Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারের অনুরোধে খবর গোপন করেছিল জাতিসংঘ

আশি হাজার শিশু ভয়াবহ খাদ্য সঙ্কটে ভুগছে : ডব্লিউএফপি’র রিপোর্ট

| প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাখাইনের কমপক্ষে আশি হাজার শিশু ভয়াবহ খাদ্য সঙ্কটে ভুগছে এমন তথ্য উঠে আসে গত জুলাইয়ে জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তা বিষয়ক কর্মসূচি ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) এর একটি রিপোর্টে। কিন্তু পরবর্তীতে মিয়ানমার সরকারের অনুরোধে সেই রিপোর্ট প্রত্যাহার করে নেয় ডব্লিউএফপি। অনুসন্ধানে এমনটি জানতে পেরেছে ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান। অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে এ রিপোর্টটি প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণ জানতে চাইলে ডব্লিউএফপি জানায়, মিয়ানমার সরকারের অনুরোধে তারা এমনটি করেছে। কারণ সে দেশের সরকার চেয়েছে এ বিষয়ে ডবিøউএফপি’র সাথে একটি যৌথ রিপোর্ট প্রকাশ করতে। এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে মিয়ানমারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং সম্মিলিতভাবে তারা একটি সংশোধিত রিপোর্ট প্রণয়ন করবে। মিয়ানমার সরকারের সাথে স¤পর্ক এবং সহায়তা বজায় রাখতে ডবিøউএফপি এ প্রস্তাবে রাজি হয় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতিসংঘে কর্মরত এক কর্মকর্তা। প্রত্যাহার করে নেয়া ছয় পৃষ্ঠার ওই রিপোর্টে তথ্য ছিল যে, রাখাইনে বসবাসরত আশি হাজারেরও বেশি শিশু ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে। তাদের ওজন ক্রমাগত কমছে, যা উদ্বেগজনক। এই ¯পর্শকাতর রিপোর্ট প্রত্যাহার করে নেয়ায় দেশে বিদেশে জাতিসংঘের সমালোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ১১ লাখ রোহিঙ্গার অধিকার রক্ষায় জাতিসংঘ যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। ২৫ আগস্ট আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যরা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ১১ জন নিরাপত্তা রক্ষী নিহত হয়। এর জের ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর ভয়াবহ নিধন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। গণহত্যা, ধর্ষণ, খুন পাশবিকতা- কোন কিছুই বাদ যাচ্ছে না এই নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞে। ফলশ্রুতিতে পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। অবশ্য মিয়ানমার সরকার বরাবর এ ঘটনাকে অস্বীকার করে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার এ মাসের শেষে মিয়ানমার থেকে ফিরে যাবার সিদ্ধান্তে চারদিকে সমালোচনা চলছে। অভিযোগ রয়েছে, চলমান এ সহিংস পরিস্থিতির সত্যতা স¤পর্কে বিশ্বকে অন্ধকারে রাখতে তিনি বেশকিছু ¯পর্শকাতর তথ্য লুকিয়েছেন। যা জাতিসংঘের নীতিমালার পরিপন্থী। স¤প্রতি দ্য গার্ডিয়ানকে এক ইমেইলে জাতিসংঘ বলেছে, তারা মিয়ানমারের সঙ্গে করা ডব্লিউএফপির যৌথ রিপোর্টকেই সঠিক বলে বিবেচনা করছিল, তবে মিয়ানমারের আগস্টের সহিংসতা এই যৌথ রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করে দিয়েছে। অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডব্লিউএফপির একজন পরামর্শক জানিয়েছেন, রিপোর্ট গোপন করার খবরটি প্রকাশ হয়ে যাবার ফলে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এর ফলে জাতিসংঘ ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থায় প্রচন্ড অস্বস্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই ঘটনা পরিষ্কার ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ডব্লিউএফপি ওয়াকিবহাল থাকা সত্তে¡ও গত দু’বছরে রোহিঙ্গাদের এই চলমান খাদ্যসংকটকে আরো বাড়তে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারে অবস্থিত ডব্লিউএফপির প্রধান কার্যালয় তাদের মূল দায়িত্ব ভুলে সে দেশের সাথে স¤পর্ক বজায় রাখাকে গুরুত্ব দিয়েছে। পর্দার আড়ালে এই হল প্রকৃত ঘটনা। জাতিসংঘকে একটি অনুদান সংগ্রহের প্রতিষ্ঠান বলে আখ্যায়িত করে তিনি মন্তব্য করেন। গার্ডিয়ান।



 

Show all comments
  • দিদার ১৮ অক্টোবর, ২০১৭, ৩:৩১ এএম says : 0
    সবই এক তাই গোপন তো রাখবেই
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Pasha Jafree ১৮ অক্টোবর, ২০১৭, ১:১০ পিএম says : 0
    জাতিসংঘ হল সন্ত্রাসীসংঘ। কারণ তারা সন্ত্রাসীর সংঘ দিয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • আব্দুর রউফ ১৮ অক্টোবর, ২০১৭, ২:২৬ পিএম says : 0
    জাতীসংঘের উচিৎ বার্মিজদের অন্যায়ের এর উপযুক্ত জবাব দিতে শান্তি রক্ষিবাহিনী প্রেরণ করার কোন বিকল্প নেই ।
    Total Reply(0) Reply
  • Prabir Achirjee ১৮ অক্টোবর, ২০১৭, ২:২৭ পিএম says : 0
    মিয়ারমার সামরিক বাহিনি, যে বরবর হত্যযঙ্গ চালাছে, এবং বাংলাদেশ সরনাত্রি আসা বন্ধকরতে পারেনি। এই ব্যততা দায়ি কার...?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ