পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শেষে হওযার ঠিক একদিন আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটির আবেদনের নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। তারা বলেছেন, দীর্ঘ ছুটি থাকার পর আবার ছুটি কেন এটা নিয়ে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। এটা নজিরবিহীন ঘটনা। মানুষ এটা জানতে চায়। হঠাৎ ছুটির আবেদন নেপথ্যে কোন রহস্য আছে কিনা তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন আইনজীবীরা। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, তার ছুটি চাওয়ার বিষয়টি নজিরবিহীন কোনো ঘটনা নয়। সাবেক আইন মন্ত্রী শফিক আহমেদ ও ড. শাহদীন মালিক মনে করেন এই মুহুতে রাজনৈতিক চাপে ছুটির আবেদন বলে মনে হয় না। তাদের মতে এই মুহুতে এটা জল্পনা-কল্পনা ছাড়া আর কিছু না। তবে বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীণ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার বলেন, প্রধান বিচারপতি পদে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। সুুিপ্রম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, এই্ ছুটির ঘটনা নজিরবিহীন। অর্তীতে এমন ঘটনা দেখি না। এটা নিয়ে জনমনে এক ধরনের সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
ষোড়শ সংশোধনী আপিলে রায় প্রকাশের পর এ নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংক্ষুব্ধ হয়। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও সরকারপন্থী আইনজীবীরা। তাঁরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তোলেন। সুপ্রিম কোর্ট খোলার পরই অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের। এক মাসের অবকাশ শেষে সুপ্রিম কোর্ট খুলবে আজ। তার আগেই মঙ্গলবার থেকে ছুটি চেয়ে প্রেসিডেন্ট কাছে ছুটির আবেদনের করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক আইন মন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, ছুটির আবেদনের বিষয়ে আমিও জানতে পেলাম। উনি (প্রধান বিচারপতি) অসুস্থতার কথা বলেছেন আবেদনে। একজন প্রধান বিচারপতি অসুস্থতার থাকলে ছুটির আবেদন করতে পারেন। এটা তো ওনার স্থালাভিষিক্ত অপর একজন দায়িত্ব পালন করবনে। উনি রাজনৈতিক চাপের কারণে ছুটির আবেদন করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না উনি (প্রধান বিচারপতি) রাজনৈতিক চাপের কারণে ছুটির আবেদন করেছেন। তিনি আরো বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বিষয় নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে এরপর সংসদে রিভিউ করার বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয়েছে। এইসব তো আইনি ভাবেই হচ্ছে। তাহলে কোথায় রাজনৈতিক চাপ। ছুটির পর বিভিউ হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মনে করি রিভিউ করা উচিত। একই সঙ্গে যে সব পর্যবেক্ষণে নিয়ে আপত্তি আছে সেসব প্রত্যাহার করার আবেদন করবেন বলে আমান মনে হয়।
প্রধান বিচারপতি ছুটির কারণে গুরুত্বপূণ মামলার শুনানিতে কোন সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যদিও প্রেসিডেন্ট ছুটির মঞ্জুর করার পর আরেকজনকে প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব দিবেন। এই পদ তো খালি থাকবে না। এর আগে উনী (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) বিদেশে গেলে উনার স্থলাভিষিক্ত একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এরপর উনি দেশে এসে ফের যোগদান করেছিলেন। এখন আবার ছুটির আবেদন করছেন তাহলে অপরজন দায়িত্ব পাবেন বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই আইন মন্ত্রী।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুুবে আলম ইনকিলাবকে বলেন, অসুস্থততার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ছুটির আবেদন করেছেন। আগামীকাল থেকে এর ছুটির আবেদন করা হয়েছে। অসুস্থতা’র কারণ দেখিয়ে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের কাছে এক মাসের ছুটি চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বিষয়টি তার ‘ব্যক্তিগত’, তিনি ছুটি চাইতেই পারেন। এটা নিয়ে তো অবাক হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আমি মনে করি, তার ছুটি চাওয়ার বিষয়টি নজিরবিহীন কোনো ঘটনা নয়। তার সমস্যা থাকতেই পারে। এনিয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, উনি (প্রধান বিচারপতি) ছুটি নিয়েছেন, এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। একজন মানুষের সুবিধা-অসুবিধা থাকতেই পারে। তিনি বিদেশ থেকে আসার পর আমার সঙ্গে দেখা হয়নি। জানি না ছুটির কী কারণ?
সুপ্রিম কোর্ট বিশিষ্ট্য আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক ইনকিলাবকে বলেন, ষোড়শ সাংশোধনী মামলার রায়ের পর রাজনৈতিক অঙ্গণে যেহেতু কয়েক সপ্তাহের উত্তপ্ত ছিল। সেহেতু প্রধান বিচারপতি ছুটির ব্যাপারটা অনেকেই রাজনৈতিক চাপ আছে বলে মনে করতে পারেন। কিন্তুু আমার মনে হয় এই মুহুতে এটা জল্পনা-কল্পনা মনে হচ্ছে। মামলার শুনানিতে কোন সমস্যা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে সব মামলা ফাইল করা হয়েছে, এখানো শুনানি শুরু হয়নি। সে সব মামলার শুনানি করতে কোন সমস্যা হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি ।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, অসুস্থা কথা বলে ছুটির আবেদন করছেন। এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না। তবে আমি বলতে চাই তাহল, উনী (প্রধান বিচারপতি), ষোড়শে সংশোধনী রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তাতে তিনি প্রধান বিচারপতি পদে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমার মনে হয় উনার আর প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে দায়িত্বর পালন করা উচিত নয়। রাজনৈতি চাপ আছে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা উনি ভাল জানেন। আমি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করব না। তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ইনকিলাবকে বলেন, দীর্ঘ ছুটির পর কেন ছুটি এটা নিয়ে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। জাতি পরিস্কারভাবে এটা জানতে এটা চায়। যেহেতু উনি (প্রধান বিচারপতি) কিছু দিন পর স্বাভাবিক ভাবেই অবসের যাবেন এই মহুতে কেন ছুটির আবেদন এটা একটি প্রশ্ন। কোন রাজনৈতিক চাপ কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিক রাজনৈতিক চাপের কথা আমি বলব না। তবে অতীতে আমার জানা মতে এমন ঘটনা ঘটেনি। এটা রহস্যজনক ও নজির বিহীন। আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দরা তাৎক্ষনিকভাবে প্রধান বিচারপতির দেখা করতে গিয়াছিলাম তবে দেখা হয়নি। আজ মঙ্গলবার দেখা করব। এপর আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কথা কলব। নাম প্রকাশ না করার মর্থে একজন আইনজীবী বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি জোরপূর্বক ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।