Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের জন্য চীন ও ভারতের ৭৫৩ টন ত্রাণ

| প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : মিয়ানমারে গণহত্যার মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ৭৫৩ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে চীন ও ভারত। ভারতীয় ত্রাণবাহী জাহাজটি গতকাল (বৃহস্পতিবার) ভোর সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম বন্দরের এক নম্বর জেটিতে এসে ভিড়ে। অন্যদিকে দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ৫৩ টন ত্রাণ পাঠিয়েছে চীন। সকাল ৯টায় চীনের ত্রাণবাহী কার্গো বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সকাল ৯টায় চীনের ত্রাণবাহী কার্গো বিমানটি অবতরণ করে। জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ করেন। চীনা দূতাবাসের কাউন্সিলর (অর্থ ও বাণিজ্য) লি জুয়াঙ্গজুন ত্রাণ হস্তান্তর করেন। বুধবার প্রথম দফায় কার্গো বিমানযোগে ৫৭ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়। ত্রাণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে সমর্থন দিলেও মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা দেয় চীন।
এদিকে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য ভারত থেকে তৃতীয় দফায় ৭০০ টন ত্রাণ পাঠানো হল। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ আইএনএস ঘড়িয়াল ওই ত্রাণ নিয়ে বন্দরের ১ নম্বর জেটিতে পৌঁছায়। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বন্দর জেটিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে এসব ত্রাণ হস্তান্তর করেন। চট্টগ্রাম বন্দর, নৌবাহিনী, ভারতীয় নৌবাহিনী, চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। ভারত থেকে তৃতীয় দফায় আসা এই ত্রাণের চালানে চাল, ডাল, লবণ, চিনি, চা, গুঁড়ো দুধ, বিস্কুট, সাবান ও মশারি রয়েছে। মোট ৬২ হাজার প্যাকেটে এই ত্রাণ বিতরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে হাই কমিশনের কর্মকর্তারা জানান। এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ৫৩ টন এবং পরদিন আরও ১০৭ টন ভারতীয় ত্রাণ চট্টগ্রাম পৌঁছায়। অপারেশন ইনসানিয়াতের আওতায় ৭ হাজার মেট্রিক ত্রাণ পাঠানোর ঘোষণা দেয় ভারত। বাকি ত্রাণসামগ্রী পর্যায়ক্রমে পাঠানো হবে।
মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে দমন-পীড়নের মুখে গত এক মাসে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের মিত্র ভারত রোহিঙ্গা বিরোধী অভিযানে দেশটির সরকারকে সমর্থন দিলেও পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীর অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সংস্থানে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেশী ভারত ছাড়াও ইতোমধ্যে তুরস্ক, ইরান, সউদি আরব, মরক্কো, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণসামগ্রী প্রেরণ করেছে। তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য শেড নির্মাণ করার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।
৪২৬১টি তাঁবু পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য
মিয়ানমারে গণহত্যার মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ৪ হাজার ২৬১টি তাঁবু পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকালে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট এসব তাঁবু নিয়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। বাংলাদেশের পক্ষে ত্রাণ গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সহায়তা বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল এইড, ইউকে ডিএফআইডি) ৯৮ মেট্রিক টন ত্রাণ পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) মাধ্যমে। যুক্তরাজ্যের সরকারি এই সংস্থার পাঠানো ত্রাণের মধ্যে আছে চার হাজার ২৬১টি তাঁবু। ত্রাণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএফআইডির লজিস্টিক্স অফিসার মার্ক কুইন এবং আইওএম চট্টগ্রামের এডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স অ্যাসিসটেন্ট মাসুদুর রহমান খান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ