Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের নির্মম শিকার

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামে সেমিনারে ড. আইনুন নিশাত
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী নয় এর নির্মম শিকার উল্লেখ করে প্রফেসর ইমেরিটাস ও জলবাযু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেছেন, কিভাবে ক্ষতিপূরণ নিতে হবে তা আমরা জানি না বলে নিতে পারছি না।
অথচ ক্ষতিপূরণ নেয়ার ক্ষেত্রে ভারত আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। আমাদের ক্ষতিপূরণ নেয়ার সুযোগ আছে। বিশ্ব স্থাপত্য দিবস উপলক্ষে শনিবার নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (বাস্থই) আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে। দেখা দেবে খাদ্য সংকট। একশ বছর পরে মালদ্বীপসহ অনেক দেশ পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানিবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। মানুষ বাস্তুহারা হচ্ছে। গ্রীন হাউস গ্যাস উৎপাদনসহ বিভিন্ন কারনে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত সেসব দেশকেই একশ বিলিয়ন ডলার দেয়া হবে। কিন্তু এ টাকা নেয়ার জন্য যোগ্যতা লাগবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির বৈশ্বিক লেবেলে উপস্থাপনে যদি আমরা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারি তাহলে বছরে সাড়ে ১২ বিলিয়ন ডলার অনুদান পেতে পারি।
বাস্থই চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সাবেক আহŸায়ক স্থপতি জেরিনা হোসাইন বলেন, পতেঙ্গা বেড়িবাঁধে বনায়ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখানে এখন হচ্ছে আউটার রিং রোড। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ একটি জায়গায় হচ্ছে আউটার রিং রোড। ওইখানে টানেল হওয়ার কথাও এসেছে। তাহলেও কোন বেসিসে এসব হচ্ছে। কোথায় স্বচ্ছতা বুঝতে পারছি না। নীতি নির্ধারকদের ভাষাটা এ রকম যে, আমরা যেটা বুঝি সেটা। কারো সাথে কথা বলার দরকার নেই। আগ্রাবাদের মতো একটি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকায় অবস্থিত বাসা বাড়িগুলোর নীচতলা ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে পানিবদ্ধতার কারণে। তাহলে এগুলো দেখার দায়িত্ব কার ছিল ? শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং সলিউশন দিয়ে আমরা ড্রেনেজ সমস্যার সমাধান করতে পারব না। এটার ইকোলজিক্যাল সলিউশনও হতে হবে। তিনি বলেন, বিল্ডিং করাটাকে আমরা উন্নয়ন বলছি। ইকোলজির কথা ভুলে গেছি।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বাংলাদেশ ‘মেগাশপিং সেন্টার’ আখ্যা দিয়ে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে পরিত্যক্ত হচ্ছে নগরীর অনেক জায়গা। বাঁশখালী থেকে মিরসরাই পর্যন্ত কোস্টাল বেল্টটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বেড়িবাঁধ ভাঙছে। লবণাক্ত পানি ঢুকছে আশপাশের এলাকায়। মানুষের পক্ষে সেখানে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। লোকজন শহরমুখী হচ্ছে।
বাস্থই’র জেনারেল সেক্রেটারি স্থপতি কাজী এম আরিফ বলেন, পরিকল্পিত উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য সরকারের কোনো সংস্থায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্থপতিদেরকে ডাকা হয় না। অথচ জাতীয় ও আন্তজার্তিকভাবে পরিমার্জিত উন্নয়নে স্থপতিদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
বাস্থই বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট স্থপতি রবিউল হোসেইন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদেরকে বৈশি^কভাবে চিন্তা করতে হবে। একইসাথে বৈশি^কভাবে কাজও করে যেতে হবে। না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাস্থই প্রেসিডেন্ট স্থপতি কাজী গোলাম নাসির। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন বাস্থই চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান স্থপতি নাজমুল লাতিফ। অনুষ্ঠানে সিডিএ, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার স্থপতি এবং পরিকল্পনাবিদরা উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জলবায়ু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ