Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইনমন্ত্রী মিথ্যা বলে শপথ ভঙ্গ করেছেন -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিষয়ে মিথ্যা কথা বলে আইনমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন। এ জন্য বিচারের মাধ্যমে আইনমন্ত্রীর চারবার সাজা হওয়া উচিত। গতকাল ( শনিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির প্রতিবাদ ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, মন্ত্রী হলে শপথ নিতে হয় ক্ষোভ, আক্রোশের বসে মিথ্যা বলা যাবে না। কিন্তু আইনমন্ত্রী মিথ্যা বলেছেন। উনি (আইনমন্ত্রী) বলেছেন- প্রধান বিচারপতির ক্যান্সার হয়েছে’। কিন্তু প্রধান বিচারপতি বিদেশ যাওয়ার আগে বলে গেছেন তিনি ‘সুস্থ’ আছেন। বিএনপির এই নেতা বলেন, আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিচারিক সকল কর্মকান্ড পরিচালনাসহ গুরুত্বপূর্ণ রদবদল করতে পারবেন। এটা প্রচন্ডভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর হামলা। এটা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এসব করতে পারেন না। যিনি নিয়মিত প্রধান বিচারপতি শুধুমাত্র তিনিই করতে পারেন। আইনমন্ত্রীর সাজা হতে পারে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমি তার পদত্যাগ দাবি করছি। জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতায় আসলে, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে অবশ্যই আইনমন্ত্রীর বিচার করা হবে।
আইনমন্ত্রীর বাবা একজন বরেণ্য আইনজীবী উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর এমন কর্মকান্ডে পারিবারিক ঐতিহ্য নষ্ট করেছেন। তিনি আরো বলেন, দেশকে স্থায়ী দুঃশাসনের বজ্র আটুনিতে বেঁধে ফেলা হলো। বিচার বিভাগের ওপর আরও নগ্ন হস্তক্ষেপ করে ন্যায় বিচারের পথকে চিরতরে রুদ্ধ করে দেয়া হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। এই ঘটনায় গোটা বিচার ব্যবস্থাকেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেয়া হলো। কোন সমস্যাই দেশের অগ্রগতি থামাতে পারবে না প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, এ কথাতো তিনি বলবেনই, কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিরোধীদলের চিন্তা ও বিশ্বাসসহ গণতন্ত্রই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মনঃপীড়া ও তার ক্ষমতায় টিকে থাকার একমাত্র সমস্যা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ রাষ্ট্রের স্বাধীন স্তম্ভগুলোকে কঠিন কুঠারাঘাতে উপড়ে ফেলে এখন প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতার আধিপত্যের রঙ্গিন অগ্রগতি ও ক্ষমতাসীনদের লোভ লালসার অগ্রগতিতে জাতীয় সম্পদ লোপাট হতে আর কোন বাধা থাকার তো কথা নয়।
রিজভী বলেন, প্রধান বিচারপতির লিখিত বক্তব্যে সরকারের মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর আক্রোশমূলক কথা বার্তায় ওইভাবে বলেননি, কিন্তু বিব্রত হয়েছেন এ কথা বলেছেন। তার মানে আক্রোশমূলক এবং প্রচন্ড গালিগালাজ, অসভ্য-কুসভ্য কথা তার বিরুদ্ধে বলা হয়েছে। এতে তিনি (প্রধান বিচারপতি) বিব্রত। প্রধান বিচরপতি বলেছেন, বিচার বিভাগ নিয়ে আমি শঙ্কিত। তার মানে বিচার বিভাগের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। বিচার বিভাগের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের আরেক প্রধান প্রতিপক্ষ বেগম খালেদা জিয়া উল্লেখ করে রিজভী বলেন, চিকিৎসা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের দেশে আসার সময় হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে পুরাতন মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের হিড়িক। কুমিল্লা, ঢাকার বিভিন্ন আদালত থেকে রায় হচ্ছে। তার মানে শেখ হাসিনা মনে করছেন খালেদা জিয়া নিরাপরাধ। শুধু তাই নয়, বিএনপি এবং এ দলের নেত্রীর এখনও আস্তিত্ব আছে। সুতরাং তাকে হয়রানি কর। প্রধানমন্ত্রী মূর্খের স্বর্গে বাস করছে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ইলিয়াস আলীকে গুম করার পরও বিএনপি মরেনি। চৌধুরী আলম, সাইসুফ ইসলামকে গুম করেও বিএনপিকে স্তব্ধ করা যায়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেও আপনার (প্রধানমন্ত্রী) স্বপ্ন পূরণ হবে না। রিজভী বলেন, প্রধান বিচারপতি অঙ্গীকার করে গেছেন ছুটি শেষে তিনি ফিরে আসবেন দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। মানুষ বুঝে গেছে প্রধান বিচারপতিকে আড়াল করে রাখা হয়েছিল। তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তাকে কথা বলতে দেয়া হয়নি। তার ওপর চলেছে মানসিক নির্যাতন। তিনি ন্যায়বিচার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে সোচ্চার থেকেছেন।
জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি এম. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, হাবিবুর ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমতউল্লাহ, আমিনুল ইসলাম, অপরাজেয় বাংলার সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ