রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আতিয়ার রহমান, নড়াইল থেকে : সারাদেশের মত নড়াইল-২ (সদর-লোহাগড়া) আসনেও নির্বাচনী হাওয়া বইছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে মানুষের মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনাও শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও ১৪ দলীয় জোটের দুই ডজন নেতা এই আসনে সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে নিজেদের নাম ঘোষণা এবং জোটের মনোনয়ন বাগাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এত অধিক সংখ্যক সম্ভব্য প্রার্থী থাকায় যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন জোটটিকে সমস্যায় পড়তে হবে।
অন্যদিকে, নির্বাচনী নানা হিসাব-নিকাশের মধ্যেও প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট সমর্থিত নেতারাও। বিএনপি সমর্থিত জোটে প্রার্থী কিছুটা কম থাকায় এই জোট একটু সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তারপরও যোগ্য প্রার্থী বেছে নিতে তাদেরও কিছুটা হিমসিম খেতে হবে।
নড়াইল পৌরসভা, সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন, লোহাগড়া পৌরসভা এবং এই উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে নড়াইল-২ আসনের সম্ভব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দান খয়রাত করে জানান দিচ্ছেন নিজেদের প্রার্থিতার কথা। দু’একজন নেতা বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ডিজিটাল ব্যানার টানিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। আর দু’জোটের কর্মী-সমর্থকরাও প্রার্থীদের সমর্থনে বিভক্ত হয়ে তৎপর রয়েছেন। জাতীয় পার্টিসহ অন্য দু’একটি দলের সম্ভব্য প্রার্থীদের তৎপরতাও কম-বেশি দেখা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে নড়াইল-২ আসনে আগাম নির্বাচনী হাওয়া ক্রমশ জোরদার হয়ে পড়েছে।
নড়াইল সদরসহ এই জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম ঘাঁটি বলে বিবেচিত। আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের দুই ডজন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজামউদ্দিন খান নিলু, সহ-সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বন্ধু বলে পরিচিত এসএম আসিফুর রহমান বাপ্পি, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ আইয়ুব আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম মুন, কার্যকরী কমিটির সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ^াস, কার্যকরী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস কে আবু বাকের, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট সিদ্দিক আহম্মেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সাইফ হাফিজুর রহমান খোকন, লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শিকদার আঃ হান্নান রুনু, নড়াইল পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান তাপস, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শরীফ হুমায়ুন কবির, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট গোলাম নবী, ঢাকাস্থ নড়াইল সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা লে. কর্ণেল (অবঃ) সৈয়দ হাসান ইকবাল, নড়াইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসানুজ্জামান, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী, সমাজ সেবক ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মোঃ আমিনুর রহমান হিমু, ব্যবসায়ী বাসুদেব ব্যানার্জী, মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য মুন্সি নজরুল ইসলাম এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য লতিফা পারভীন।
অন্যদিকে বর্তমান এমপি ও নড়াইল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান ছাড়াও ১৪ দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী সম্ভব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, জেলা জাসদের (আম্বিয়া) সভাপতি অ্যাডভোকেট হেমায়েত উল্লাহ হিরু এবং জাসদের (ইনু) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম।
এদিকে, বিএনপি থেকেও কমপক্ষে ৪জন সম্ভব্য প্রার্থীর নাম আলোচনায় রয়েছে। এরা হচ্ছেন জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের সিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আলী হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জুলফিকার আলী, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন সিকদার এবং সদর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম।
বিএনপি সমর্থিত ২০ দলীয় জোট থেকে সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হচ্ছেন ২০০১ সালের উপ-নির্বাচনে জয়ী তৎকালীন চার দলীয় জোট এমপি ও বাংলাদেশ গণসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি শহিদুল ইসলাম এবং এনপিপি’র মহাসচিব ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
এছাড়া অন্যান্য দলের সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি থেকে দলটি’র নড়াইল জেলা সভাপতি শরীফ মুনীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফিরোজ আলমের নাম শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন থেকে দলের নড়াইল জেলা সভাপতি এস এম নাসিরুদ্দিন এবং সহ-সভাপতি মাওলানা সামসুল হকের মধ্যে যেকোনো একজন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।