Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

গঙ্গাচড়ায় মাঠে মাঠে আগাম জাতের ব্রি-৪৮ ধান

| প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গঙ্গাচড়া (রংপুর) থেকে মোহা. ইনামুল হক মাজেদী : রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায় মঙ্গা ধানে পাক ধরেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটবে এ উপজেলার কৃষক। মাঠের বাতাসে দুলছে পাকা ধানের শীষ। মাঠে মাঠে আগাম আউশ ধানের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাই কৃষকের মুখে ফুটছে সোনালি হাসির ঝিলিক। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষেতের মাঝখানে দোল খাচ্ছে মাথা হেলান ধানের শীষ। কোনো কোনো ধানে লেগেছে রং। এই অপরূপ সৌন্দর্যে কৃষকের বুকে যেন অপার আনন্দ আর কয়েক দিন পরে উঠবে সোনালি ধান। উপজেলার নবনীদাস, গঙ্গাচড়া, হাবু, বালারঘাট, বেতগাড়ী, মান্দ্রাইন, কোলকোন্দ, নোহালী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। কেউবা লাগিয়ে হাইব্রিড জাতের ধান। নবনীদাস গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন ৪৪ শতক জমিতে আউশ হাইব্রিড ব্রি-৪৮ জাতের ধান লাগিয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলবেন। নোহালী ইউনিয়নের কৃষক আবুল বাশার ৩০ শতক জমিতে ব্রি ধান লাগিয়েছেন।
তিন-চার দিনের মধ্যে ধান কাটবেন। ধান কাটার পর ওই জমিতে আগাম জাতের আলু লাগাবেন। এতে আলুতে লাভ ভালো হবে বলে তিনি মনে করেন। কোলকোন্দ ইউনিয়নের কৃষক ফজলুর রশিদ সাজু বলেন, ৪০ শতক জমিতে আগাম জাতের উইনল ধান আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে, চার-পাঁচ দিনের মধ্যে ধান কাটা যাবে। কিন্তু পাখির অত্যাচারে আর বাঁচি না। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাখি তাড়াতে হয়। তিনিও ধান কাটার পর আগাম আলু আবাদ করবেন বলে জানান। রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আশ্বিন-কার্তিক মাসে মানুষের হাতে কাজ থাকে না। এ সময় অনেকের ঘরে খাবার থাকে না। হাজার হাজার শ্রমিকও কর্মজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। আশ্বিন-কার্তিক মাস কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বিআর-৩৩, ব্রিধান-৪৮, ৫৬, ৫৭, ও ৬২ জাতের স্বল্পমেয়াদী জাত আবিষ্কার করেন। এসব ধানের জীবনকাল ১০৫-১১০ দিন। যেখানে অন্যান্য জাতের জীবনকাল ১৪০-১৫০ দিন। এ ছাড়া কৃষকরা আমন মৌসুমে আউশের হাইব্রিড ধানের চাষ করছে। অনেকে এই ধানকে মঙ্গার ধান বলে মনে করেন। গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষকরা এখন অনেক পরিশ্রমী ও সচেতন। আগাম আমন, আউশ, আলু, বোরো, ভুট্টা, ডাল, সরিষা এই শস্য বিন্যাসকে কাজে লাগিয়ে এখন অনেক অগ্রগামী। কৃষকরা জানান, আগাম ধান উঠার পর আলু আবাদ করলে খরচ কম হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ১৫০ জন চাষির মাঝে প্রত্যেক চাষিকে পাঁচ কেজি করে বিআর-৪৮ ধানের বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। ফলনও বাম্পার হয়েছে। কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কৃষকদের মাঝে আগাম ফসল উৎপাদনে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকরা অল্প খরচে বেশি লাভ করতে চায়। এ ছাড়া আশ্বিন, কার্তিক মাসে ফসল উঠালে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। কৃষকরা আগাম ধান চাষ করার পর আগাম আলু, সরিষা, ডালসহ সবজি আবাদ করতে পারবেন। কৃষকরাও ফসলের ন্যায্য মূল্য পান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ