Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ন্যায়বিচারের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ান -রানি রানিয়া

রোহিঙ্গা নিধন করছে মিয়ানমার

কক্সবাজার ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ বলেছেন, মুসলিম রোহিঙ্গা জাতিকে নিধনের জন্য পরিকল্পিতভাবে এই নির্যাতন, হত্যা ও অত্যাচার চালানো হয়েছে। তাদের জন্মভূমি ও দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। বিশ্বের ইতিহাসে ওই জাতি নিধন বর্বরতম। গতকাল সোমবার দুপুরে কক্সবাজারে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বিশ্ববাসীকে রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচারের পক্ষে থাকার আহ্বান জানান।
জর্ডানের রানি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী জাস্টিস অব ল’ প্রতিষ্ঠা হলেও মিয়ানমার কোনো কিছুতেই তা মানছে না। মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন বন্ধ ও তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাধ্য করতে এখনই ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে রানি রানিয়া বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও এ দেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের প্রতি যে মানবিকতা দেখিয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে উদাহরণ হয়ে থাকবে।
ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইসিআর) পর্ষদ সদস্য ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাগুলোর একজন দূত হিসেবে রোহিঙ্গাদের দেখতে গতকাল বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজারে যান জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ। এর আগে বিশেষ বিমানে তিনি ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারে পৌঁছান। সেখান থেকে গাড়িবহরে করে কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যান। এ সময় থেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন রানি। রাহিঙ্গারা জর্ডানের রানিকে তাদের ওপর চালানো মিয়ানমারের নির্মম অত্যাচারের বিবরণ দেন। তিনি তার অভিজ্ঞতার কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরবেন যাতে দুর্দশায় থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি সহায়তার পরিমাণ দ্রæত বাড়ানো সম্ভব হয়।
গত অগাস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর পৌনে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
রানি বলেন, “এখানে ৯৫ শতাংশ রোহিঙ্গা মৌলিক চাহিদার সংকটে রয়েছে। মিয়ানমারে যে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড চলছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন।” জেনেভায় সোমবার অনুষ্ঠেয় বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে জাতিসংঘের যেসব সংস্থা রোহিঙ্গাদের সাহায্যে কাজ করছে তাদের কয়েকটি হাসপাতাল ও স্কুল পরিদর্শন করেন জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ। দুপুর ১২টায় পরিদর্শন শেষে ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, কক্সবাজার-৩ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জর্ডানের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনার পর কক্সবাজারে এটি কোনো দেশের ফার্স্ট লেডির দ্বিতীয় সফর। এ আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিল এরদোয়ান।



 

Show all comments
  • শরীফ জাহিদ ২৪ অক্টোবর, ২০১৭, ৪:১৬ এএম says : 0
    জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহকে মোবারকবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১১:৪৪ এএম says : 0
    জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ এখানে যা বলেছেন সেটাই প্রকৃত সত্য। বুদ্ধিষ্টরা যুগ যুগ ধরে বলে আসছে অহিংসাই পরম ধর্ম। কিন্তু মায়ানমার বুদ্ধিষ্টদের রাষ্ট্র এদের ধর্মের বানী অহিংসাই পরম ধর্ম কিন্তু মুসলমান নিধনে নেমে এরা ধর্মকে ধাক্কা দিয়ে সড়িয়ে হিংসাকে বাস্তবায়িত করার জন্য সন্ত্রাসী কায়দায় মুসলমান নিধন করে যাচ্ছে। এখন আর তাদের ধর্মের বানী অহিংসাই পরম ধর্ম পালিয়ে সেটা এখন স্থান পেয়েছে ভারত, চীন, রাশিয়া ও বাংলাদেশে। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অহিংসাই পরম ধর্ম প্রমান করে বিশ্ব দরবারে সম্মান অর্জন করেছেন। এখন জর্ডানের রানিয়া এখানে যা বলেছেন এটা যদি তিনি ভুলে যাবেন না তাই আমি বলতে পারি বাংলাদেশের জন্য এটা হবে একটা বুমেরাং। আমি দেখেছি তুরষ্কের ফাস্ট লেডী বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের দেখে গিয়ে তার দেশের কূটনীতিবিদদেরকে সারা বিশ্বকে সজাগ করার জন্য কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন এটাই মহা সত্য। এতে করে বিশ্ব বাসীর দানের হাত বৃদ্ধি পেয়েছে তাই সাহায্যের (ডলারের) পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন রানি রানিয়া প্রকাশ্যে বলে গেছেন তিনি রোহিঙ্গা দের বিশ্ব দরবার থেকে সাহায্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করার জন্য তিনি চেষ্টা করবেন। আমি নিশ্চিত বলতে পারি তিনি যেসব কথা বলেছেন এসব বাস্তবায়িত হবেই হবে। আমি এযাবৎ দেখে এসেছি ফাষ্ট লেডীরা যেসব কথা বলেন সেটা বাস্তবায়িত হয়। আমরা তুষ্কের কূটনীতিবিদদের সাহয্য পাচ্ছি এখন এর সাথে যোগ হতে যাচ্ছে জর্ডান তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে আমার এখন দুইটা দেশের কূটনীতিবিদদের সাহায্য পাব এই রোহিঙ্গার কল্যাণে। ইসলামে আছে এক টাকা দান কর ৭০ টাকা পাবে; এখন এখানে এটাই প্রমানিত হচ্ছে তাইনা??? আমাদের নেত্রী হাসিনা ১৯৭১ সালে দেখেছেন কিভাবে আল্লাহ্‌ এক কোটি বাঙ্গালী শরণার্থীদের পাঁশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে বিজয়ী করেছিল সর্ব ক্ষেত্রে। তাই তিনি আল্লাহ্‌র উপর বিশ্বাস রেখে সাহসী ভূমাকা রেখে রোহিঙ্গাদের পাঁশে দাঁড়িয়েছেন। এখান আল্লাহ্‌ তার বিশ্বাসের মর্যাদা দিচ্ছেন এটাই আমি বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি। আল্লাহ্‌ রোহিঙ্গাদের পাঁশে আছেন এবং থাকবেন এটাই সত্য। আর তাই আমাদের নেত্রী হাসিনা আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে দেশের কথা চিন্তা না করে প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছেন রোহিঙ্গাদের মঙ্গলের জন্যই। আল্লাহ্‌ নেত্রী হাসিনাকে দীর্ঘায়ু দান করুন সাথে সাথে সুস্বাস্থ্য দান করুন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ