Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সাভারে আবাসিক এলাকায় পোলট্রি হ্যাচারি দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

| প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাভার (ঢাকা) থেকে সেলিম আহমেদ : ঢাকার সাভার পৌর এলাকার জালেশ্বর মহল্লা পোলট্রি হ্যাচারি কারখানায় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠি হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। নষ্ট ডিমের দুর্গন্ধে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠছে। বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে পোলট্রি মুরগির উড়ন্ত পাখনা ও পায়খানার দুর্গন্ধ। বাড়ির সামনে ড্রেনে ভেসে রয়েছে মরা মুরগির বাচ্চা। এতে করে ওই এলাকা এখন নোঙরা দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসী জানান, জালেশ্বর মহল্লায় আবু সাদেক লেলিন ‘আদ্রীতা হ্যাচারি’ নামক ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো একটি কারখানা গড়ে তুলেন। তার হ্যাচারির নষ্ট ডিম-খোসার দুর্গন্ধ, মুরগির পায়খানা, উড়ন্ত পশম ও মুরগির বাচ্চা মরার দুর্গন্ধে এলাকার ছেলেমেয়েরা সর্দি-কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এ ছাড়া হ্যাচারিতে ব্যবহৃত তিনটি ইনকিউবেটর ম্যাশিন চালু করা হলে আশপাশের বাড়িঘরে কম্পন অনুভ‚ত হয়। যা বসবাসে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন এলাকাবাসী। তবে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী মÐল জানান, এর আগেও আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছিল। তবে জনবল সঙ্কটের কারণে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কয়েক দিনের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করবেন।
আদ্রীতা হ্যাচারির মালিক আবু সাদেক লেলিন হ্যাচারি কারখানার কোনো অনুমোদন কিংবা পরিবেশের ছাড়পত্র না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, সব ম্যানেজ করেই কারখানা চালানো হচ্ছে। তা ছাড়া তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ সাগিরুজ্জামান সাকীকের প্রভাব দেখান। তবে সৈয়দ সাগিরুজ্জামান সাকীক দাবি করেন, হ্যাচারি কারখানা অবৈধ। আমি কখনো ওই কারখানা নিয়ে প্রভাব বিস্তার করিনি। কারখানার মালিক আবু সাদেক লেলিন দূরসম্পর্কের বিয়াই হয়।
অপর দিকে, সাভারের কুটুরিয়া এলাকায় মাসুদের মালিকানাধীন ‘সুধা হ্যাচারি’ ও জিনজিরা এলাকার নুর উদ্দিনের একটি হ্যাচারিতেও একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অফিসের এক কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়ার কথা জানান ওই কর্মকর্তা। তবে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়া আবাসিক এলাকায় পরিবেশ দূষিত হয় এমন কারখানা (হ্যাচারি) স্থাপনের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ কিভাবে পেল তা নিয়েও চলছে গুঞ্জন। অনেকে বলছেন, পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমকে আর্থিক সুবিধায় ম্যানেজ করে এ সংযোগ নিয়েছেন। তবে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর শিমুলতলা জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এই সংযোগটি আমি যোগদানের আগে দেয়া হয়েছে। তৎকালীন ডিজিএম আক্তারুজ্জামান লস্কর দিয়েছিলেন। শুধু পৌরসভার ট্রেড লাইস্যান্সের উপর ভিত্তি করে এ সংযোগ দেয়া হয়েছে। তবে তিনি তদন্ত করে বিষয়টি দেখবেন বলেও জানিয়েছেন। তবে ওই পোল্ট্রি হ্যাচারি বন্ধপূর্বক এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ