পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিল সাংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনা শেষ করে দেশ গড়ার কারিগর হবে তারা। কিন্তু প্রেমের বন্ধন যেন জীবনকে হতাশায় নিমজ্জিত করে। পরিণামে বেঁচে নেয় আত্মহননের পথ। যে পথে চলে গেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার মেধাবী শিক্ষার্থী। যা তাদের মায়ের কোলকে করে দিয়েছে শূন্য। এ দেশ হারিয়ে ফেলছে মেধাবি সম্পদগুলোকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন এ আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিচ্ছে? বিশিষ্ট নৃবিজ্ঞানী ও জাবির ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় কিছু শিক্ষার্থী অধিক আবেগপ্রবণ হয়। যার কারণে তারা প্রিয়জনের সাথে হঠাৎ অভিমান করে এ পথ বেঁচে নেয়। এছাড়াও এসময় শিক্ষার্থীরা ব্যথিত, দুঃখিত হয়ে তারা প্রত্যাশা করে মনোযোগ আকর্ষণের। যখন সে কারো মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে না, তার মনের লকুাইতো কথাগুলো বলতে পারে না। তখনই সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। নির্জন তাকে পছন্দ করতে থকে। এসময় যদি তাকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ না করা হয় বা সঙ্গ দেওয়া না হয় (অর্থাৎ মনের কথা যদি খুলে বলতে না পারে) তবে সে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়।’
অনুসন্ধানে দেখা যায় গত আট বছরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে। সর্বশেষ গত ১৪ তারিখ বৃহস্পতিবার রাতে একই কারণে মো. আদনান নামের এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ৪১তম আবর্তন ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
এর আগে ২০১১ সালের ২৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৫তম ব্যাচের ছাত্রী মারজিয়া জান্নাত সুমি আত্মহত্যা করে। তিনি তার বিভাগের রেজাল্টে ‘প্রথম স্থান’ অধিকারী শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া ২০১০ সালের ২৭ জুলাই সোহানুল হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৩৩তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। একই বছরের ১২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের ফারাহ নাজ রুহি নামের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। তার এ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দানের অভিযোগে তার বয়ফ্রেন্ডকে কল্যাণপুর থেকে আটক করে পুলিশ।
এ জাতিয় আত্মহত্যা থেকে উত্তরণের জন্য কি করণীয় জানতে চাইলে জাবির ছাত্র-কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের মনোবিজ্ঞানী শুভাশীষ কুমার চ্যাটার্জী বলেন, ‘পিতা-মাতাকে সন্তানের চলাফেরা সম্পর্কে বেশি বেশি খোঁজ-খবর নিতে হবে। যদি কখন তার কোন আচরণের পরিবর্তন দেখা যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তার মনের কথাগুলো শোনার চেষ্টা করা। আর নয় কোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও নৃবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘অভিভাবকদের শাসনের সাথে সাথে সোহাগের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, হলের প্রভোস্ট, ওর্ডেন, সিক বয় ও সংশ্লিষ্ট সকলকে সবসময় শিক্ষার্থীদের প্রতি আরো বেশি ছাত্রবান্ধব হয়ে খোঁজ-খবর নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে হতাশাগ্রস্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম। কারণ যারা ভর্তি হয় তারা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। তারা সব কিছু বুঝে। শিক্ষার্থীদের আমরা স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি মানসিক সেবা দেয়ার জন্য আমাদের মনোবিজ্ঞানী আছে। তারা যদি মনে করে তাদের মানসিকভাবে অস্বস্তি বোধ করছে, তাহলে মনোবিজ্ঞানীদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।