Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যুবরাজ সালমানের ক্ষমতারোহণের পথ বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে কারা

ফিলস স্টক ওয়ার্ল্ড | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সউদি আরব দেশব্যাপী ব্যাপক দমন অভিযানে ১৬ থেকে ৩০ জন লোককে গ্রেফতার করেছে। খবর অনুযায়ী, এবারের ঘটনা আগে এ রকম ঘটা আর সব ঘটনার চেয়ে আলাদা। কারণ, এবার গ্রেফতার করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের মানুষদের যাদের মধ্যে আছেন আলেম, সাংবাদিক এবং এমনকি একজন প্রিন্সও। আর যেসব জল্পনাকল্পনার মধ্যে এ সব সংঘটিত হচ্ছে তার মধ্যে এ কথাও আছে যে বাদশাহ সালমান তরুণ যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পক্ষে সিংহাসন ত্যাগের কথা বিবেচনা করছেন।
সমালোচকরা বলছেন যে বাদশাহ সালমানের উত্তরাধিকারী মোহাম্মদ বিন সালমান যাতে আগে থেকেই তার সম্ভাব্য ক্ষমতারোহণের বিরুদ্ধে অসন্তোষ দমন করে তার ক্ষমতা সংহত করতে পারেন সে জন্যই এ সব করা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে কারা? অন্যদিকে সরকার বলছে, মুসলিম ব্রাদারহুড ও হুছি সংশ্লিষ্ট বিদেশী গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে ফেলতে এ সব করা হচ্ছে।
রিয়াদের কথার অর্থ দাঁড়ায় এ রকম যে সউদি আরবে ক্ষমতা পরিবর্তনের ছায়াচক্রান্তের পিছনে রয়েছে ইরান ও কাতার , কিন্তু তাদের কেউ যে এতে জড়িত তা একেবারে নাও হতে পারে এবং রিয়াদ শুধু এ কথাও বলতে পারে যে এ সব হচ্ছে প্রকৃত অপরাধী থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়ার কূটনৈতিক চেষ্টা।
কিন্তু কেন এ ঘটনা। ইরান ও কাতার চীন ও রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ এবং বৃহৎ শক্তি দু’টি বর্তমানে সউদি আরবের সাথে সম্পর্কের নবজাগরণ উপভোগ করছে। এতে তেহরান ও দোহা ঈর্ষা বোধ করছে বলে কেউ মনে করতে পারে , তবে তার বিপরীতটাই সত্য। মস্কো ও বেইজিং রিয়াদের সাথে উচ্চ পর্যায়ের কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলছে যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সউদি আরবকে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সরিয়ে এনে মধ্যপ্রাচ্যে একটি ভারসাম্য সৃষ্টি করা এবং ধীরে অথচ নিশ্চিতভাবে তাকে নয়া বহুমেরুকরণকৃত বিশ^ব্যবস্থার অঙ্গীভূত করা যা কখনেই সঠিক বা সংঘাত ছাড়া সম্ভব হবে না। যা ঘটছে তার প্রশংসা করার লক্ষ্যে কাউকে কিছু বিষয় মনে করিয়ে দেয়া দরকার যে ঘটনাগুলো গত বছরই রাশিয়া ও চীনের সাথে সউদি আরবের সংঘটিত হয়েছে।
মস্কোর কারণে রিয়াদ গত বছর রাশিয়ার সাথে ঐতিহাসিক ওপেক উৎপাদন চুক্তি করে এবং কয়েক মাস আগে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা নবায়ন করেছে।
সউদিরা দামেস্কের সাথে শান্তি আলোচনায় ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার জন্য সিরিয়ার তথাকথিত বিরোধীদের উৎসাহিত করতে রাশিয়ার সাথে সহযোগিতা করছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ মাত্র গত সপ্তাহে সউদি আরব সফর করেন।
চীনের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সউদি যুবরাজের অর্থনৈতিক আধুনিকায়নের উচ্চাকাক্সক্ষী ভিশন ২০৩০ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সাহায়্যের লক্ষ্যে বেইজিং সউদি আরবের সাথে ১১০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ সব উদ্যোগ দেশের অভ্যন্তরীণ অবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তোলার মত বিপজ্জনক। কারণ সউদি আরবের বহু বিপ্লবী আলেমই এ সব সংস্কারের সামাজিক ফলাফলের বিরুদ্ধে।
এ সব বিষয় মনে রেখে এ প্রশ্ন পুনর্বিবেচিত হতে পারে যে এ মুহূর্তে সউদি আরবকে অস্থিতিশীল করায় স্বার্থ কার যখন দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরে আসছে ও চীন-রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সমস্ত লক্ষণ থেকে ইঙ্গিত মেলে যে তারা ইরানি বা কাতারি কর্মকান্ডের ছাপ বহনকারী নয়, আমেরিকার পক্ষের লাল পতাকাবাহী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুবরাজ

৩ নভেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ