Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণ-পশ্চিমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে

| প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ভোট রাজনীতি চারিদিকে
মিজানুর রহমান তোতা : আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩৬টি আসন এলাকায় অতিমাত্রায় সরব হচ্ছেন। যোগাড় করছেন ভোট কর্মী ও সমর্থক। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ওজাতীয় পার্টিসহ রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী তো আছেই। ধীরে ধীরে সবাই মাঠ গুছাচ্ছেন। দলীয় কোন্দল আছে মনোনয়নকে ঘিরে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দ্ব›দ্ব বেশীরভাগ আসনেই প্রকট। বিএনপির এক্ষেত্রে কম। কারণ তারা এমনিতেই দৌঁড়ের ওপর রয়েছেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষমতাসীন দলের এমপিরা প্রায় সবাই এবারও প্রার্থীতা ঘোষণা করে মাঠে রয়েছেন। এর বিপরীতে একেক আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে রয়েছেন। সবমিলিয়ে গোটা অঞ্চলের চারিদিকে সমানতালে চলছে ভোট রাজনীতি।
প্রত্যেকটি আসন এলাকায় কমবেশী সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী তৎপরতা চলছে। রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের কদরও বেছে। বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের আলোচনায় উঠে আসছে ভোট রাজনীতি। চারিদিকে এমন কথাও জোরেসোরে উচ্চারিত হচ্ছে বর্তমানে সত্যিকারার্থে রাজনীতি আর রাজনীতি নেই। ভোট এলে জনগণের গুরুত্ব বাড়ে। রাজনীতি অর্থ হয়ে গেছে যেন প্রভাব খাটিয়ে যেনতেনভাবে নেতাদের সম্পদ বৃদ্ধি। জনগণের সমস্যা সমাধানে ও জনকল্যাণে এবং স্থানীয় ইস্যুভিত্তিক রাজনীতি অনুপস্থিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, দক্ষিণ-পশ্চিমের অনেক এলাকার ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত বর্তমান অবস্থার চেয়ে আরো বেশী শক্তিশালী করার সুযোগ ছিল। ক্ষমতায় থাকার কারণে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। বরং অধিকাংশ আসন এলাকায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সাংগঠনিক অবস্থা অনেকটাই নড়বড়ে। এক নেতা আরেক নেতার কোনঠাসা করা, ঠান্ডা লড়াই ও প্রশাসনে তদবির পাল্টা তদবির করে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় ব্যতিব্যস্ত ছিলেন বেশীরভাগ সময়। তৃণমূলের মতামতকে কোথাও কোথাও গুরুত্ব দেয়া হয়নি এমন অভিযোগও আছে।
দলের সাধারণ নেতা ও কর্মীদের বক্তব্য, গোটা এলাকায় অনেক এমপি দল গুছানোর কাজে সময় দেননি। উদাহরণ হিসেবে যশোর জেলার কথা ধরা যাক। জেলাটি কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যে খুবই সম্ভাবনাময়। বিগত নবম সংসদ নির্বাচনে ৩৬টি আসনের ৩৪টিতেই আ’লীগসহ মহাজোটকে উপহার দেন জনগণ। তাদের প্রত্যাশা ছিল জনপ্রতিনিধিরা সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে এলাকাকে এগিয়ে নিতে বিশেষ ভুমিকা রাখবেন। কিন্তু সেই মেয়াদে একটিবারের জন্য সবাই একাট্রা হয়ে কাজ করেননি। দশম জাতীয় সংসদের একতরফা নির্বাচনে সব আসনে আওয়ামীগসহ মহাজোটের দখলে থাকে। এইবারও পরিস্থিতি যা তাই দাঁড়ায়। তারা সময় পার করেছেন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে। অনেকের বিরুদ্ধে আখের গোছানোর অভিযোগ প্রবল। দলীয় ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের কথা, অনেকেরই গণমুখী চরিত্র নেই। দক্ষিণ-পশ্চিমের অধিকাংশ এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দলীয় স্বার্থ সংরক্ষণে যতটা যতœবান নন, অনেকে নিজেদের স্বার্থে যথেষ্টই তৎপর। শুধু দলীয় নেতা কর্মী ও সমর্থকদের অভিযোগ নয়, একই ধরণের অভিযোগ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের। তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের বক্তব্য, এবারের নির্বাচন হবে প্রতিদ্ব›দ্বীতাপুর্ণ। তাই কাগুজে বাঘ নয়, সত্যিকারের জনদরদী যারা, যাদের জনপ্রিয়তা আছে, দলের স্বার্থে নিবেদিত এবং পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা তাদের খুঁজে বের করে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই কেন্দ্র ভুল করবে না।
বিএনপি গোটা এলাকায় নির্বাচনী মাঠ তৈরী করছে। তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও বসে নেই। আওয়ামী লীগরমতো বিএনপির প্রার্থীতাা নিয়েদ্বন্দ ফ্যাসাদ তম তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা একেকজন একাধি মালায় জেরবার। দেড়র ওর রয়েছেন। তাদের সাংগঠনিক ভিত নড়েবড়ে রয়েছে। মেরামতের কাজ চলছে। বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, হামলা, মামলা প্রশাসনিক হয়রানী জেল জুলুম হুলিয়ার মাঝে এখনো যে কর্মকান্ড চালানো যাচ্ছে এটাই বড় কথা। তাদের কথা, নির্বাচনে শক্তভাবেই মাঠে নামার প্রস্ততি নেয়া হচ্ছে। সাংগঠনিক ভিত শক্তিশালী হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে যশোর, খুরনা ও ঝিনাইদহসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চেলে জেলায় জেলায় প্রতিনিধি সম্মেলন সমাপ্ত হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, বিপদ আপদকালীন সময়ে কারা মাঠে ছিল, কার কি ভ‚মিকা, ঘরে বসে মাঠে আছি রিপোর্ট করাসহ চাতুরতার আশ্যয় নেয়া নেতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাছাড়া সরকারী দলের নেতাদের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রেখে গা বাঁচানোর রাজনীতি যারা করেছেন তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। অন্যান্য দল কোন কোন এলাকায় নির্বাচনী মাঠ গুছানোর কাজ করছে। এবার দক্ষিণ-পশিাঞ্চলে নতুন ও পুরাতন মুখের এমপি প্রার্থীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে সংসদীয় আসন এলাকায়।
বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চায়ের দোকানে মোড়ে মোড়ে আড্ডার সিংহভাগ সময় ধরে প্রাধান্য পাচ্ছে ভোট রাজনীতি। কোন আসনে এবার কার অবস্থান ভালো হবে, কে কে মৌসুমী পাখি, কে ক্ষমতায় গিয়ে জনকল্যাণের চেয়ে নিজের পরিবারের কল্যাণ করেছেন সেসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ