পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সবজি উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টির যশোরে উৎপাদক চাষিদের দুঃখ ‘আমরা রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে দিনরাত পরিশ্রম করে সবজি উৎপাদন করছি, আমরা উপযুক্ত মূল্য পাই না অথচ বসে বসে বিনাপুঁজির ব্যবসা করে মুনাফা লুটছে মুনাফালোভী মধ্যস্বত্বভোগী ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা।
তাদের কারণেই মাঠ আর বাজার মূল্যের বিরাট ব্যবধান হচ্ছে। এতে উৎপাদক চাষি ও ভোক্তা উভয়েই ঠকছেন। এই দুঃখ ঘোচানোর কোন ব্যবস্থা হয়নি কখনো। এ কারণে সবজি বাজারে মাঝেমধ্যেই আগুন লাগে’। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অফসিজন হলেও এবারে বর্ষায় রকমারী সবজি আবাদ ও উৎপাদন হয়েছে যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। এ অঞ্চলে বছরের বারোমাসই সবজি আবাদ ও উৎপাদন হয়ে থাকে। বর্তমানে বাজারে প্রচুর সবজি সরবরাহ হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ট্রাক ট্রাক সবজি প্রায় প্রতিদিন যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাতে।
কোথাও সবজির কোনরূপ ঘাটতি থাকার কথা নয়। মাঠ আর পাইকারী হাট ভরে গেছে নানা সবজিতে। তবুও মূল্য বাড়ছে শুধু সিন্ডিকেটের কারণে। তারাই মাঝেমধ্যে অস্বাভাবিক লাভ করে সবজি বাজারে আগুন লাগায়। এর বিরুদ্ধে জোরালো কোন পদক্ষেপ নেই। সরেজমিনে গতকাল যশোরের সবজি ভান্ডার বারীনগরে গিয়ে দেখা গেছে চাষিরা এক কেজি বেগুন বিক্রি করছেন মাত্র ৩৫টাকায়। সেই বেগুন কয়েক হাত ঘুরে যশোরের বড় বাজারে প্রতিকেজি ৬০/৭০টাকা আর রাজধানী ঢাকার বাজারে ৮০/৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এককেজি সিম মাঠে বিক্রি হচ্ছে ৪০/৫০টাকা, বাজারে তার মূল্য ১শ’ ৬০টাকা। পটল প্রতি কেজি মাঠে ২০/২৫টাকা, বাজারে ৫০/৬০ টাকা। শুধু সিম, পটল ও বেগুনে নয়, লাউ, কচুরমুখী, উচ্ছেসহ প্রায় প্রতিটি সবজির মূল্যে মাঠের সঙ্গে বাজারের মূল্যে দ্বিগুণ/ত্রিগুণ বেশীসহ এই বিরাট ব্যবধান থাকছে। মোটা টাকার মুনাফা লুটে নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা। বাজার নিয়ন্ত্রণকারীরা কখনো এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছেন এমন কোন তথ্য কেউ দিতে পারেনি। বাজার কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে তথ্য জানতে চাইলে বলা হয়, ‘দেখছি, খোঁজ খবর নিচ্ছি, বুঝেন তো আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে, ইচ্ছা করলেই সব সময় ভুমিকা রাখতে পারি না। প্রভাবশালীরা সিন্ডিকেট করে চাল সবজিসহ সব বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদেরও কষ্ট দায়িত্ব পালন করতে পারছি না’।
সবজি ভান্ডার বারীনগর বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসা চাষি লিয়াকত আলী ও রইস উদ্দীন বললেন, ‘আমাদের কাছ থেকে ওরা (পাইকারী ব্যবসায়ীরা) বেগুন ও পটলসহ সবজি পানির দামে কিনে নিয়ে যায়। আর বেচে বেশী দামে। এসব দেখার আসলে কেউ নেই’। অন্যান্য বাজারেও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সবজি সিন্ডিকেটের দাপট চলছেই। এখন নতুন কায়দায় সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও মাস্তানরা। যার জন্য সবজি বিপ্লবের সুফলের সিংহভাগ পাচ্ছে তারা। কার্যত কোথাও বাজার তদারকির নেই। নেই মাঠে খোঁজ নিয়ে চাষিদের সমস্যা জানার কেউ। কৃষি কর্মকর্তারা শুধু উৎপাদনের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। শুধু সবজি নয়, অন্যান্য কৃষিপণ্যেরও বাজার তদারকি করেন না তারা। বাজার কর্মকর্তারাও হাত গুটিয়ে। এর সুযোগ নিচ্ছে ব্যবসায়ী নামধারী একশ্রেণীর মুনাফালোভীরা। তারা নানাভাবে ঠকিয়ে থাকে সহজ সরল চাষিদের। এতে ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সবজি বাজারে এই প্রক্রিয়া চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয় না কখনোই। এ অভিযোগ সবজি চাষী ও ভোক্তাদের।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, সারাদেশের মধ্যে সবজি উৎপাদনে যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বহুদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে। সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে এখন শীতকাল আর গ্রীষ্মকালের পার্থক্য নেই। দু’টি মৌসুমেই প্রায় সব ধরণের সবজি উৎপাদন করে রীতিমতো একাকার করে দিয়েছেন পরিশ্রমী ও পারদর্শী চাষিরা। বছরের বারোমাসেই ভোক্তারা সবজির স্বাদ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন। চলতি বর্ষা মৌসুমেও দফায় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর চাষিরা সবজি উৎপাদন করে বাজারে তুলছেন। এবারও ‘অফ সিজনে’ বেগুন, পটল, কচুরমুখী, লাউ ও টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি প্রচুর উৎপাদন হয়েছে। বাজারে সরবরাহও কম নয়। তাহলে কেন হচ্ছে অগ্নিমূল্য তার অনুসন্ধান করা হচ্ছে না।
সবজি ভান্ডার বারীনগর ও খাজুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুনাফালোভী ও মধ্যস্বত্বভোগীরা নানাভাবে উৎপাদক চাষী ও ভোক্তাদের চোখে ধুলো দিয়ে আর্থিকভাবে বিরাট লাভবান হচ্ছে। মাঠ থেকে পাইকারী বাজারে সবজি তোলার সাথে সাথেই চিলের মতো ছোঁ মেরে পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। আড়তে নিয়ে হিসাব-কিতাব কষে দামদর ঠিক করে সবজি বাজারে ছাড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।