Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অবৈধ যানবাহনের দখলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

চালকদের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স

| প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল চান্দিনা থেকে : দেশের পাইপলাইন খ্যাত জাতীয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চালকরা বেপরোয়া হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে দুর্ঘটনা। নিহত-আহত হচ্ছে অনেকেই। পঙ্গুত্ববরণ করে কেউ কেউ বিনা চিকিৎসায় অর্থের অভাবে মৃত্যু পথযাত্রী। পাশাপাশি মহাসড়কজুড়ে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অদক্ষ চালকরাও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালনায় প্রতিদিন মৃত্যু ঝুঁকিতে হাজার হাজার যাত্রী। এ অনিয়ম যেন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে জনসাধারণ বা পথচারীদের অসর্তকতা। তারা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে মহাসড়কের ওপর দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এতেও বাড়ছে দুর্ঘটনা। আর এ সকল অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নেই কোন তৎপরতা।
সরেজমিন অনুসন্ধান বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, দেশের প্রধান ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশজুড়ে রয়েছে প্রায় একশত কিলোমিটার অংশ। জেলার দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত মহাসড়কে ২০১৫ সালের আগস্টে নিষিদ্ধ হয়েছে সিএনজি অটোরিকশা। এছাড়াও নিষিদ্ধের তালিকায় আছে, রিকশা, ইজিবাইক, নসিমন, ভটভটি, ট্রাক্টর। কিন্তু কোনটাই থেমে নেই। প্রতিদিনই চলছে মহাসড়ক দিয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে। মহাসড়কে সিএসজি অটোরিকশা যাত্রী বহনে নিষিদ্ধেও পর একটি সিন্ডিকেট মালামাল পরিবহণের কাজে ব্যবহৃত পিকঅপকে যাত্রী পরিবহণের উপযোগী করে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী পরিবহণ করছে। তার বাইরে রয়েছে ফিটনেসবিহীন া মাইক্রোবাস।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ এসব যানবাহনের মহাসড়কে চলাচলের অনুমতি না দিলেও আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার চোখের সামনেই চলছে এসকল যানবাহন। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এসকল মাইক্রো দিয়ে চলাচল করলেও সে সকল যানবাহনের চালকদের নেই কোন লাইসেন্স। এতে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে কুমিল্লার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারী যাত্রীরা। বিআরটিএ’র দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতিদিন দেশের এই ব্যস্ততম মহাসড়কে দ্রæতগতির বিভিন্ন শ্রেণীর বাস, ট্রাক, ট্রেইলার, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস আসছে। দ্রæতগতির এই গাড়িগুলোর সাথে ফিটনেসবিহীন যানবাহনগুলো পাল্লা দিয়ে অদক্ষ চালকদের দ্বারা গাড়ি পরিচালনায় দক্ষ চালকরাও গাড়ির গতি কমাতে বাধ্য হচ্ছে।
সূত্র আরও জানান, ব্যস্ততম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি, গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনা, নিমসার, ময়নামতি পদুয়ারবাজার, সুয়াগাজী, মিয়াবাজার, চৌদ্দগ্রাম বাজার অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা। উল্লেখিত স্থানগুলোর বেশ কয়েকটি স্থানে নেই কোন ফুটওভার ব্রিজ। এছাড়াও যেসকল স্থানে ফুটওভার ব্রিজ আছে সে স্থানগুলোতে মনিটরিং না থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এগুলো ব্যবহার না করে মহাসড়ক হেঁটে পারাপার হচ্ছে। ফলে দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও ঘটছে প্রতিদিন। স¤প্রতি এরকম সড়ক পারাপারে চান্দিনা, নিমসার, নাজিরা বাজার, ময়নামতি এলাকা, আলেখারচর, ঝাগুড়ঝুলি, রামপুর এলাকায় রাস্তা পারাপারে বেশ ক’জনের মৃত্যু ঘটেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র জানান, মহাসড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে কোন নজরদারি নেই। ফিটনেসবিহীন বিভিন্ন শ্রেণীর যানবাহন প্রতিদিন দ্রæতগতির গাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টা করছে। গত ১ অক্টোবর চান্দিনার নুড়িতলায় এমনি একটি দ্রæতগতির বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। এতে ৭ জন যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কমপক্ষে ১৫ জন। চৌদ্দগ্রামে বাসের ধাক্কায় প্রাইভেটকার আরোহী, চান্দিনার কাঠেরপুল এলাকায় বাস চাপায় সাইকেল আরোহী কলেজ ছাত্রের মৃত্যু মহাসড়কে দুর্ঘটনার খ-াংশ। দায়িত্বশীল সূত্র আর জানায়, মহাসড়কে চলাচলকারী স্বল্প দূরত্বেও অধিকাংশ যানবাহন চালকদের কোনো লাইসেন্স নেই । যেমনটি নেই গাড়িগুলোর ফিটনেসের বৈধতা।
আর এভাবেই মৃত্যু ঝুঁকিতে প্রতিদিন মহাসড়ক দিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে হাজার হাজার যাত্রী। বিষয়টি জানতে হাইওয়ে (পূর্বাঞ্চল) কুমিল্লার পুলিশ সুপার জানান, প্রতিদিনই অতিরিক্ত গতির কারণে হাইওয়ে পুলিশ মামলা করছে। তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে কোনো লেগুনা বা পিক-আপ নেই। লক্কর ঝক্কর মার্কা মাইক্রোবাসের বিষয়ে তিনি বলেন, জনগণকে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে ফিটনেসবিহীন এসব যানবাহনে চলাচল না করতে।



 

Show all comments
  • ময়নাল হোসেন, কুৃমিল্লা। ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১১:১৬ এএম says : 0
    সময়োপযোগী ও বাস্তবধর্মী রিপোটিং করার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ