পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিম্নচাপের প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। কোথাও থেমে থেমে, কোথাও টানা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে। এই বৃষ্টি আজ রোববার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক গতকাল বিকালে জানান, শনিবার সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন সড়ক। সবমিলিয়ে রাজাধানীসহ সারাদেশের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও বড় ধরনের পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারনে গত শুক্রবার রাত থেকেই পাটুরিয়া, মাওয়াসহ বিভিন্ন নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীর অভাবে দুরপাল্লার বাস ছেড়েছে তুলনামূলক কম। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়কে যানজটের কারনে শত শত গাড়ি আটকে পরায় উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ঢাকায় অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রাস্তায় কোমড় পানি জমেছে। এতে করে যাত্রীর তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা ছিল কম। পানি দিয়ে চলতে গিয়ে বহু গাড়ি বিকল হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, বৃষ্টিতে আবার তলিয়ে গেছে ঢাকার ডিএনডি বাঁধ এলাকা। চার মাস পর আবার নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ডিএনডি এলাকার প্রায় ২০ লাখ মানুষ।
দুদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানী জুড়ে। গত শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির ফোটা অবিরাম ঝরেই যাচ্ছে। অসময়ে বিরামহীন এ বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রামপুরা, খিলগাঁও, রামপুরা, বনশ্রী, উত্তর বাড্ডা, দক্ষিণ বাড্ডা, খিলক্ষেত, উত্তরখান, দক্ষিণখান, তুরাগ, কল্যাণপুর, আদাবর, রায়েরবাজার, মালিবাগ, শান্তিনগর, রাজারবাগ, মৌচাক, ফকিরাপুল, কমলাপুর, টিটিপাড়া, বাসাবো, পুরান ঢাকা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ১১, কাজীপাড়া, সেনপাড়া, ধানমন্ডি, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, আজিমপুর, যাত্রাবাড়ী, দনিয়া, কদমতলী, জুরাইন, আলমবাগ, শ্যামপুর, ডেমরা, সারুলিয়া, মানিকনগর, সবুজবাগসহ রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা। অবস্থা এমন হয়েছে যে, এসব এলাকার কোনো কোনো অঞ্চল রূপ নিয়েছে অস্থায়ী নদীতে। গতকাল শনিবার সরকারি অফিস বন্ধ থাকায় অনেকেই বাসা থেকে বের হননি। তবে বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় চাকরিজীবীদের সকালেই অফিস যেতে পড়তে হয়েছে চরম বিড়ম্বনায়। ভোগান্তিতে পড়ে স্কুল শিক্ষার্থীরাও। পূর্ব-রামপুরা একটি টিন শেড বাড়িতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভাড়া থাকেন রেহেনা বেগম। অবিরাম বর্ষণে তার ঘরেও পানি ঢুকেছে। তিনি বলেন, পাঁচ বছর ধরে এখানে ভাড়া আছি। এর আগে কোনো দিন বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকেনি। কিন্তু এবার পানি ঢুকেছে বলে চরম কষ্টে আছি। শুধু টিন শেডের বাড়িতে নয়, অনেক বিল্ডিং বাড়ির নিচতলাতেও পানি ঢুকেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার বহু বাড়ির নীচতলায় পানি ঢুকেছে।
ঢাকায় ঘর থেকে বেরুলেই সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিশেষ করে যানবাহন সঙ্কটের ভোগান্তি থেকে কেউই রেহাই পাননি। যাত্রীরা প্রয়োজনে দ্বিগুণ তিনগুণ ভাড়া দিয়েও গাড়ির দেখা পাননি।
ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনদিনের বৃষ্টিতে গতকাল সকাল থেকে ঢাকায় গণপরিবহন সংকট দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে যাত্রীরা সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা ট্যাক্সিক্যাবের খোঁজ করেন। তবে গন্তব্যে পৌঁছাতে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়াায়ও মেলনি সিএনজি অটোরিকশা। যাত্রীদের অভিযোগ, অনেক সময় বাড়তি টাকা পেলেও নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিতে তারা নানা তালবাহানা করেছে। নানা বাহানায় তারা বাড়তি টাকা আদায় করে ছেড়েছে। একজন ভুক্তভোগি যাত্রী জানান, মিরপুর কাজীপাড়া থেকে গুলশান সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া দুই থেকে আড়াইশ টাকা। মিটারে গেলে আরোও কম লাগে। কিন্তু আজ চারশ টাকা বললাম তাও যাবে না। চালক ৫০০ টাকার কমে যাবে না। বৃষ্টিতে রাজধানীতে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি নতুন কিছু নয়। তবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা বারবার সংস্কার হলেও কোনো সমাধান মিলছে না। বরং রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির ফলে দুর্ভোগের মাত্রায় আরও নতুন মাত্রা যুক্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে বরাবরই নিশ্চুপ থাকে সিটি কর্পোরেশন।
এসব বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী খান মোহম্মাদ বিলাল বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে রাজধানীজুড়েই পানি জমেছে। এই সমস্যা নিরসনে আমারা সার্বিকভাবে সর্বোচ্চ কাজ করার চেষ্টা করছি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, গুলশান এলাকাসহ বেশ কিছু এলাকায় কোনো পানিবদ্ধাতা নেই। তবে যে সব এলাকায় আছে তা নিরসনে সেসব এলাকায় কাজ চলছে। তিনি বলেন, পানিবদ্ধতা নিরসনের কাজ আমাদের না, এটা ওয়াসার কাজ। তারপরও পানিবদ্ধতার প্রতিটি পয়েন্টে আমাদের কর্মীরা কাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।