বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আতঙ্কে পাঠদান ও পরীক্ষা স্থগিত
বগুড়া ব্যুরো : ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ত্বরিত পদক্ষেপের কারণে গ্যাস লাইন বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট অগ্নিকা- নিভে যাওয়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পেল বগুড়া ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী! গতকাল রোববার সকালে বিদ্যালয়ের মূল ফটকের ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস লাইন বিস্ফোরণ ঘটে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভীত সন্ত্রস্ত ছাত্রীরা পাশের টিনের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে নিরাপদে চলে যায়। ওই সময় প্রভাতী শাখায় ৯শ’ ৫০ জন ছাত্রী এবং বাইরে অপেক্ষমাণ অভিভাবকরা আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের সন্তানদের নিয়ে নির্মাণাধীন ৯তলা ভবনের জন্য খোঁড়া গভীর খাদ ডিঙ্গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নিরাপদ গন্তব্যের দিকে চলে যায়। এসময় ব্যস্ততম শেরপুর রোড, জ্বলেশ্বরীতলা রোড এবং গোহাইল লিংক রোডে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের রান্না এবং নির্মাণাধীন ৯তলা ভবন নির্মাণের শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট দের খাবারের জন্য গ্যাস লাইন সংযোগ নেয়া হয়েছিল। বর্তমানে ওই ৯তলা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। যেখানে ২য় তলা বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দেয়া হবে। বিদ্যালয়ের জায়গার স্বল্পতা থাকায় বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের বিরোধি হলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। কারণ নির্মাণ প্রক্রিয়ায় শাসকদলের প্রভাবশালী নেতারা জড়িত। ওই নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকদের রান্নার কাজ যখন চলছিল ঠিক সেই সময়ই মূল ফটকের সামনের পাইপ লাইনে বিস্ফোরণ ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৭টায় হঠাৎ শোঁ শোঁ শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি বিদ্যালয়ের মূল ফটকের পাশের গ্যাস লাইনের পাইপ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে। আগুন পাশের শেরপুর রোড পর্যন্ত ড্রেনের নীচ দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে শেরপুর রোড, জ্বলেশ্বরীতলা রোড, গোহাইল লিংক রোডে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্রী এবং বাইরে অপেক্ষা করা তাদের অভিভাবকরা আতঙ্কে চিৎকার করে এদিক-সেদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। অনেক ছাত্রী পশ্চিম পাশের নির্মাণাধীন ভবনের টিনের প্রাচীর ভেঙ্গে বাইরে চলে যায়। ওই পথ দিয়ে যাওয়া কয়েকজন রিকশাওয়ালা তাদের রিকশা ফেলে ভয়ে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। আশপাশের বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় ভয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে পড়ে গিয়ে আঘাত পায়। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের কয়েকজন পানি ও বালু দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস পুলিশ এবং গ্যাস কোম্পানীর লোকদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে চলে আসে এবং দ্রুতই বিস্তার রোধ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবু জাফর জানান, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষার প্রস্ততি চলার সময় গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় ছাত্রী এবং অভিভাবকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানীর কর্মকর্তাদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে এবং গ্যাস লাইনটি বন্ধ করে দেয়। তিনি আরো জানান, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের রান্না এবং ক্যান্টিনে রান্নার জন্য গ্যাস লাইন নেয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, গ্যাস লাইন মেরামতের পর শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের দাবির প্রেক্ষিতে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরে সময়মত ওইসব পরীক্ষা নেয়া হবে। পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানী (পিজিসিএল) এর বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডেপুটি ম্যানেজার আকতারুজ্জামান জানান, ইয়াকুবিয়া স্কুলের গ্যাস লাইন মূল বিতরণ লাইন থেকে আপাতত: বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ইয়াকুবিয়া স্কুলের গ্যাস লাইনটি ত্রুটিপূর্ণ থাকার কারণেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।