পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সন্ত্রাসী কায়দায় প্রথমে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে গৃহবন্দী করে রাখার পরে এখন নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমান হাসিনার সরকার কতখানি বেপরোয়া ও নীতিজ্ঞানহীন স্বৈরাচার হতে পারে তার পরিমাপক যন্ত্র এখনও আবিস্কার হয়নি। একটা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলো শেখ হাসিনার সরকার। এখন সার্বক্ষণিক প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে প্রধান বিচারপতিকে দেশ ত্যাগের জন্য। প্রধান বিচারপতির ওপর আক্রোশের নির্দেশদাতা স্বয়ং সরকার প্রধান বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। গতকাল (রোববার) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধান বিচারপতিকে বলপ্রয়োগ করে এক মাসের ছুটি দেয়ার ঘটনায় হতবাক সারাদেশবাসী। ছুটির দরখাস্তে প্রধান বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছে সরকারের এজেন্সিরা। নজীরবিহীন ঘটনা হচ্ছে তাঁর দরখাস্তের ৯টি শব্দের বানানে ভুল। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন এজেন্সির লোকেরা প্রতিনিয়ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে পারলেও সুপ্রীম কোর্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বারবার চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত দেখা করতে পারেননি। প্রধান বিচারপতি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও প্রচন্ড চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে অসুস্থতার কথা বলা হচ্ছে। চিকিৎসার নামে ডাক্তার পাঠানো হচ্ছে। যা সরকারের নিলর্জ্জ নাটক। জনগণ সরকারের এসব সাজানো নাটক তিল পরিমানও বিশ্বাস করে না। বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারলেই সরকারের উদ্দেশ্য সাধিত হয় এবং একদলীয় শাসনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে বিলম্ব হবে না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিচার বিভাগের ওপর এই ঘৃন্য আক্রমণ বাংলাদেশের বহুমাত্রিকতা স্তব্ধ হওয়ার ইঙ্গিতবহ। বহু দল, মত, পথের সম্মিলন এখন ভয়ের অন্ধকার রাজ্যের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হলো। বিরোধী দল এবং বিরোধী মতের মানুষদের সুবিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়ে গেল। বিরোধী দলের নেতাকর্মী এবং ভিন্ন মত ও বিশ্বাসের মানুষেরা এখন ক্রুদ্ধ সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হতে থাকবে। প্রতিকার পাওয়ার আর কোন জায়গা থাকলো না। সরকার সম্পূর্ণরুপে বিচার বিভাগকে আয়ত্বে নিতে পারলে অত্যাচারী সরকার বিচার বিভাগকে দিয়ে নিষ্ঠুর বল প্রয়োগে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে দমন করতে চাইবে। নিজের দুর্বিনীত ইচ্ছাকে জুডিসিয়াল টেরোরিজমের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে। আইনী খোলসের মধ্যে সরকারবিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। এই ঘটনায় দেশে সৃষ্টি হবে এক মহা মাৎসন্যায়। বিচার বিভাগের ওপর সরকারের পরিকল্পিত আক্রমণ সাধারণ মানুষের জীবনপ্রবাহ রুদ্ধ করে দেয়ার মতো অভিঘাত। এরা ক্ষমতার চাহিদা মেটাতে জনগণকে পরাধীনতার সুদৃঢ় বন্ধনে বন্দী করার জন্য সর্বোচ্চ আদালতের ওপর সর্বগ্রাসী আক্রমণ চালিয়েছে। ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাক্ষুধার গ্রাসে অসহায় ক্ষুদ্ধ মানুষের প্রতিবাদ অতলে তলিয়ে যাবে। দেশ নরমেদযজ্ঞের লীলাভূমিতে পরিণত হবে। তাই মানুষের নিরাপদে বেঁচে থাকার তাগিদে এই মূহুর্তে দল-মত-বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সবাইকে ভয়াবহ দু:শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফর থেকে শূণ্য হাতে ফিরে লংটক করছেন মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘বাংলাদেশের ভূমিকার কারণেই আন্তর্জাতিক বিশ্ব রোহিঙ্গাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে’। তিনি এও বলেছেন ‘আমি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে পারবো’। কিন্তু দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে-রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের ভূমিকা কি ছিল। বরং আন্তর্জাতিক ভূমিকার কারণেই আওয়ামী সরকার রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলতে বাধ্য হয়েছে। জনগণ ও বিএনপি রোহিঙ্গাদের পক্ষে সোচ্চার হওয়াতে সরকারের রোহিঙ্গা বিরোধী তৎপরতা কিছুটা ক্ষান্ত দিয়েছে। কিন্তু সরকারের আমলা-মন্ত্রীরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কথা বলেই যাচ্ছে। এই আওয়ামী ক্ষমতাসীন লোকেরা শুরু থেকে বলছেন-রোহিঙ্গারা অবৈধ অধিবাসী, অনুপ্রবেশকারী। শেখ হাসিনা রাশিয়া-চীনের মতো বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে পাশে তো নিতে পারেইনি বরং নিরপেক্ষও রাখতে পারেনি। এই রাষ্ট্রগুলো মিয়ানমার সরকারের নীতিকেই সমর্থন করেছে। এই সরকারের সবচেয়ে বড় বন্ধু ভারতও আওয়ামী সরকারকে কাঁচকলা দেখিয়ে মিয়ানমার সরকারের নীতির প্রতি সমর্থন দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমারের দিক থেকে যুদ্ধের উস্কানি ছিল। যদি তাই থেকে থাকে তাহলে এত লাশ আর রক্ত স্রোতকে ডিঙ্গিয়ে খাদ্যমন্ত্রীকে চাল আনতে পাঠালেন, আবার সুচি’র দূত হিসেবে বাংলাদেশে আসা মন্ত্রীকে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে রাজী করাতে সক্ষম হয়নি বাংলাদেশ সরকার। আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে কিছুটা সামাল দেয়ার জন্য মিয়ানমারের দুত বাংলাদেশে এসেছিলেন, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তাদের কৌশল বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি নেতা বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা গ্রামে অগ্নিকুন্ডলী এখনও দৃশ্যমান। খান্ডবদাহনে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু। রাখাইনে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রক্তাক্ত নারকীয় তান্ডব থেকে বাঁচতে মানুষের স্রোত বাংলাদেশ অভিমুখে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য, প্রবঞ্চনামূলক জনগণকে ধোকা দেয়ার শামিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।