Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সাধু দম্পতির লাশ উদ্ধার

| প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পুলিশের ধারণা আত্মহত্যা
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার পুরাণগড় ইউনিয়নের হিন্দুপাড়ার ফকিরখিলের একটি মন্দির থেকে গতকাল (মঙ্গলবার) সাধু দম্পতির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন সাধু স্বপন দে (৬০) ও তার স্ত্রী চিনু দে (৪৭)। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সকালে লাশ দু’টি উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে ওই দম্পতি বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, প্রায় এক যুগ ধরে সাধু দম্পতি ওই মন্দিরে বসবাস করে আসছিলেন। মন্দিরে আসা লোকজনের দান-দক্ষিণায় তাদের সংসার চলত। সম্প্রতি তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে বেশকিছু টাকা ঋণ নেন। এ ঋণ পরিশোধ করা হয়নি। ঋণের পরিমাণ ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা দাঁড়িয়েছে। একমাত্র ছেলেকে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত করতে তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে ঋণ নেয়। কিন্তু ছেলে পরবর্তীতে ঋণ পরিশোধ তো দূরে থাক মা-বাবার খবরও নিতো না।
একদিকে ঋণগ্রস্ত হওয়া অন্যদিকে ছেলের খোঁজখবর না নেয়া এবং ঋণগ্রস্ত হয়ে বিতর্কিত হওয়ায় মন্দিরে লোকজন আসাও কমে যায়। এসব কারণে চরম হতাশা থেকে তারা আত্মহত্যা করতে পারেন বলে জানান ওসি। ওসি জানান, দু’জনের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। তাদের নাকে-মুখে ফেনা দেখা গেছে এবং দুর্গন্ধযুক্ত তরল পান করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে ওসি রফিকুল হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
স্থানীয়রা জানায়, ১০-১২ বছর আগে হিন্দুপাড়ার লোকজন একটি ছোট্ট মন্দির নির্মাণ করেন। সেখানেই তারা পূজা অর্চনা করতেন। সাধু স্থানীয় নারীদের কাছ থেকে ঋণ নিতেন। প্রথমে ঋণ শোধ দিলেও পরবর্তীতে তিনি ঋণ শোধ দিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে সাধু দম্পতির ব্যাপারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা তাদের এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। এতে তাদের আয়-রোজগারও বন্ধ হয়ে যায়। ওই মন্দিরে সন্ধ্যার পর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হতো না। তাই স্থানীয়দের ধারণা সন্ধ্যার পর অথবা রাতে সাধু দম্পতি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
এদিকে মা-বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েও তাদের একমাত্র পুত্র গতকাল বিকেল পর্যন্ত সেখানে যায়নি বলে জানায় পুলিশ। পরে পুলিশ তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাকে ফোন করে ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় যেতে বলে। এ ব্যাপারে সাতকানিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ