বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : পানি উন্নয়ন বোর্ডের গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের আওতায় ৭৮ হাজার হেক্টর জমির ধান হুমকির মুখে পড়েছে। সেচ খালে এক মাস ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় ধান ক্ষেত শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। এ অবস্থায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ক্ষেতের ধান রক্ষায় তারা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দারস্থ হলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। অভিযোগ উঠেছে অপারেটর সংকট দেখিয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অবস্থিত গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের প্রধান পাম্প স্টেশনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। চাকরি সরকারীকরণের দাবীতে একযোগে পাম্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ২০ জন অপারেটর কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে বন্ধ রয়েছে পাম্প স্টেশনটি। পাম্প চালু না থাকায় জিকের প্রধান খালসহ শাখা খালগুলোতে পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান পাম্প স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ধান উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন চার জেলার কয়েক লাখ কৃষক। সময়মতো পানি না পেলে হাজার হাজার একর জমির ধান নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। তবে দ্রæততম সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদী সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের প্রধান পাম্প স্টেশন। স্টেশনের দায়িত্বে থাকা ২০ জন অস্থায়ী পাম্প অপারেটর মেশিন বন্ধ করে বাড়ি চলে যান। ভরা আমন মৌসুমে একযোগে চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়ায় জিকে সেচ প্রকল্পের পানির ওপর নির্ভরশীল কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার হাজার হাজার কৃষক ধান আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। আশ্বিনের এ সময়টাতে পানি না পেলে ফলন বিপর্যয়সহ ধানগাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে জানিয়েছেন হরিণাকুন্ডু এলাকার আদর্শ আন্দুলিয়া গ্রামের কৃষক মখলেছুর রহমান লাড্ডু। তিনি জানান, এ বছর তারা সেচ বাবদ জিকে প্রকল্পকে আগেভাগেই টাকা পরিশোধ করেছেন। মাঠে যারা ধান আবাদ করছেন, তাদের প্রায় সবাই বর্গাচাষি। এখন যদি আবার টাকা দিয়ে পানি কিনে জমিতে দিতে হয় তাহলে তাদের পথে বসে যেতে হবে। মখলেছ বলেন, তিনি নিজে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পানি না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু সেচ খালে পানি আসছে না। জিকে অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পাম্প হাউসে স্থায়ী কোনো অপারেটর নেই। প্রতিবছর টেন্ডার দিলে ঠিকাদাররা অপারেটর সরবরাহ করেন। এ বছর মাত্র চার মাসের জন্য অপারেটর নিয়োগ করা হয়। তিন মাস তারা দায়িত্ব পালন করলেও কোনো অর্থ পাননি। এ কারণে সবাই চাকরি ছেড়ে চলে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি ব্যবস্থাপনা ইউনিয়নের নির্বাহী প্রকৌশলী ও জিকের পাম্প হাউসের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা শফিকুর রহমান জানান, গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের জন্য স্থায়ী কোনো অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয় না দীর্ঘদিন। ঠিকাদারদের মাধ্যমে দিন হাজিরায় অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হলেও এ বছর অর্থ বরাদ্দসহ নানা জটিলতা দেখা দেয়। অপারেটররা যখন জানতে পেরেছেন চার মাস পর তাদের চাকরি থাকবে না, টাকা-পয়সা পাওয়ার ব্যাপারেও কোনো নিশ্চয়তা নেই, তখন তারা পাম্প মেশিন বন্ধ করে চলে গেছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে অবহিত করে সমাধানের চেষ্টা চলছে। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কনক কান্তি জানান, বর্তমানে পানি সরবরাহ বন্ধ আছে। অপারেটর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সমস্যা কাটবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।