেম্বর, ২০২০
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ