Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গংগাচড়ায় ৫ হাজার শ্রমিকের হাতে কাজ নেই মানবেতর জীবনযাপন

| প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোহাঃ ইনামুল হক মাজেদী গংগাচড়া (রংপুর) থেকে ঃ রংপুর জেলার গংগাচড়া উপজেলায় ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে কৃষি শ্রমিকের হাতে কাজ থাকে না। গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের নদনীদাস গ্রামের আফসার আলী পেশায় শ্রমিক। শ্রম বিক্রি করতে এসেছেন রংপুর শহরে। 

গত শনিবার সকালে কথা হয় রংপুর শহরের ধাপ শিমুলবাগ এলাকায়। তিনি বলেন, এখন গ্রামে কাম নাই, তাই অমপুর শহরে আচছি। কোনদিন কাম পাই, কোনদিন কাম পাই না। বাইসাইকেলে বাড়ী যাই। এ সময় কথা হয় কোলকোন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ কোলকোন্দ গ্রামের আইয়ুব, খোকা, মন্টুসহ অনেকের সাথে শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকায়। তাদের শ্রম বিক্রি করে সংসার চলে। যেদিন কাজ হয় সেদিন বাড়ীতে চুলা জ্বলে। কাজ না হলে গ্রামের বিত্তবানদের কাছে আগাম শ্রম বিক্রির টাকা নেয় বাজার দামের চেয়ে কম।
রংপুরের ধাপ শিমুলবাগ, মেডিকেল পূর্ব গেট, সিও বাজার, শালবন মিস্ত্রীপাড়া, বেতপট্টিসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তার পাশে প্রতিদিন সকালে শ্রমের হাট বসে। রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় চোখে পড়ে এ দৃশ্য। শ্রমিকরা দূর-দূরান্ত থেকে ডালি, কোঁদাল, খনতি, পাসুনসহ অন্যান্য গৃস্থলি যন্ত্রপাতি নিয়ে বাইসাইকেল, রিকসা, ভ্যান, অটো রিকসা কিংবা পায়ে হেঁটে শহরে আসে। ওই শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশ গঙ্গাচড়া উপজেলার শ্রমিক। গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরে শ্রমিকের মজুরি বেশি। কাজ হলে তারা প্রতিদিন ৩০০ টাকা মজুরি পায়। গজঘন্টা ইউনিয়নের কিসামত হাবু গ্রামের দিনমজুর কান্দুরা, আমজাদ, হোসেন, সুধীর চন্দ্র, সুধারসন, বাবু, জব্বার গ্রাম থেকে শহরে এসে শ্রম বিক্রি ও সবজি বিক্রি করে সংসার চলে। ওই গ্রামের আবু এখন রিকশাচালক। প্রতিদিন শহরে এসে রিকশা চালায়। কুটিপাড়া গ্রামের মহুবর, হামিদ, বাদশা, তাজুলসহ অনেকে মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। আলমবিদিতর ইউনিয়নের মনছুর, মালেক, শফি, আহাদ, মোজা, নোহালী ইউনিয়নের হামিদুল, গঙ্গাচড়ার সদর ইউনিয়নের নবনীদাস গ্রামের হাসেম আলী, আশেক আলী, নওশা মিয়া, মনছুর আলী, বাদল মিয়াসহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার কৃষি শ্রমিক হাতে কাজ না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। অনেকে কাজের সন্ধানে বিভিন্ন শহরে ছুটছে।
নোহালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ টিটুল জানায়, তিস্তার করাল গ্রাসে নদী ভাঙ্গা পরিবার নিঃস্ব ও বাধ্য হয়ে শ্রমিক পেশায় পরিণত হয়েছে। ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে কৃষি কাজ না থাকায় শ্রমিকরা বেকায়দায় পড়েছে। এ ব্যাপারে সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ