Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভিনব পন্থায় ক্যাটামিন পাচারকালে গ্রেফতার ৩

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশানের তরল থেকে মাদক হিসেবে ব্যবহৃত ক্যাটামিন সংগ্রহ করে অভিনব পন্থায় বিদেশে পাচারকালে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।
গত সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর পল্লবী এলাকার একটি বাড়ি থেকে ওই চক্রের মূল হোতা মীর মঞ্জুর মোর্শেদ সানীসহ মাহমুদুল হাসান চয়ন ও হাবিবুল্লাহ খানকে আটক করেছে র‌্যাব-১ এর একটি অভিযানিক দল। এ সময় আটকদের কাছ থেকে ১.৪৫০ লিটার তরল ‘ক্যাটামিন’ (অপারেশন থিয়েটারে ব্যথানাশক হিসেবে ব্যবহৃত মাদক) ও ৩.৪০০ কেজি ক্যাটামিনযুক্ত ৩৪টি সাদা তোয়ালে জব্দ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, মাদক কোকেনের অল্টারনেটিভ হিসেবে ক্যাটামিন ব্যবহৃত হয়। ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দামী মাদক হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর বাংলাদেশে শুধুমাত্র অপারেশন থিয়েটারে অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশান ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সেই অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশানের ১৪৫টি বোতল এবং ১৮০টি খালি বোতল আটকদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে। ১০ মি.লি ওষুধসহ বোতলের লেবেলে লেখা থেকে জানা যায়, প্রতি মিলি লিটারে ৫০ মি.গ্রা ক্যাটামিন রয়েছে। সেই হিসেবে প্রতি বোতলে ৫০০ মি.গ্রা ক্যাটামিন রয়েছে। এই চক্রটি অবৈধভাবে বাজার থেকে এসব ইনজেকশানের বোতলগুলো সংগ্রহ করতো। তারপর সেসব লিকুইড একটি পাত্রে জাল দিতো। তারপর সেই তরলটি সাদা তোয়ালেতে স্প্রে করে শুকানোর পর পলিথিন দিয়ে প্যাকেটজাত করে তোয়ালেগুলো কুরিয়ারের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করতো। প্রতি তোয়ালেতে ১০০ গ্রাম কেটামিন থাকতো এবং প্রতি তোয়ালের বাজার মূল্য ২০-৩০ পাউন্ড। ওই সব তোয়ালে থেকে ক্যাটামিন লিক্যুইড ফর্মে অথবা পাউডার সংগ্রহ করা সম্ভব বলেও তিনি জানান। মুফতি মাহমুদ খান আরো বলেন, আটক সানী লন্ডনে পড়াশোনা শেষ করে ৫-৬ মাস আগে দেশে ফিরে আসে। চয়ন এলএলবি সম্পন্ন করেছে এবং হাবিবুল্লাহ এমবিএ সম্পন্ন করেছে। তাদের একজন বাজার থেকে অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশান সরবরাহ করতো, একজন প্রক্রিয়াজাত করতো ও অন্যজন কুরিয়ারের মাধ্যমে তা বিদেশে পাচার করতো। তারা এ পর্যন্ত চারটি চালান স্পেনে পাঠিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আরেকটি চালান কুরিয়ার সার্ভিস থেকে আটক করা হয়। তিনি আরও বলেন, সানীর বড়ভাই মাহাদী মঞ্জুর মান্না প্রায় ১৫ বছর ধরে স্পেনে বসবাস করছে। সে স্পেনের এক নাগরিক আরামডো গঞ্জালিওসহ দুই দফা বাংলাদেশে এসে ক্যাটামিন প্রক্রিয়াজাত করার পদ্ধতিটা তাদের শিখিয়ে যান। কুরিয়ার সার্ভিসের কেউ এ চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যাটামিনগুলো তোয়ালের এক পাশে স্প্রে করা অবস্থায় থাকে। পূর্ব কোনো অভিজ্ঞতা এবং ল্যাব টেস্ট ছাড়া তোয়ালে ধরেও ক্যাটামিনের উপস্থিতি বুঝার উপায় নেই। প্রাথমিকভাবে কুরিয়ারের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এই চক্রের বিদেশে অবস্থানরত সদস্যদের বিষয়ে এবং তারা কিভাবে অ্যানেস্থেসিয়া সংগ্রহ করছে এসব বিষয়ে যথাযথ কতৃপক্ষকে জানানো হবে। আটকদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলেও তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ