পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সু চিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে রাজনৈতিক দল গঠন করছেন তারই সহযোদ্ধা
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শত শত শিশু, নারী ও পুরুষকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। রাখাইন থেকে তাদের উৎখাত করতে ধারাবাহিকভাবে নির্বিচার হত্যাকান্ড, নৃশংস ধর্ষণ ও গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন এক প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট ইউনিটের বিরুদ্ধে এমন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ তুলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির আশঙ্কা, এসব অপরাধ রোহিঙ্গাদের উগ্রপন্থায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা। অভিযুক্তদের বিচার ও সেনাবাহিনীর ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জোরদারেরও সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। এর আগেও রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে একই রকমের সুপারিশ করেছিল অ্যামনেস্টি।
বুধবার ‘মাই ওয়ার্ল্ড ইজ ফিনিশড’ রোহিঙ্গা টার্গেটেড ইন ক্রাইমস অ্যাগেইনস্ট হিউম্যানিটি ইন মিয়ানমার শীর্ষক ৪৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এতে বলা হয়, ২৫ আগস্ট সহিংসতা শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ৫ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু, নারী, পুরুষ পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।
কীভাবে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক, সুসংগঠিত উপায়ে নির্মম অভিযান চালিয়েছে, বেশকিছু প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নেওয়ার মধ্য দিয়ে তা হাজির করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। অ্যামনেস্টিকে সাক্ষাৎকার দেওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ভয়াবহ এসব অপরাধের সঙ্গে মিয়ানমার আর্মির ওয়েস্টার্ন কমান্ড, ৩৩তম লাইট ইনফ্যানট্রি ডিভিশন ও বর্ডার গার্ড পুলিশসহ স্পেশাল ইউনিটগুলো জড়িত।
প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সংগৃহীত চিত্র ও উপাত্ত, অন্যান্য ছবি ও ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণে অ্যামনেস্টি এই উপসংহারে এসেছে। তাদের হাতে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত নিশ্চিত করছে যে, রাখাইনে লাখো রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু ব্যাপক এবং পরিকল্পিত সহিংসতার শিকার হয়েছে; যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধিতে ১১ ধরনের কর্মকান্ড যখন এ রকম হামলার ক্ষেত্রে জেনেবুঝে করা হয়, তখন তা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে বিবেচিত। এগুলোর মধ্যে অন্তত ছয় ধরনের অপরাধ রাখাইনে সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি ধারাবাহিকভাবে নথিভুক্ত করেছে অ্যামনেস্টি। এই ছয় ধরনের অপরাধ হলো হত্যা, নির্বাসন ও জোরপূর্বক স্থানচ্যূতি, নির্যাতন, ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন সহিংসতা, নিপীড়ন ও অন্য অমানবিক কর্মকান্ড যেমন: খাবার ও অন্যান্য জীবন রক্ষার উপকরণ সরবরাহে বাধা দেওয়া।
রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানে শত শত নারী-পুরুষ ও শিশু নিহত হয়েছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর। ঘরে আগুনে পুড়ে মারা গেছে অক্ষম বয়স্ক, অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী মানুষ। স্যাটেলাইটে ধারণকৃত ছবিতে দেখা গেছে, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামে বাড়িঘর পুড়ছে। কিন্তু মাত্র ১০০-২০০ গজ দূরে রোহিঙ্গাদের বসবাস নেই এমন এলাকা সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্রাইসিস রেসপন্স ডিরেক্টর তিরানা হাসান। তিনি বলেন, এই নৃশংস অভিযানে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর প্রতিশোধ নিয়েছে। দৃশ্যত এর উদ্দেশ্য হলো তাদেরকে দেশ থেকে চিরতরে বিদায় করে দেওয়া। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতায় যে শরণার্থী সঙ্কট তৈরি হয়েছে এ অঞ্চলে তা অনেক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। মিয়ানমারের এই হায়েনার মতো অপরাধ সেখানে সুবিচারের পথ বহুদূর এমনটাই নির্দেশ করে। তবে যারা এর জন্য যারা দায়ী তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
সু চিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে রাজনৈতিক দল গঠন করছেন তারই সহযোদ্ধা
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের আশ্বাস দিয়ে মিয়ানমারে এক নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির সাবেক ছাত্রনেতা ও সু চির সহযোদ্ধা কো কো জি জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ তার নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। সামরিক সরকারের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এই নেতা মনে করেন, সু চি একা রোহিঙ্গা প্রশ্নের মীমাংসা করতে সক্ষম নন। সঙ্কট নিরসনে মিয়ানমারে ‘জবাবদিহিতামূলক বহুদলীয় গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরেন ২০ বছর কারাভোগ করা এই ছাত্রনেতা।
আশির দশকে মিয়ানমারে উত্তাল ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কো কে জি ২০১৫ সালের নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি থেকে প্রার্থী হবেন বলে দলের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন। সাবেক এই ছাত্রনেতা সেই সময় রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তিনি সু চির দল থেকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে পারেন। তবে পরে তার প্রার্থিতা নিশ্চিত হয়নি। চলতি সপ্তাহে নিপ্পন ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে জাপান গিয়েছিলেন কো কো জি। এসময় বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে মিয়ানমারের সঙ্কট নিয়ে কথা বলেন তিনি। এনএইচকে দেওয়া সাক্ষাতকারে সু চির এক সময়ের এই রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জানিয়েছেন, এখনও আনুষ্ঠানিক ক্যাম্পেইন শুরু না করলেও এরইমধ্যে টোকিওতে থাকা মিয়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে সমর্থন আদায় করতে শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির পর কো কো জিই মিয়ানমারের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। তিনি ‘৮৮ জেনারেশ স্টুডেন্ট’ নামে একটি দলের মাধ্যমে পরিচিত হয়ে উঠেন। সামরিক সরকার পতনে তিনি অং সান সু চির সঙ্গে কাজ করেছেন। এই আন্দোলনের কারণে প্রায় ২০ বছর কারাবন্দি থাকতে হয়েছে তাকে। পাঁচ বছর আগে মুক্তি পাওয়া এই নেতা মনে করেন, অং সান সু চি একা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। সূত্র : ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।