পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পদ্মা সেতুৃর রেল সংযোগ নিয়ে জটিলতা কাটছে। প্রকল্পের মেয়াদ শুরুর দেড় বছরের মাথায় পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য ঋণ অনুমোদন করেছে চীনা এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই এ সংক্রান্ত ঋণচুক্তির খসড়া সরকারের কাছে পাঠাবে এক্সিম ব্যাংক। সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) পাঠানো ওই ঋণচুক্তির খসড়া যাচাই-বাছাই, সংযোজন, বিয়োজন ও পরিমার্জন শেষে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রেলপথে ঢাকা থেকে খুলনার দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার। তখন ট্রেনযোগে ঢাকা থেকে খুলনা যেতে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রেলকে জনসাধারণের বাহন করতে চান। এই লক্ষ্যেই এই মেগা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। পদ্মা সেতুতে রেলপথ চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাতায়াতের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হবে। এর ফলে পরিবহন খাত এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। আঞ্চলিক সংযোগসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এ রেলপথ।
সরকারের মেগা প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি সম্পন্ন হয়েছে। তবে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়া তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। অর্থায়ন জটিলতায় প্রকল্পটির মূল কাজ শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ভূমি অধিগ্রহণের প্রথম ধাপে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরের একাংশে ভূমি অধিগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে অধিগ্রহণ করা জমি বুঝে পেয়েছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয় ধাপের কাজ চলছে ফরিদপুরের বাকি অংশ, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোরে। এ চার জেলার সব কটিতেই অধিগ্রহণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে অধিগ্রহণ পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়েছে শুধু যশোরের। দ্বিতীয় ধাপে এর বাইরে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ আর এগোয়নি।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় চারটি সেকশনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত নতুন ব্রডগেজ লাইন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত কাজ শেষ করে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার প্রথম দিন থেকেই রেলপথও চালুর পরিকল্পনা করেছে সরকার। নতুন রেলপথ হবে ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া হয়ে মাওয়া-ভাঙ্গা-নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত। প্রকল্পটি ২০২২ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে চার হাজার ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। তবে চীন অর্থ ছাড় না করায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থেকে বাদ দেওয়ার অনুরোধ করে গত বছরের ২২ মার্চ পরিকল্পনা কমিশনে চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়। চীনের প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী গত অর্থবছরে এই প্রকল্পে দুই হাজার ৭৪২ কোটি টাকা ঋণের অর্থ পাওয়ার কথা ছিল। পাশাপাশি রাজস্ব খাত থেকেও দুই হাজার ৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। চীনের ঋণের অর্থ না পাওয়ার কারণে সরকারের অংশও পুরোটা ব্যয় করা যাচ্ছে না। কারণ রাজস্ব খাতের বরাদ্দের ৬৭৩ কোটি টাকা ঋণের টাকার পরিপূরক হিসেবে ধরা হয়েছিল। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মাত্র এক হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা খরচের এখতিয়ার আছে। এর সবই জমি অধিগ্রহণ, বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক কাজে খরচের জন্য। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে এই প্রকল্পে আরও সাত হাজার ৯০৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ, ৪৩ দশমিক ২২ কিলোমিটার লুপ ও সাইডিং, তিন কিলোমিটার ডাবলসহ মোট ২১৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেল ট্র্যাক নির্মাণ, ২৩ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, এক দশমিক ৯৮ কিলোমিটার র্যাম্পস, ৬৬টি বড় সেতু, ২৪৪টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, একটি হাইওয়ে ওভারপাস, ২৯টি লেভেল ক্রসিং, ৪০টি আন্ডারপাস, ১৪টি নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ, ছয়টি বিদ্যমান স্টেশনের উন্নয়ন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ, ২০টি স্টেশনে টেলিযোগাযোগসহ কম্পিউটার ভিত্তিক রেলওয়ে ইন্টারলক সিস্টেম সিগন্যালিং ব্যবস্থা, ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী গাড়ি সংগ্রহ, এক হাজার ৭০০ একর ভূমি অধিগ্রহণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম করা হবে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি অনুমোদন হয় ২০১৬ সালের ৩ মে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। শুরুতে এ প্রকল্পে শতভাগ অর্থায়নে রাজি ছিল চীনের এক্সিম ব্যাংক। পরবর্তীতে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা। ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা ঋণ দিতে সম্মত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে চলতি বছরের ৮ আগস্ট চতুর্থ দফায় সংশোধিত ঋণ প্রস্তাব পাঠায় রেলওয়ে। এতে চীনের এক্সিম ব্যাংকের কাছে মোট ২৬৬ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার ঋণ চাওয়া হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর চীনের এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।