পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইলিশ লিবেন গো ইলিশ। পদ্মার চকচকে তাজা ইলিশ। এভাবে হাঁক ডাক দিয়ে রাজশাহীর মহল্লায় মহল্লায় ফেরী করে বিক্রি হচ্ছে পদ্মার ইলিশ। মাছ ধরা নিষিদ্ধের মেয়াদ শেষ হবার পর থেকে মরা পদ্মায় ইলিশ ধরা উৎসব শুরু হয়েছে। আর হতবাক কান্ড জাল ফেললেই মিলছে ইলিশ। বহু বছর পর এমনিভাবে জালে ইলিশ পাওয়া খুশী জেলে ও ভোক্তারা। অন্য মাছের চেয়ে জেলেদের এখন নজর বেশী ইলিশ ধরার প্রতি। কারণ মা ইলিশ ডিম পাড়ার পর ফের ফিরে যাবে ভাটিতে। আর বড়জোর দিন দশেক এমন ইলিশ মিলবে পদ্মায়। তাই শুরু হয়েছে ইলিশ ধরার উৎসব। বড় ছোট ডিম ভর্তি কোন ইলিশই বাদ যাচ্ছেনা। বড় ও মাঝারী আকারের ইলিশ দেখে সচেতন মহল খুশী হলেও কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না একেবারে ছোট ছোট ইলিশ ধরার ব্যাপারটিকে। বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে পোনা ইলিশ। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোন মাথা ব্যাথা নেই। এখনো ডিম ভরা ইলিশ পাওয়া নিয়ে এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন সময় নির্দ্ধারনের ব্যাপারটিতে আরেকটু হিসাব নিকেশ করা দরকার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারী বিভাগের অধ্যাপক এবিএম মহসীনের অভিমত সরকারের নিষেধাজ্ঞাটি ইলিশের ডিম ছাড়ার সম্ভাব্য সময়। ইলিশ তো আর দিন তারিখ দেখে ডিম ছাড়েনা। তাই এখনো ইলিশের পেটভরা ডিম পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য নিষেধাজ্ঞার সময় আরো বাড়ানো হলে ভাল সুফল পাওয়া যাবে। আর এ সময় চাল দিয়ে জেলেদের সহায়তা নয় বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। নদীতে নজরদারী আরো বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল যানবাহন প্রয়োজন। তাছাড়া ডিম ছাড়ার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। বাজারে ব্যাপক ইলিশের আমদানী সম্পর্কে মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন নিষেধাজ্ঞার সময়ও প্রচুর ইলিশ ধরা হয়েছে। যেগুলো গোপনে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। আর এখনতো জালে জালে মিলছে ইলিশ। আবার বরিশাল থেকেও আসছে। সব মিলিয়ে মাছের রাজা ইলিশ এখন বাজারে দাপট দেখাচ্ছে। অন্য মাছের চাহিদা ও দাম দুটো কমেছে। তবে এ অবস্থা ক্ষনিকের জন্য। বাজারে এখন আকার ভেদে ইলিশ মিলছে চার হতে তিনশো টাকা কেজির মধ্যে। আর পোনা ইলিশ একশো কুড়ি টাকায়। কমদামে ইলিশ পেয়ে সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে কেনা বেচা চলছে। অনেকে আগামী বৈশাখের জন্য দু’চারটি করে জমিয়ে রাখছেন। বিত্তবানদের ডিপ ফ্রিজ ভরে গেছে। বসে নেই মধ্যবিত্তরাও। আবার এমন ঘটনা ঘটছে। যাদের ফ্রিজ নেই। তারা পড়শী বিত্তবানদের বাড়িতে দু’একটা ইলিশ জমা রাখছেন বৈশাখ টার্গেট করে। এবার যে বৈশাখে পান্তা ইলিশের কমতি হবেনা এ অবস্থা এখনি বলে দেয়া যায়। যদিও বাংলা নববর্ষের সাথে পান্তা ইলিশের কোন সম্পর্ক নেই। বহু বছর পর পদ্মায় এমনিভাবে ইলিশ পাওয়া যাওয়ায় প্রবীনরা স্মৃতি হাতড়ে ফিরছেন। তারা বলছেন ফারাক্কা চালুর আগে এমনিতো ছিল পদ্মার ইলিশ। ফারাক্কা বাধ দিয়ে পানি শোষনের ফলে পদ্মাও মরে গেল আবার ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছও হারিয়ে গেল। শুশুক ঘড়িয়ালও আর দেখা যায়না। এক সময়ের ্প্রমত্ত পদ্মা এখন বালি চরের নীচে চাপা পড়ে আর্তনাদ করছে। প্রবীনরা আগের পদ্মার ইলিশের স্বাদের সাথে বর্তমানে পাওয়া ইলিশের স্বাদের মধ্যে বেশ ফারাক দেখছেন। বলছেন আগে এক বাড়িতে ইলিশ রান্না হলে আশেপাশ্বের মানুষ গন্ধে জানতো ইলিশ রান্না হচ্ছে। এখন তেমন গন্ধ আর স্বাদ নেই। তাছাড়া এ অঞ্চলের মানুষতো চট্রগ্রাম আর বরিশালের ইলিশের স্বাদ নিচ্ছে। ফলে ভুলে গেছে সেই পদ্মার ইলিশের স্বাদ। এবার ইলিশ ডিম পাড়তে উজান পাড়ি দিতে দিতে বাংলাদেশের পদ্মা হয়ে পাষান ফারাক্কার কটি খোলা গেট পেরিয়ে চলে গেছে ওপারের গঙ্গায়। সেখানেও চলছে ইলিশ ধরার ধুম। বহুদিন পর গঙ্গায় বড় বড় ইলিশ পেয়ে বেজায় খুশী ওপারের জেলে ও ভোজন রসিকরা। ওখানে কম দামে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইলিশ পাওয়ার জন্য হা পিত্যেশকারীরা সস্তায় সহজে ইলিশ পাচ্ছেন। বছরজুৃড়ে ইলিশ না পাওয়াকে দুষছেন ফারাক্কা ব্যারেজকে। সারা বছর ব্যারেজের সবকটি পাল্লা খুলে রাখলে পদ্মায় টুইটুম্বর পানি থাকবে। আর মিলবে ইলিশসহ নানা ধরনের মাছ। ফারাক্কা ব্যারেজ বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জীবন যেমন দুর্বিষহ করেছে। তেমনি ভারতের মালদা মুর্শিদাবাদকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিহার রাজ্যে ফি বছর বন্যায় ডুবাচ্ছে। এক বাধের কারনে এপার ওপারের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। বিষয়টা ভারতের পানি জল্লাদদের ভেবে দেখার সময় এসেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।