Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঋণের দায়ে এলাকা ছাড়া তানোরের আলুচাষি

| প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

তানোর (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে অধিকাংশ আলু চাষি হিমাগার থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করে আলু পাঁকে পড়ে দিশেহারা, কেউ কেউ আবার হিমাগারের ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে এলাকাছাড়া। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে হঠাৎ করে আলুর দরপতন হওয়ায় মুনাফাতো দুরের কথা আলুচাষে বিনিয়োগের অর্থ উত্তোলন করা নিয়ে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলার হাজারো কৃষক আলুচাষে বিনিয়োগের অর্থ হারিয়ে রীতিমত নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। এদিকে হিমাগার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে উচ্চ সুদে নেয়া ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সেই ঋণ এখন তাদের গলায় কাঁটা হয়ে বিধেছে। ওদিকে ঋণ পরিশোধের জন্য হিমাগার কর্তৃপক্ষের প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকির কারণে অনেকে এলাকাছাড়া হয়েছে। কৃষকরা জানান, মৌসুমের শুরুতেই হিমাগার কর্তৃপক্ষ অধিক মুনানফার স্বাপ্ন দেখিয়ে কৃষকদের উচ্চ সুদে ঋণ নিতে প্রলুব্ধ করে। আবার ঋণ দিতে জামানত হিসেবে কৃষকের কাছে ৩ শত টাকা মূল্যের ফাঁকা (স্বাক্ষরিত) ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও ফাঁকা ব্যাংকের (স্বাক্ষরিত) চেক জমা নিয়ে ঋণ হিসেবে বীজ আলু সরবরাহ করে। কিন্তু এ বছর আলুর দরপতন হওয়ায় হিমাগারে সংরক্ষিত আলু বিক্রি করে কৃষকরা হিমাগারের ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না।
আলু চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে আলু চাষ করে তাদের প্রতি বিঘায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে। এতে একদিকে লোকসান অন্যদিকে হিমাগারে উচ্চ ভাড়া ও ঋণ, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি ও পরিবহণ খরচ মিলে প্রতি বিঘায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা লোকসান হওয়ায় অনেকে হিমাগারে সংরক্ষিত আলু উত্তোলন না করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ আলু উত্তোলনের সময় প্রতি বস্তা আলু ১০৫০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা দামে বিক্রি হলেও হিমাগারে সংরক্ষিত আলু এখন প্রতি বস্তা আলু ১০৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে এক বিঘা জমিতে গড় ৪০ বস্তা করে আলু উৎপাদন হয় এবং এক বিঘা জমির উৎপাদিত আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে প্রতি বস্তায় ভাড়া ৩৬৫ টাকা, বস্তা ১০০ টাকা ও শ্রমিকের মজুরি ৫০ টাকা হিসেবে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তানোরে চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছে এবং প্রতি বিঘা আলু চাষে জমি থেকে হিমাগার পর্যন্ত আসতে সর্বমোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা ও গড় উৎপাদন বিঘা প্রতি ৪০ বস্তা।
তানোরের পাঁচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর গ্রামের আলু চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি এ বছর ৫০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন এবং এসব আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা আছে। তিনি বলেন, হঠাৎ করে আলুর বাজার পড়ে যাওয়ায় প্রতি বিঘায় তার প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ