Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা ইস্যু : মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে সদস্যরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জাতিসংঘে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সাহসিকতার সঙ্গে পাঁচ দফা প্রস্তাব তুলে ধরায় এবং সাহসী ভূমিকা পালন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। একইসঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধি পাওয়ার বিষয়টিও উঠে এসছে।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের প্রশংসা করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান তার নিজের লেখা একটি কবিতা পাঠ করে শোনান। ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ সফিউল আলম। বানিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিষয়ে যে প্রস্তাব দিয়েছেন এবং নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মানবতার কাজ করেছেন সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদজ জানাচ্ছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের মানুষের মনে নাড়া দিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সারা বিশ্বের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রশংসা করে এডিটোরিয়াল’ লিখছে। এটা কম পাওয়া নয়। মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য প্রয়োজনে একবেলা খাব। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য তার যে মানবতা এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। শেখ হাসিনাই মাদার অব হিউমিনিটি উপাধি পাওয়ার যোগ্য। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বছরের ১৯তম ও বর্তমান সরকারের ১৬০তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞানীদের অবসরের বিধান বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ আইন সংশোধন করে বিশেষ মেধা ও যোগ্যতাসম্পন্ন বিজ্ঞানীদের অবসরের বয়স বাড়ানো হলেও এনিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় ওই বিধানটি বাতিলে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই সঙ্গে তামাকজাত পণ্যের ওপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপের তিন বছর পর এই অর্থ ব্যয়ের জন্য ১৪টি খাত চিহ্নিত করেছে।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যারা বিশেষ মেধা ও যোগ্যতার অধিকারী গবেষক হবেন তাদের চাকরির সীমা হবে ৬৭ বছর। কিন্তু এই আইন প্রয়োগ করতে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন গবেষকদের আলদা করার কথা ছিল। ওই নীতিমালা না হওয়ায় সমস্যা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নীতিমালা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। যারা উপযুক্ত নন তারাও বলছেন তাদের অবসরের বয়স ৬৭ বছর হবে। তারা আদালতে গিয়ে যদি মামলা করে দেয়। তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলছে এটা আপাতত রহিত করার জন্য, মন্ত্রিসভা সেটা অনুমোদন দিয়েছে। বৈঠকে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অ্যাকাডেমি আইনের খসড়াও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৮০ সালে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৫ সালে এটাকে করপোরেট বডি হিসেবে রূপ দেওয়া হয়। ১৯৭৯ সালের একটি অর্ডিন্যান্সের আওতায় এটিকে ইনস্টিটিউট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যেহেতু এই ইনস্টিটিউটের মূল আইন ১৯৭৯ সালের, তাই আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্শাল ল’ আমলের আইন হওয়ায় তা অবৈধ হয়ে গেছে। এখন এই আইনকে বাংলায় রূপান্তর করে নতুন করে করা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, তামাক পণ্যের উপর এক শতাংশ হারে স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ থাকলেও এই অর্থ খচরের কোনো নীতি ছিল না, এখন এটা নীতিমালার আওতায় এলো। নীতিমালা অনুযায়ী, স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ হিসেবে পাওয়া অর্থ ১৪টি খাতে খরচ করা যাবে। এর মধ্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কার্যক্রম পরিচালনা, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে টাস্কফোর্সসহ অন্যান্য কাজ বাস্তবায়নে সহায়তা, এনবিআরের অধীনে টোবাকো ট্যাক্স সেলের কার্যক্রম পরিচালনা, তামাকের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে প্রচার ও প্রশিক্ষণ এবং তামাকের ব্যবহার, ক্ষয়ক্ষতি ও গবেষণায় এই অর্থ খরচ করা যাবে। তিনি বলেন, তামাকবিরোধী আইন নিয়ে সচেতনামূলক কার্যক্রম, তামাকজনিত অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে কর্মরত সংস্থাগুলোর জন্য আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা, তামাক চাষরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং তামাক চাষীদের বিকল্প ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করতেও এই অর্থ খরচ করা যাবে।
শফিউল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ধুমপানমুক্ত হবে, সেটাকে টার্গেট রেখে এই কার্যক্রম চলছে। ২০১৪ সালের জুলাই আমদানি করা ও দেশে তৈরি তামাকজাত সব ধরনের পণ্যের উপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা হয়। এই খাত থেকে বছরে ৩০০ কোটি টাকা আসে, যা স্বাস্থ্য খাতেই খরচ করা হয়। কিন্তু ওই অর্থ ব্যয়ের বিধিমালা তৈরি না হওয়ায় গত তিন অর্থবছরে তামাকের সারচার্জ থেকে পাওয়া পাওয়া প্রায় ৯০০ কোটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে অলস পড়ে আছে বলে গণমাধ্যমের প্র্রতিবেদনে এসেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সমন্বিত ও পরিকল্পিত উপায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি’ ও ‘জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি’ শিরোনামে দুটি নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। স¤প্রতি সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটি তামাকজাত পণ্য থেকে পাওয়া সারচার্জের অর্থ সরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মানোন্নয়নে ব্যবহারের সুপারিশ করেছিল। এজন্য মন্ত্রিসভা ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি-২০১৭’ নামের একটি নীতিমালাও অনুমোদন দিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ