Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফরিদগঞ্জে ২৯ কিলোমিটারজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ও সড়ক

ফরিদগঞ্জ থেকে মামুনুর রশিদ পাঠান : | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফরিদগঞ্জে দু’টি আঞ্চলিক মহাসড়কের ২৯ কিলোমিটার জুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ও সড়কের কারণে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছছে। জনগুরুত্বপুর্ণ সড়কটিতে লোকজন প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয় লোকজন জানায়, গত কয়েকদিন পূর্বেও দু’পাশে টানানো লাল পতাকায় সেতুটির দুরবস্থা স্পষ্ট ছিল। সেখানে যুক্ত হয়েছে ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, পাঁচ টনের অধিক পরিবহন যোগ্য নয়’ লেখাযুক্ত সাইনবোর্ড। এতে করে সেতুটির ব্যবহার অযোগ্যতা আরো স্পষ্ট হয়েছে। চলাচল অনুপোযোগী এই সেতুটি চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-ল²ীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ফরিদগঞ্জের শোভান এলাকায় অবস্থিত। বিগত বছরগুলোতে এই মহাসড়কের অনেকগুলো সেতু নতুন করে নির্মাণ হলেও বিভিন্ন সময়ে জোড়াতালি, পতাকা টানানো আর সাইনর্বোড ঝুলানোর মধ্য দিয়ে এই সেতুটি সংস্কারের দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই সেতুটি দিয়ে চলছে যাত্রী কিংবা পণ্যবাহী ভারী যানবাহনগুলো। যাত্রীরা আশঙ্কা করছে, যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে ঘটতে পারে প্রাণহানি।
চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তার দেয়া তথ্যানুসারে চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-ল²ীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অন্তত ১৩টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু রয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ভাটিয়ালপুর-হরিণা ফেরিঘাট সংযোগ সড়কের দুরবস্থার কারণে ভারী যাবাহনগুলো গত চার মাস ধরে সিআইপি বেড়িবাঁধ সড়ক হয়ে চলাচল করলেও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির কারণে তারা আতঙ্কে রয়েছে।
এদিকে সেতুর মতোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে মহাসড়কটির চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ ও হরিণা-ভাটিয়ালপুর দু’দিকের মোট ২৯ কিলোমিটার সড়ক। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, অপ্রশস্ত সড়ক আর সড়কের ছোট-বড় অংসখ্য গর্তের কারণে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জের ১৭ কিলোমিটার সড়কে। দুরবস্থার মুখে মহাসড়কের এই অংশে পরিবহন চলাচল অব্যাহত থাকলেও অধিকতর বিপর্যস্ত ভাটিয়ালপুর-হরিণা অংশের ১২ কিলোমিটার সড়ক। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সাথে খুলনা এবং রাজধানী ঢাকার বিকল্প স্থল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ভাটিয়ালপুর-হরিণা আঞ্চলিক মহাসড়ক। অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত ও নিরাপদ হওয়ায় খুলনা থেকে চট্টগ্রামগামী পণ্যবোঝাই ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের চালকগণ এ সড়কটিই ব্যবহার করতেন। কিন্তু সড়কটির সংস্কার বর্জিত অত্যাধিক জরাজীর্ণ দশা এবং প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চার মাস ধরে সড়কটিতে চলাচল পরিহার করেছে দূরপাল্লার চালকগণ। ফলে প্রতিমাসে অন্তত কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সড়কটি ঘিরে ভোগান্তির কমতি নেই স্থানীয় অধিবাসীদেরও। স্বেচ্ছায়-অনিচ্ছায় সড়কটি যাদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম, বিশেষ করে সড়কের দু’পাশে বসবাসকারী সে সব অধিবাসীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগী স্থানান্তর আর ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী আর সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরাও।
সড়কটি দুটি সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত জানান, ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক মান উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় সড়ক দুটির সংস্কার প্রক্রিয়াধীন। সড়কটির ভাটিয়ালপুর-হরিণা অংশে ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে। শীঘ্রই সেখানে কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ অংশের জন্য দরপত্র জমা নেয়া হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই শেষে নিয়মানুযায়ী দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের ১৩ জরাজীর্ণ সেতুও এই প্রকল্পের আওতায় সংস্কার কিংবা পুনঃনির্মাণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ