Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের সুর বদলেছে -ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিয়ে সৃষ্ট সংকট সমাধানের বিষয়টির অগ্রগতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার প্রাথমিকভাবে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছে। বিশ্বজনমতও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আরও জোরদার হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বনানী সেতুভবনে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের এসব কথা বলেন।
ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, হাইকমিশনারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও কথা হয়েছে। ভারত রোহিঙ্গা বিষয়ে তাদের সুর আগের চেয়ে অনেক জোরদার করেছে। আমরা মনে করি, আগে তারা সহযোগিতার কথায় ছিলো। এবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (সুষমা স্বরাজ) ঢাকা সফরে এসে প্রকাশ্যে বলে গেছেন, রোহিঙ্গা নাগরিকদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতেই হবে। ভারতও মিয়ানমারের ওপর চাপ দেয়া শুরু করেছে।
আমেরিকা মিয়ানমারের ওপর আরও কঠিন অবরোধ আরোপের কথা ভাবছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এভাবে চাপ অব্যাহত থাকলে অবশ্যই মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় মিয়ানমারের ওপর আরও কঠিন চাপ অব্যাহত রাখবে। প্রয়োজনে অবরোধ আরোপ করা যেতে পারে। যেন তারা বাধ্য হয়ে নিজেদের নাগরিকদের বোঝা বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নভেম্বর মাসের শেষ দিকে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবে। স¤প্রতি বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া ভারতের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের আমন্ত্রণে এ সফরে যাবে প্রতিনিধি দলটি।
সাক্ষাতে আলাপের বিষয়ে হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ যেভাবে সহযোগিতা করছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টার প্রতি ভারতের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ভারত বিশ্বাস করে, রাখাইনে শুধু সহিংসতা বন্ধ করলেই চলবে না। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আর রোহিঙ্গা সংকটের ইতি টানার জন্য কফি আনান কমিশন সুপারিশ হতে পারে সঠিক সমাধান।
এদিকে, গতকাল দুপুরে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের ৪১তম সভাশেষে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা মহানগরীতে যাত্রী পরিবহণে সিটিং সার্ভিসের বিষয়ে গঠিত কমিটি আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনের সুপারিশমালা পর্যালোচনা করে পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে সিটিং সার্ভিসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এছাড়া সিএনজি চালিত অটোরিকশার ইকোনমিক লাইফ বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। এ মতামতের ভিত্তিতে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
মন্ত্রী বলেন, সড়ক-মহাসড়কের স্থায়িত্ব রক্ষায় যানবাহনের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়ে স্বল্পসময়ে বাস্তবভিত্তিক সুপারিশমালা প্রণয়নে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবকে প্রধান করে একটি ঊচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সেতু বিভাগ, সওজ, বিআরটিএ, পুলিশ বিভাগ, হাইওয়ে পুলিশ, মালিক-শ্রমিক, প্রাইম মুভার এসোসিয়েশনসহ সড়ক-মহাসড়ক ব্যবহারকারী অংশীজনদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে সভা আহŸান করে সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
কাদের বলেন, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের এঙ্গেল, হুক এবং অবৈধ বাম্পার অপসারণকাজ এগিয়ে চলছে। দ্রæত এ কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দিয়েছে উপদেষ্টা কমিটি। তিনি আরও জানান, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রেজিস্ট্রেশনবিহীন নসিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইকসহ অনুরূপ যানবাহন চলাচল বন্ধে ইতোপূর্বের গৃহিত সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে স্বল্পদূরত্বে বাস চলাচলে পরিবহন মালিক সমিতি, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিআরটিসিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া জেলা পর্যায়ে যাত্রীদের চাহিদা ও রুট পর্যালোচনা করে আঞ্চলিক পরিবহণ কমিটি প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এসময় নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহাজান খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জুয়েনা আজিজ, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান, ডিআইজি হাইওয়ে মো. আতিকুল ইসলামসহ সড়ক পরিবহণ উপদেষ্টা কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • apu ২৬ অক্টোবর, ২০১৭, ৮:০৯ এএম says : 0
    মোদী যেখানে নিজে যেয়ে বার্মায় সাপোর্ট দিয়ে আসে, তাহলে মোদী কি বন্ধু? ভারত বার্মার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দেখাক, যেমন যুক্তরাষ্ট্র নিচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • Murtuza Chowdhury ২৬ অক্টোবর, ২০১৭, ১:১৩ পিএম says : 0
    আগে রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা বন্ধ করতে হবে ভারতকে। তাহলে বুঝবো যে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Shofiul Alam ২৬ অক্টোবর, ২০১৭, ১:১৪ পিএম says : 0
    What a joke! !!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ