Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনায় সেবিকা সুমীকে অবৈধ গর্ভপাতে বাধ্যকারীরা পাঁচ সপ্তাহেও গ্রেফতার হয়নি

| প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


খুলনা ব্যুরো : খুলনা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের নার্স ফারজানা আক্তার সুমিকে জোরপূর্বক অবৈধ গর্ভপাতে বাধ্যকারীদের পাঁচ সপ্তাহেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার বাদী নিহতের পিতা হতদরিদ্র ইছাবুর গোলদারকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে সুমির স্বামী বিজিবি সদস্য মুরাদ শেখ। ফলে মামলা করে উল্টো প্রাণভয়ে দিনাতিপাত করছেন তিনি। গত ২৩ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় সেবিকা সুমির (২৩)।
মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা হল- বটিয়াঘাটার গরিয়ারডাঙ্গা গ্রামের মোঃ মজিদ শেখের ছেলে মোঃ মুরাদ শেখ (২৮), একই এলাকার সুন্দর মহল গ্রামের এসএম আকাশ ওরফে নাজমুল সরদার, তার স্ত্রী ও আকাশের ভাবী মহিলা অধিদপ্তরের চাকরিরত (রেজাউল সরদারের স্ত্রী) মাহমুদা আক্তার কাকলি (৪০)সহ অজ্ঞাত ৩/৪জন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বটিয়াঘাঠার কাতিয়ানাংলা গ্রামের ইছাবুর রহমান গোলদারের (৫৫) একমাত্র মেয়ে ফারজানা আক্তার সুমি নগরীর মেস বাসায় থেকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে সেবিকার চাকরি করতো। বছরখানেক আগে একই এলাকার গরিয়ারডাঙ্গা গ্রামের মোঃ মজিদ শেখের ছেলে বিজিবি সদস্য মোঃ মুরাদ শেখের (২৮) সাথে বিয়ের প্রস্তাবের জেরধরে পরিচয় হয়। পরে দু’জনের মধ্যে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে উঠে। সুমীর মেস বাসা, গ্রামের বাড়ী ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতের মাদরাসা গলির ঐশী ফিজিও থেরাপী সেন্টারে নিয়ে ধর্ষণ করেন মুরাদ শেখ। একপর্যায়ে সুমী অন্তঃস্বত্ত¡া হয়ে পড়ে। গত ২১ আগস্ট সুমীকে এসএম আকাশের ঐশি ফিজিও থেরাপী সেন্টারে গিয়ে গর্ভপাত করাতে মোবাইলে নির্দেশ দেয় প্রেমিক মুরাদ শেখ। এসএম আকাশ ও তার স্ত্রী জোরপূর্বক অবৈধ গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করে। ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ও হাত ঢুকিয়ে গর্ভপাতের চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়ে সুমী। ২২ আগস্ট মারাত্মক আহত অবস্থায় সুমীকে ঐশী ফিজিও থেরাপী সেন্টার থেকে নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন এসএম আকাশ। পরদিন ২৩ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সুমী। পরদিন হত্যার অভিযোগ এনে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করেন (যার নং-৫০,২৪-৮-১৭ইং) সুমীর পিতা ইছাবুর রহমান গোলদার।
তিনি বলেন, “মামলা তুলে নেবার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে বিডিআর (বিজিবি) সদস্য মুরাদ শেখ ও তার পরিবার। মামলা তুলে না নিলে আমাকে জানে বাঁচতে দেবে না মনে হচ্ছে। এতদিনে মামলার আসামীদের কেন গ্রেফতার করলো না পুলিশ?”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনাডাঙ্গা থানার এস আই মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, মামলার চারজন আসামীর মধ্যে দু’জন সরকারি চাকরিরত। বিজিবি সদস্য মুরাদ শেখ ও মহিলা অধিদপ্তরে চাকুরিরত মাহমুদা আক্তার কাকলীকে আদালতে হাজির হতে তাদের স্ব স্ব ইউনিট প্রধানদের নিকট পত্র দিয়েছি। এখনো কোন স্বদোত্তর পাইনি। সরকারি বাধ্য-বাধকতার কারণে এ দু’জন আসামীকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। আর ঐশি ফিজিও থেরাপী সেন্টারের মালিক এসএম আকাশ ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট ও প্রাথমিক তদন্তে সুমীকে উদ্দেশ্যমুলক হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে তদন্ত এগিয়ে যাবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ